পর্যটকদের জন্য খুলছে ২০০০ বছরের পুরোনো এই শহর

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৫ পিএম, ০১ ডিসেম্বর ২০২০

বাঙালি মানেই অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী। একঘেয়েমি কাটাতে মন ছুটে যায় দূরপ্রান্তে। সব ফেলে ব্যাগ কাঁধে বেরিয়ে পড়া যায় সেই দূরের টানে। সেই সমস্ত ভ্রমণপিপাসুদের জন্য সুখবর। এবার ‘উইশ টু গো’ লিস্টে জায়গা করে নিচ্ছে দুই হাজার বছর পুরোনো ইতিহাস-প্রসিদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হেগরার নাম।

কোথায় এই হেগরা আর কী ইতিহাস লুকিয়ে আছে সেই পথের বাঁকে এই প্রশ্ন ভ্রমণপিপাসুদের মনে জাগতেই পারে। সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর মিলবে এখানে।

jagonews24

অন্তত দুই হাজার পর এই প্রথম সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ‘হেগরা’। এটি সৌদি আরবের ইউনেস্কো স্বীকৃত প্রথম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। হেগরার প্রতিষ্ঠা করেন ‘নবাতিয়ান’ বা প্রাচীন আরববাসীরা। নবাতিয়ানরা জর্ডানের পেত্রায় ‘সিস্টার সিটি’ গড়ে তুলেছিলেন।

হেগরার আরও দুটি নাম পাওয়া যায়। একটি হলো ‘মাদায়েনে সালেহ’ যার অর্থ সালেহের শহর যা ১৩৩৬ সালে আন্দালুসিয়ান পর্যটকের মুদ্রা হতে পাওয়া যায়। অপরটি হলো ‘আল-হিজর’ অর্থাৎ পাথরের শহর যা এই স্থানের ভৌগোলিক অবস্থাকে পরোক্ষভাবে নির্দেশ করে। কোরআনেও এই স্থানের নাম উল্লেখ আছে। এই এলাকায় ছামুদ জাতির বসবাস ছিল, যেখানে হজরত সালেহ (আ.) এর আগমন ঘটেছিল। তার নামানুসারে এই শহরের নাম মাদায়েনে সালেহ হয় বলে অনেকে মনে করেন।

jagonews24

মরুভূমির বুকে গড়ে ওঠা এই বিশাল সাম্রাজ্যের সময়কাল ছিল খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে খ্রিষ্টাব্দ প্রথম শতক পর্যন্ত। পরে সেটা রোমের দখলে চলে যায়। উনবিংশ শতকে যখন পেত্রাকে পুনরায় আবিষ্কার করা হয় তখন থেকে আড়ালে চলে যায় হেগরা। যদিও তাতে এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব একটুও কমেনি।

হেগরা সৌদি আরবের মদিনা থেকে ৪০০ কিমি. উত্তর-পশ্চিমে এবং জর্ডানের পেত্রা নগরী থেকে ৫০০ কিমি. দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত। এটি হেজায পর্বতের পাদদেশের সমতল মালভূমিতে অবস্থিত।

jagonews24

হেগরায় ১১১টি ঐতিহাসিক সমাধিক্ষেত্র রয়েছে, যার মধ্যে ৯০টিরও বেশিকে পুনরায় সাজানো হয়েছে। এদের বেশিরভাগেরই গায়ে শিলালিপি খোদাই করা। তবে সেখানকার ঐতিহাসিক দলিল যাতে কোনোভাবে নষ্ট না হয় সেব্যাপারে কড়া নির্দেশনা রয়েছে। আরও আছে পূর্ব নবাতিয়েন আমলের গুহাচিত্র ও শিলালিপি।

আক্ষরিক অর্থে হেগরাতে অবস্থিত সকল বিষয় এক একটা ঐতিহাসিক দলিল। তাই ইউনেস্কো ২০০৮ সালে হেগরাকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়। নবাতিয়ানরা চাষবাসে অভূতপূর্ব উন্নতি করেছিল। সেই উন্নতির চিহ্ন ছড়িয়ে রয়েছে হেগরার ‘ইতিউতি’-তে। সেই সময়কার কৃত্রিম জলাধারের চিহ্ন এখনো অবশিষ্ট রয়েছে সৌদির এই শহরে।

jagonews24

উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে সৌদি আরবের পর্যটন মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পর্যটন শিল্পে ঘাটতি হ্রাসে সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক পদক্ষেপ নেয়া হবে। সেই উদ্দেশ্যে হেগরা জনগণের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। তাহলে আর দেরি কেন, মহামারি শেষ হলেই বিদেশ ভ্রমণের প্রথম জায়গা হতে পারে ইতিহাসের বিখ্যাত শহর হেগরা।

এআরএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।