বর্ষায় হাওরের রানী অষ্টগ্রামে যাবেন যেভাবে
দেশের অন্যতম একটি হাওর হলো অষ্টগ্রাম। কিশোরগঞ্জ সদর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হাওর বেষ্টিত অষ্টগ্রাম উপজেলা। কিশোরগঞ্জ জেলার বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে রয়েছে অনেক হাওর। কিশোরগঞ্জের ১৩টি উপজেলার মধ্যে নিকলী, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও ইটনা বন্যাপ্রবন হাওর অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।
তবে এগুলোর মধ্যে অধিক রূপ সৌন্দর্যের অধিকারী অষ্টগ্রামকে হাওরের রানী বলা হয়। হাকালুকি ও টাঙ্গুয়ারের পাশেই অবস্থিত অষ্টগ্রাম হাওর। কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলাটি দ্বীপের মতো দেখা যায় অনেকটা। যেখানে ছোট ছোট কয়েকটি গ্রাম আছে।
অষ্টগ্রাম হাওর নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ জেলার হাওরগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত। অষ্টগ্রাম হাওর ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো বর্ষাকাল। এ সময়ে এক হাওর থেকে অন্য হাওরে ঘুরে বেড়ানোর উপযুক্ত সময়। ট্রলার কিংবা লঞ্চে বসে কয়েকটি হাওর চষে বেড়াতে পারবেন।
নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর সময় আশেপাশের দ্বীপ সদৃশ ছোট ছোট গ্রামগুলোর চোখ জুড়ানো দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। ছবির মতো সুন্দর এসব প্রাকৃতিক দৃশ্য যতই দেখবেন; ততইা অবাক হতে থাকবেন। যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই অথৈ স্বচ্ছ জল।
জোৎস্না রাতে হাওরবেষ্টিত এই অষ্টগ্রামে ক্যাম্প ফায়ারিং করে রাত্রিযাপন ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা। চারপাশে বিশাল জলধারার মাঝে ভরা পূর্ণিমার আলোয় রাত্রিযাপনের অপার্থিব এক অভিজ্ঞতার স্বাদ পেতে হলে আপনাকে আগে থেকে পূর্ণিমা রাত্রির হিসেব কষে ট্যুর প্ল্যান করতে হবে।
হাওরে নৌকা দিয়ে ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও অষ্টগ্রামে আছে, মুঘল আমলের স্থাপনা কুতুবশাহী মসজিদ। পাঁচ গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি প্রায় ৪০০ বছর পুরনো। অষ্টগ্রাম থানা সদরে অবস্থিত এই মসজিদটি। মুঘল আমলের স্থাপনাশৈলীর এক অপরূপ নিদর্শন কুতুবশাহী মসজিদ।
যেভাবে যাবেন অষ্টগ্রাম হাওরে
গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া কাউন্টার থেকে বিআরটিসি বাসে করে কুলিয়ারচর নামতে হবে। ভাড়া জনপ্রতি ২০০ টাকা। কুলিয়ারচর নেমে ৫ টাকা অটো ভাড়া দিয়ে লঞ্চঘাট যেতে পারবেন। সবচেয়ে ভালো হয় ট্রেনে যেতে পারলে।
ঢাকা থেকে প্রতিদিন এগারো সিন্দুর প্রভাতী ৭:১৫ মিনিটে (বুধবার বন্ধ) কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ট্রেনে গেলে কিশোরগঞ্জের আগেই কুলিয়াচর স্টেশনে নামতে হবে। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ১১০ টাকা। সেখান থেকে রিকশা বা অটোতে করে লঞ্চ ঘাট যেতে ৫ মিনিট লাগে।
কুলিয়াচর লঞ্চঘাট থেকে ১ ঘণ্টা পরপর অষ্টগ্রামের উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি ৯০ টাকা। সময় লাগবে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। চাইলে স্পীড বোটে ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে দ্রুত অষ্টগ্রাম পৌঁছানো যাবে।
যেখানে থাকবেন ও খাবেন
অষ্টগ্রামে উন্নতমানের কোনো আবাসিক হোটেল নেই। তবে জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে থাকতে পারেন নির্দ্বিধায়। ৩০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত রুমভেদে ভাড়া প্রযোজ্য এখানে। তাই আগে থেকে রুম বুক করে নিতে হবে।
অষ্টগ্রাম গিয়ে বাবুলের হোটেলে দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে হাওরের টাটকা মাছ অবশ্যই খাবেন। সুস্বাদু ছোট বড় বাহারী রকমের মাছ পাওয়া যায় এখানে। তবে অষ্টগ্রাম পৌঁছে বাবুলের হোটেলে খাবার অর্ডার দিয়ে যাবেন। নাহলে খাবার না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
জেএমএস/জেআইএম