কাশবনে ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনা
আনিসুল ইসলাম নাঈম
চাঁদপুর শহরের পাশেই গাছতলা ব্রিজের নিচ দিয়ে বয়ে চলেছে ডাকাতিয়া নদী। ব্রিজের ঢালু পথ বেয়ে খানিকটা সামনে এগোলে চোখে পড়বে দীর্ঘ রেললাইন। ঝমঝম শব্দ করে কয়েক মুহূর্ত পরপর লম্বা ট্রেনের দেখা মেলে। ব্রিজের নিচে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে দেখা মিলবে শুভ্রতা ছড়ানো কাশফুলের সাম্রাজ্য। মাথা উঁচু করে দোল খাচ্ছে কাশফুলগুলো।
এখানে প্রকৃতির নিয়মেই তৈরি হয়েছে কাশবন। এ নজরকাড়া কাশফুলের হাতছানি মানুষের মনকে ভীষণভাবে টেনে নিয়ে যায়। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে স্থানীয়রা ছাড়াও দূর থেকে বেড়াতে আসা অনেকেই প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছেন। শহরের কোলাহল থেকে মুক্তির জন্য প্রকৃতির টানে তারা এখানে আসেন।
পশ্চিম আকাশে সূর্য হেলে পড়তেই কাশবনে ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনা শুরু হয়। কেউ আসেন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে, কেউ আবার প্রিয় মানুষকে সঙ্গে করে। হালকা মৃদু বাতাসে কাশফুলের দোলের মাঝে নিজেকে যেন হারিয়ে ফেলেন তারা। শরতের কাশফুল অগোচরে হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায় তরুণ-তরুণীর মনে। সে অনুভূতি ক্যামেরাবন্দি করছেন অনেকে। সেলফি তুলে প্রকৃতির সাক্ষী হচ্ছেন তারা।
কাশফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত শিক্ষার্থী মরিয়ম ইসলাম। তার কথায়, ‘অসাধারণ একটি জায়গা। নীল আকাশের নিচে সাদা কাশফুলের শুভ্রতা যেন প্রকৃতির অনন্য দান। কাশফুলের ছোঁয়ায় প্রকৃতি নতুনরূপে সেজেছে। এখানকার সৌন্দর্যে যে কারোরই মন ভালো হয়ে যাবে।’
আরেক দর্শনার্থী আসিফ বলেন, ‘করোনার সময় তেমন বাসার বাইরে বের হইনি। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের জন্য বন্ধুদের সঙ্গে এখানে আসা। কাশফুলের এরকম সৌন্দর্য দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। কাশফুলগুলো যেন আকাশের সঙ্গে মিশে গেছে।’
ক’দিন বাদেই বেজে উঠবে ঋতুর রানীর বিদায়ের সুর। আশ্বিনের শেষেই বিলীন হবে এ কাশবন। শুরু হবে হেমন্তের নবান্ন উৎসব। প্রকৃতিতে মিশবে নতুন ফসলের ঘ্রাণ। শরতের এ কাশফুল শুধু প্রকৃতিপ্রেমীর সৌন্দর্যের ক্ষুধা মেটায় না। এ ফুলের শুকনো গাছ হয়ে ওঠে ঝাড়ু, জ্বালানি, ঘরের বেড়া ও চাল তৈরির উপকরণ।
এসইউ/জেআইএম