যেখানে নারীই সর্বেসর্বা, ইচ্ছে হলেই বদলান পুরুষ সঙ্গী
এমন কোনো রাজ্যের কথা কি আপনার জানা আছে, যেখানে শুধু নারীদেরই হুকুম চলে। যদিও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মাতৃপ্রধান জাতি বা গোষ্ঠির সন্ধান মেলে। তবে এমন কোনো জাতির কথা জানেন কি, যেখানে নেই বিয়ের চল। এমনকি সেখানকার নারীরা ইচ্ছে হলেই বদলাতে পারেন পুরুষ।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যিই যে, এমনই এক জাতি আছে যেখানে নারীরাই সর্বেসর্বা। আর তাদের বাস সুবিশাল হিমালয় পর্বতমালার আড়ালে। বিস্তৃত লুগা লেকের ধারে বাস করা হাজার বছরেরও পুরোনো ছোট্ট এক জাতি তারা। তারা পরিচিত মসুউ নামে।
চীন আর তিব্বতের সীমারেখার একেবারেই কাছাকাছি বসবাসরত গোত্রটি পৃথিবীর অন্যতম এক মাতৃতান্ত্রিক জাতি। উনান ও সিচুয়ান প্রদেশের মাঝামাঝিতেই তাদের অবস্থান। তাদের প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো, এ সমাজে নেই বিয়ের রীতি। বরং আছে একটি অদ্ভুত রীতি, যাকে বলা হয় ওয়াকিং ম্যারেজ।
এর অর্থ হলো, এ সমাজের নারীরা চাইলেই একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হতে পারেন। এমনকি ইচ্ছে হলেই সঙ্গী বদলানোর স্বাধীনতা আছে তাদের। এক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মিলনের ফলে দুটো পরিবার কখনো এক হয় না। মেয়েরা তার পরিবারের সঙ্গেই থাকেন। আর ছেলেরা থাকেন তার মায়ের পরিবারের সঙ্গে।
এই জাতির নারীরা পারিবারিক সব কাজ নারীরা সম্পন্ন করে। জীবিকা নির্বাহ থেকে শুরু করে বাজার, ঘরের কাজ, ছেলে-মেয়েদের বড় করাসহ যাবতীয় সব কাজই তারা করেন। পুরুষরা শুধু নারীর মনোরঞ্জন ও সন্তান উৎপাদনে সাহায্য করেন।
যেহেতু সেখানে বিয়ের প্রথা নেই, সেহেতু বিবাহ বিচ্ছেদেরও অস্তিত্ব নেই। আর তাই সঙ্গী বদলানোর পর সন্তান নিয়ে ঝামেলাও হয় না, সন্তানরা সবসময়েই মায়ের কাছেই থাকে।
মসুউ জাতির নারীরাই সব সম্পদের মালিকানা পান। বংশ পরম্পরায় এক নারী থেকে আরেক নারীতে ক্ষমতা ও সম্পদ হস্তান্তরিত হয়। যদি কারও ছেলে সন্তান হয় তাহলে সেক্ষেত্রে অন্যান্য ঘর থেকে কন্যাশিশুকে দত্তক নেন।
মসুউদের আবাস্থল বেশ আকর্ষণীয়। সেখানকার পর্যটনস্থল ব্যাপকভাবে পরিচিত। প্রতিবছর সেখানে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, মসুউ নারীদের শারীরিক গঠন ও কর্মক্ষমতা সেখানকার পুরুষদের চেয়েও অনেক বেশি উন্নত।
সূত্র: বিবিসি
জেএমএস/জিকেএস