‘নরকের দরজা’ দেখতে ভিড় জমান পর্যটকরা

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:১৯ পিএম, ০৯ আগস্ট ২০২১

নরকের দরজা বা হেল ডোর, নামটি শুনে নিশ্চয়ই শরীরে কাঁটা দিচ্ছে! দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা আগুন জ্বলছে পৃথিবীর এক স্থানে। এই স্থানের নাম দেওয়া হয়েছে নরকের দরজা বা হেল ডোর। আর এই স্থানটি একবার নিজ চোখে দেখতে ভিড় করেন পর্যটকরা। পৃথিবীর বুকে নরকের উৎস দেখতে তাইতো সবাই ছুটেন নরকের দরজায়।

বিশ্বের ভয়ঙ্কর স্থানগুলোর অন্যতম হলো এই নরকের দরজা। এর অবস্থান তুর্কেমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমির দারভাজা নামের এক গ্রামের কাছে। বিশাল গোলাকার এক গর্ত। দাউ দাউ করে সেখানে জ্বলছে আগুন। দেখে মনে হয় এই গর্ত দিয়েই বুঝি প্রবেশ করতে হয় নরকে! কতটা ভয়ঙ্কর অনুভূতি একবার কল্পনা করে দেখুন। এই গর্তে একবার পড়লে মৃত্যু অনিবার্য। মৃতদেহেরও সন্ধান মিলবে না।

jagonews24

পৃথিবীর বুকে নরকের এক ঝলক দেখতে সেখানে ভিড় জমায় পর্যটকরা। আসুন তাহলে জেনে আসা যাক এই ডোর টু হেল সম্পর্কে কিছু তথ্য। এই ডোর টু হেল অবস্থিত তুর্কমেনিস্তানের এর অধিকাংশ জায়গা মরুভূমির অন্তর্গত। কারাকুম মরুভূমির মাঝামাঝি অবস্থিত ৩৫০ জন বাসিন্দা নিয়ে গড়ে উঠেছে এই গ্রাম দারওয়েজা।

এই ডোর টু হেল রাতে আরও বেশি জ্বলে ওঠে! দূর থেকেও ঠাহর করা যায় স্থানটি। এর শিখার উজ্জ্বলতাও ভালোমতো বোঝা যায় তখন। সেখানকার উত্তাপ এত বেশি যে চাইলেও ৫-১০ মিনিটের বেশি থাকতে পারবেন না। মরুভূমির মাঝে বিশাল গর্তে জ্বলছে ভয়ঙ্কর আগুন।

jagonews24

প্রচণ্ড উত্তাপ হওয়া স্বত্ত্বেও স্থানটি পরিণত হয়েছে পর্যটনকেন্দ্রে। অনেকে আবার এটিকে ডেভিলস সুইমিংপুল বা শয়তানের সুইমিংপুল বলে ডাকেন। এটি আসলে একটি প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র। ১৯৭১ সাল থেকে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা আগুন জ্বলছে স্থানটিতে। এই গর্তটির ব্যাস ৬৯ মিটার এবং গভীরতা ৩০ মিটার।

নরকের দরজা কীভাবে সৃষ্টি হলো?

এ নিয়ে যদিও অনেক মতভেদ আছে। জানা যায়, ১৯৭১ সালে তুর্কেমেনিস্তান সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কয়েকজন সোভিয়েত ভূতাত্ত্বিক তখন খনিজ তেলের সন্ধানে কারাকুম মরু অঞ্চলে অভিযান শুরু করেন। এই উদ্দেশ্যে ড্রিলিং শুরু করলে কিছুদিনের মধ্যে তারা টের পান ভূ-গর্ভস্থ গ্যাসের এক ভাণ্ডারের উপরেই বসে আছেন তারা।

jagonews24

এরপর এর কয়েক জায়গায় গর্ত খুঁড়ে এই গ্যাসক্ষেত্রকে মুক্ত করা হয়েছিল। তবুও সেখানকার ভূ-গর্ভে জমে থাকা প্রাকৃতিক গ্যাস পুরোটা বের করা সম্ভব হয়নি। ফলে ভূ-পৃষ্ঠের একটা বড় অংশ তারা উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। তাদের আশঙ্কা ছিল গ্যাসক্ষেত্র থেকে বিষাক্ত গ্যাস আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে। তাই তারা এই গ্যাসক্ষেত্রটিতে অগ্নিসংযোগ করেন।

তাদের ধারণা ছিল, হয়তো কিছুদিন এই গ্যাসক্ষেত্রটিতে আগুন জ্বলবে। তারপর বন্ধ হয়ে যাবে। তবে তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিগত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই গ্যাসক্ষেত্রটিতে ক্রমাগত আগুন জ্বলেই যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরাও জানে না এই আগুন কবে বন্ধ হবে।

জেএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।