যে রাস্তায় গেলে মুত্যু নিশ্চিত!
বিশ্বের বিপজ্জনক রাস্তার তালিকায় অন্যতম এক নাম হলো ‘দ্য নর্থ ইয়ুঙ্গাস রোড’। এই রাস্তাটি এতোটাই বিপজ্জনক যে, সেখানে গেলে প্রাণ নিয়ে ফিরে আসা মুশকিল। এই ভয়াবহতার কারণে রাস্তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডেথ রোড’।
বলিভিয়ার এই ডেথ রোডটি ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ। লাস ইয়ুঙ্গাস এবং লা পাজকে সংযুক্ত করেছে এই রাস্তাটি। এই পথটি ১৯৩০ এর সালে পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে ইন্ট্র্যামেরিকান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক এটিকে ‘বিশ্বের সর্বাধিক বিপজ্জনক সড়ক’ হিসেবে ঘোষণা করে।
তবে বিপজ্জনক এই রাস্তাটির বিকল্প হিসেবে আরও একটি আধুনিক রাস্তা এর পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে। তবুও রোমাঞ্চপ্রেমীরা গিয়ে ওঠেন পুরনো বিপজ্জনক এই রাস্তায়। গবেষণায় জানা গেছে, ১৯৯৪- ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর আনুমনিক ৩০০ জন মানুষের মৃত্যু ঘটেছে, এই রাস্তা থেকে পড়ে গিয়ে।
সাইকেলপ্রেমীরা রোমাঞ্চকর সময় কাটাতে এই মরণ রাস্তায় এসে হাজির হন। সাহসী রাইডাররা নিজেদের বীরত্ব দেখানে সাইকেল নিয়ে ভিড় জমান খাড়া পাহাড়ের গা ঘেঁষা পথের বাঁকে। মাত্র ১০ ফুটের এই রাস্তাটি খানিক পরপরই মোড় নেয়। যা অভিজ্ঞ হাতে না সামলে নিলেই মৃত্যু নিশ্চিত।
১৫ হাজার ২৬০ ফুট উঁচুতে এই রাস্তাটি অবস্থিত। তাহলে ভাবুন একবার, ব্রেকফেইল হলেই সাইকেল গিয়ে পড়বে নিচের খাঁদে। গত এক দশকে এক ডজনেরও বেশি সাইকেল চালক এখান থেকে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন। তবুও সাইকেল রাইডারদের জন্য জনপ্রিয় এক স্থান এটি।
২০০৬ সাল অবধি, উত্তর ইউঙ্গাস সড়কটি করিকো থেকে লা পাজ যাওয়ার একমাত্র বিকল্প ছিল। রাস্তাটি একটি লেনের চেয়েও কম প্রশস্ত ছিল। অবশেষে ২০০৯ সালে, সরকার নিকটবর্তী একটি পর্বতশ্রেণীতে নতুন রাস্তা তৈরি করে। নতুন হাইওয়েতে দুটি লেন আছে এবং সেটি অনেকটাই নিরাপদ।
উত্তর ইউঙ্গাসে এখন দুটি ড্রাইভিং লেন থাকলে পুরনো পথে এখনো অনেকেই পাড়ি জমান। বেশিরভাগ শ্রমিক এবং স্থানীয়রা মৃত্যুঝুঁকি জেনেও এখনো এই রাস্তা ব্যবহার করেন। যারা গাড়িতে চড়ে এই পথটি পাড়ি দেন, তাদের মৃত্যুঝুঁকি আরও বেশি। অভিজ্ঞ না হলে এই পথে গাড়ি চালালে মৃত্যু নিশ্চিত।
তবে রাস্তার বাম ধার ঘেঁষে যানবাহন চালালে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কম। লস ইয়ুঙ্গাস সত্যিই দুর্দান্ত একটি স্থান। গাছপালা ঘেরা পাহাড়ের ভেসে বেড়ানো মেঘ ইচ্ছে হলেও যেন মেঘ হাতে ধরা যাবে! বর্ষাকালে ডেথ রোড হয়ে ওঠে আরও বিপজ্জনক। পিচ্ছিল রাস্তা ও কাদামাটিতে চলাচল করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে।
জেএমএস/জেআইএম