বিশ্বের প্রাচীনতম ৬ দেশের অজানা কথা

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৪১ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

সাইফুর রহমান তুহিন

বিলিয়ন বিলিয়ন বছরের পুরোনো এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে কতো সাম্রাজ্যের উত্থান ঘটেছে আর পতন ঘটেছে কতো রাজবংশের তার ইয়ত্তা নেই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, অনেক দেশ প্রতিষ্ঠিত ও শাসিত হয়েছে সময়ের সেরা রাজা-বাদশাহ এর দ্বারা।

অনেকেই কৌতুহলী হতে পারেন শতাব্দী-প্রাচীন এসব দেশের বিষয়ে। যারা প্রত্নতাত্ত্বিক বিভিন্ন স্থান ঘুরতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য রইলো ঐতিহাসিক ভ্রমণের সেরা গন্তব্যগুলো। জেনে নিন বিশ্বের প্রাচীনতম ৬ দেশের অজানা কথা-

সান মারিনো

ইতালি দ্বারা পরিবেষ্টিত সান মারিনো বিশ্বের ক্ষুদ্রতম ও প্রাচীনতম দেশগুলোর মধ্যে একটি। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ৩০১ খ্রিস্টাব্দে। সেন্ট ম্যারিনাস এই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা যিনি প্রতিবেশী রিমিনি সিটি থেকে এসেছিলেন ধর্মীয় নিপীড়ন থেকে মুক্তির জন্য।

১৬৩০ খ্রিস্টাব্দে পোপের কাছ থেকে স্বাধীনতা পায় দেশটি তবে এর কারণ অজানা। মাত্র ৬১.২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটির জনসংখ্যা আসুমানিক ৩৩ হাজার ৬০০।

সান মারিনোর সংবিধানকে মনে করা হয় বিশ্বের প্রাচীনতম সংবিধানগুলোর একটি। সান ম্যারিনোতে বেড়ানোর সেরা সময় এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর।

ফ্রান্স

বিশ্বের প্রাচীনতম দেশগুলোর তালিকায় অন্যতম একটি নাম হলো ফ্রান্স। এই দেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে। এটি তখন প্রতিষ্ঠিত হয় যখন শার্লেমেনের পবিত্র রোমান সাম্রাজ্য আলাদা হয়ে যায় ও রাজা ক্লোভিস সিংহাসনে আরোহণ করেন।

প্রাচীনকালে ধারণা করা হত, প্রজাদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টির জন্য রাজারা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতেন। তবে আধুনিক যুগের ফ্রান্স প্রাচীনকাল থেকে অনেকটাই আলাদা। একটা সময় দেশটি পুরো ইউরোপের ওপর কতৃত্ব করত। এটি ছিলো রাষ্ট্রটির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ।

ইরান

খ্রিস্টপূর্ব ৬২০ সালে আচায়েমেনিড সাম্রাজ্যের অধীনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ইরান। এটিও বিশ্বের প্রাচীনতম দেশগুলোর একটি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সাম্রাজ্য দ্বারা শাসিত হয়েছে ইরান।

তবে আচায়েমেনিডদের শাসনকাল ছিলো দীর্ঘতম। অতীতে এর নাম ছিলো পার্সিয়া বা পারস্য। ১৯৩০ সালে দেশটি বর্তমান নাম পায়। পার্সিয়ান সংস্কৃতিকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংস্কৃতিগুলোর একটি হিসেবে গণ্য করা হয়।

ইথিওপিয়া

ইথিওপিয়া আফ্রিকার প্রাচীনতম দেশ। পাঁচ মিলিয়ন বছর আগে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কৌতুহল জাগানোর মতো ব্যাপার যে, ইথিওপিয়া কখনো ঔপনিবেশিক শাসনের কবলে পড়েনি।

তবে ১৯৩০ সালের দিকে ইতালিয়ান স্বৈরশাসক মুসোলিনি কয়েক বছর দেশটিকে দখল করে রেখেছিলেন। দেশটিতে ঐতিহ্যের বন্ধনগুলো বেশ মজবুত ও বছরের পর বছর ধরে এর ক্রমবিকাশ ঘটেছে।

চীন

তালিকার পরের দেশটি হলো চীন। এটি প্রতিষ্ঠা ঘটে খ্রিস্টপূর্ব ২১০০ সালে। দেশটিকে শাসন করা প্রথম সাম্রাজ্য হলো জিয়া (ইংরেজি উচ্চারণ) সাম্রাজ্য। আর এরাই দেশটিকে দীর্ঘদিন শাসন করে।

খ্রিস্টপূর্ব ২২০০ সালে আধুনিক চীন গড়ে ওঠে ও জন্ম হয় বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক সভ্যতাগুলোর একটির। নিজেদের শত শত বছরের পুরনো সাংস্কৃতিক বন্ধনের সঙ্গে একটি আবেগের সম্পর্ক রাখে চীনা জাতি।

মিশর

মিশরীয় যুগের সূচনা ঘটে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ সহস্রাব্দে। খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০ সালে দেশটির প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মিশরীয় সভ্যতা ছিলো তার সময়ের সবচেয়ে মজবুত ও প্রভাবশালী সভ্যতাগুলোর একটি। খ্রিস্টপূর্ব ৩২০০ সালে আবিষ্কৃত মিশরীয় বর্ণমালা হায়ারোগ্লিফিকস হলো হাতের লেখার ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো ও মৌলিক পদ্ধতি।

বিভিন্ন সাম্রাজ্য দেশটিকে শাসন করেছে যার মধ্যে আছে পার্সিয়ান ও অটোমান সাম্রাজ্য। নবম থেকে দশম শতাব্দীর মধ্যে আরবরা মিশরের কর্তৃত্ব নেয় যদিও দেশটির পুনর্গঠন শুরু হয়েছে আরও আগ থেকেই।

আজ সেখানে আকর্ষণীয় যা যা আছে কিংবা দেশটি যে অবস্থায় আছে এ জায়গায় আসার পেছনে একটি বড় ভূমিকা রেখেছে তার সমৃদ্ধ ইতিহাস। মিশরের পিরামিড ও অন্যান্য ঐতিহাসিক নিদর্শন চুম্বকের মতো টানে বিশ্বের অগণিত পর্যটককে।

লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও ভ্রমণ লেখক।

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।