রহস্যময় পাহাড়ে ইঞ্জিন ছাড়াই উঠে যায় গাড়ি!

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫২ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০২২

প্রকৃতিতে কতই না রহস্য লুকিয়ে আছে। ঠিক তেমনই এক রহস্য হলো ম্যাগনেট হিল বা চৌম্বুক পাহাড়। কাশ্মীরের লাদাখে গেলে বিস্ময়কর ঘটনার সাক্ষী হন পর্যটকরা। পাহাড়ের গা বেড়ে ইঞ্জিন ছাড়াই উঠতে শুরু করে গাড়ি। চোখের সামনে এমন ঘটনা দেখে চোখ কপালে তুলতে হয় সবার।

প্রাকৃতি সৌন্দর্য্যের জন্য লে লাদাখেরর প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ বরাবরই বেশি। আর সেই আকর্ষণের অন্যতম সেখানকার চৌম্বুক পর্বত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১১ হাজার ফিট উঁচুতে এই পর্বতের অবস্থান।

কাশ্মীরের লাদাখ পর্যটকদের কাছে অতি আকর্ষণীয় এক স্থান। প্রকৃতি যেন তার সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে সেখানে। লাদাখের লেহ থেকে কার্গিলের দিকে যে রাস্তা চলে গেছে, সেই রাস্তা ধরে গাড়ি করে এগিয়ে ৩০ কিলোমিটার গেলেই একটি সাইনবোর্ড চোখে পড়বে। যেখানে বড় বড় করে লেখা ‘এখান থেকে শুরু হচ্ছে ম্যাগনেটিক হিল’।

রহস্যময় পাহাড়ে ইঞ্জিন ছাড়াই উঠে যায় গাড়ি!

সেদিক দিয়েই চলে গেছে রাস্তা। ওই রাস্তা ধরে কিছুটা এগিয়ে গাড়ির গিয়ার নিউট্রালে দিয়ে রাখলেও ঘটে অবিশ্বাস্য ঘটনা। গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ থাকলেও উঁচু এই পর্বতের রাস্তায় উঠতে শুরু করে গাড়ি। মনে হবে কোনো অদৃশ্য শক্তি গাড়িটিকে উপরের দিক থেকে টেনে তুলছে।

এ সময় গাড়ির গতি থাকে প্রায় ২০ কিলোমিটার ঘণ্টাপ্রতি। অদ্ভুত এক রহস্য লুকিয়ে ওই রাস্তায়। তাই গাড়ির চালকরাও এই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি নিউট্রালে দিয়ে স্টার্ট বন্ধ করে দেন৷ ব্রেক থেকে পা সরিয়ে শুধু স্টিয়ারিং ধরে বসে থাকেন। আর গাড়ি এগিয়ে চলে প্রকৃতির রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে!

রহস্যময় পাহাড়ে ইঞ্জিন ছাড়াই উঠে যায় গাড়ি!

জানা গেছে, শুধু গাড়ি নয় যেসব বিমান এই পাহাড়ের উপর দিয়ে যায় তার পাইলটরাও ম্যাগনেটিক হিল অতিক্রম করার সময় সতর্ক থাকেন। নজর রাখেন যাতে বিমানের গতিপথ যেন বদলে না যায়।

লাদাখের স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই রাস্তাই তাদেরকে এককালে স্বর্গে নিয়ে যেত। যারা স্বর্গে যাওয়ার উপযুক্ত, তাদের আপনাআপনি টেনে নিত এই পথ। যারা উপযুক্ত নন, তারা যেতে পারতেন না। তবে এসব ধারণা কুসংস্কার ছাড়া আর কিছুই নয়।

রহস্যময় পাহাড়ে ইঞ্জিন ছাড়াই উঠে যায় গাড়ি!

এর পেছনে আছে বৈজ্ঞানিক যুক্তি। প্রথম যুক্তিটি হলো, এই পাহাড়ে প্রচণ্ড শক্তিশালী একটি চৌম্বকক্ষেত্র আছে। যেটি এতটাই শক্তিশালী যে, শক্তিশালী বিমানগুলোও এই ম্যাগনেটিক হিল এড়িয়ে চলে। যাতে বিমানের কোনো যন্ত্রাংশে চৌম্বকক্ষেত্রের প্রভাব না পড়ে।

আরেকটি যুক্তি বলে, এই পাহাড়ে কোনো চৌম্বকক্ষেত্র নেই। আসলে ওই রাস্তায় গেলে সবার দৃষ্টিভ্রমণ হয়! ওই রাস্তাকে খাড়া বলে মনে হলে সেটি ততটা উঁচু নয়। বরং সামান্য উতরাই।

রহস্যময় পাহাড়ে ইঞ্জিন ছাড়াই উঠে যায় গাড়ি!

সেখানকার পাহাড়ের আশেপাশের ঢালগুলোর এমনই বিন্যাস যে চড়াইকে উতরাই, আর উতরাইকে চড়াই বলে মনে হয়। পুরো ব্যাপারটাই আসলে দৃষ্টিভ্রম। তাই রাস্তা দিয়ে গাড়িগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই নীচের দিকে নামতে থাকে। অথচ দেখে মনে হয় যেন উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে!

সূত্র: ট্রাভেল ট্রায়াঙ্গেল

জেএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।