বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছেই যে গ্রামের মেয়েরা হয়ে যায় ছেলে!

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:১৩ পিএম, ২০ নভেম্বর ২০২১

রহস্যময় এক গ্রাম। যেখানকার মেয়েরা আচমকাই হয়ে যায় ছেলে! স্থানীয়দের মতে, গ্রামটি নাকি অভিশপ্ত! এ কারণে এমন বিষ্ময়কর ঘটনা ঘটে। অবাক করা বিষয় হলেও সত্যিই এমন ঘটনা ঘটছে এক গ্রামে।

ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের ক্যারাবিয়ানের ছোট্ট এক গ্রাম স্যালিনাস। সেখানকার অনেক শিশু-কিশোরের সঙ্গেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার জেরে কার্লা নামে ৭ বছরের একটি মেয়ে পরবর্তীকালে হয়ে উঠেছে কার্লোস।

ঠিক তেমনই এক কিশোর হলো জনি। বয়ঃসন্ধির আগ পর্যন্ত সবকিছুই তার ঠিকঠাক ছিলো। তার বয়ঃসন্ধির আগ পর্যন্ত পরিবারের কেউই জানতে পারেননি তাদের আদরের ছোট মেয়েটি আসলে মেয়ে নয় বরং ছেলে!

jagonews24

বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছাতেই জনির শরীরে ছেলেদের সমস্ত বৈশিষ্ট প্রকাশ পায়। যা দেখে হতবাক হয়ে পড়েন সবাই। এ রকম ঘটনা জনি কিংবা কার্লোসের সঙ্গেই ঘটেনি আরও অনেকেই এমন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তবে এমন হওয়ার কারণ কী?

চিকিৎসকদের মতে, জনি বা কার্লোসসহ গ্রামের অনেক শিশুই এক বিরল জিনগত রোগে আক্রান্ত। যার নাম ‘ফাইভ আলফা রিডাকটেজ ডেফিসিয়েন্সি’। এটি মানব শরীরের একটি উৎসেচক। এই উৎসেচকের ঘাটতি দেখা দিলেই এমন ঘটনা ঘটে।

শরীরের জিনটি এই উৎসেচক তৈরির নির্দেশ বহন করে থাকে, তার মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে এই উৎসেচক যথাযথ পরিমাণে উৎপন্ন হয় না বলে মত চিকিৎসকদের।

‘ফাইভ আলফা রিডাকটেজ’ এর কাজই হলো নারী শরীরে পুরুষের বৈশিষ্ট্য বাহক হরমোন টেস্টোস্টেরনের বিপাক ঘটিয়ে তাকে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরনে পরিণত করা।

jagonews24

নারী শরীরে এটাই স্বাভাবিক জৈবিক ক্রিয়া। এর ফলেই পুরুষের বৈশিষ্ট প্রকাশ পায় না ও ওই ব্যক্তি একজন নারী হিসাবে চিহ্নিত হন।

তবে এই উৎসেচকের ঘাটতি দেখা দিলে টেস্টোস্টেরনের বিপাক ঘটিয়ে তাকে ডিহাইড্রো টেস্টোস্টেরনে পরিণত করার জৈবিক ক্রিয়াটি ব্যাহত হয়। ফলে শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের উপস্থিতির জন্য পুরুষের বৈশিষ্ট প্রকাশ পায়।

এই বিরল জিনগত রোগে আক্রান্তদের মধ্যে দেখা গেছে, জিনগতভাবে তারা পুরুষ হওয়া সত্ত্বেও বয়ঃসন্ধির আগ পর্যন্ত তাদের মধ্যে পুরুষের বাহ্যিক বৈশিষ্ট যেমন- পুরুষের লিঙ্গের বৃদ্ধি, পেশির গঠন ইত্যাদি প্রকাশ পায় না।

jagonews24

ঠিক বয়ঃসন্ধির পর থেকেই তা ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে শুরু করে। জনি এ কার্লোসের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটিই ঘটেছে। শুধু ক্যারিবিয়ানের স্যালিনাসে নয় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এই বিরল জিনগত রোগের প্রকোপ আছে।

তবে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের থেকে স্যালিনোসে তুলনামূলক বেশিই চোখে পড়ে এ ঘটনা। প্রতি ৯০ শিশুর মধ্যে এক জন এই রোগে আক্রান্ত। স্যালিনাসে এই রোগের প্রকোপ বেশি হওয়ার রহস্য অবশ্য এখনো অজানা।

সূত্র: ওয়াশিং পোস্ট/বিবিসি

জেএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।