ভ্রমণে যা পেয়েছি টাকা দিয়ে মাপা যাবে না

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৪ এএম, ০৩ অক্টোবর ২০১৯

‘অজানাকে জানার জন্য শখের বশবর্তী হয়ে আমার বিদেশ ভ্রমণ শুরু। অবশ্য আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় বিদেশ ভ্রমণ আমার জন্য বেশ কঠিন ছিল। কারণ আমি বাংলাদেশের ছোট্ট জেলা মেহেরপুরের একটা অজপাড়া গাঁয়ের মানুষ। তবুও সাহসী মন নিয়ে বলিষ্ঠ আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে চেষ্টা করি আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে।’

আত্মপ্রত্যয় আমাকে সাহসী করে তুলেছে এবং একের পর এক দেশ ঘুরেছি, ফলে বেড়েছে মনোবল আর কিছুটা হলেও আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানভান্ডার হয়েছে সমৃদ্ধ। অজানাকে জানার অসীম আগ্রহ ও পিপাসার সাথে ছিল অনন্ত উৎকণ্ঠা। কবি জীবনানন্দ দাশের কথায়... ‘হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে, সিংহল সমুদ্র থেকে আরো দূর অন্ধকারে মালয় সাগরে।’ আমি ঘুরতে ঘুরতে এমনি করে অনেক দেশ ঘুরেছি।

আমিই মেহেরপুর জেলার একমাত্র নারী যে একটি একটি করে প্রায় অর্ধশত দেশ ঘুরেছি। এই ভ্রমণের মাধ্যমে আমি বিভিন্ন দেশের ভাষাভাষি মানুষের সাথে মিশেছি। দেখেছি তাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি আচরণ ও জীবন ব্যবস্থা। ভ্রমণ করে কত শত বাইরের জগত সম্পর্কে অবগত হয়েছি তা অনেকের না জানার কথা। ভ্রমণ করতে যেয়ে আমি সুযোগ পেয়েছি উন্নত ব্যবসার।

ব্যবসার প্রসার ঘটানোর জন্য ভ্রমণ আমার এক রকম নেশা হয়ে গিয়েছিল বোধ হয়। আর সে কারণেই হয়তোবা এতগুলো দেশ ভ্রমণ করা সম্ভব হয়েছে। পেয়েছি অনাবিল ও নির্মল আনন্দ ও আত্মতৃপ্তি সাথে সাথে পেয়েছি শিক্ষা। ভ্রমণের পেছনে আমি যত টাকা ব্যয় করেছি তা দিয়ে হয়তোবা অনেক সম্পদ করতে পারতাম কিন্তু তার চেয়ে অনেক বেশি সম্পদ আমি পেয়েছি যা অর্থের মানদণ্ডে বিচার করা যাবে না।

Ambia2

‘আমার মনে হয় ভ্রমণ এমন একটা মাধ্যম যার পেছনে অর্থ ব্যয় করে মনে শক্তি ও সাহস খুঁজে পাওয়া যায়, যা আমি পেয়েছি। যায় হোক প্রিয় পাঠক আমি আমার জীবনের ভ্রমণ কাহিনি ধারাবাহিকভাবে শোনাবো, হয়তো এ কাহিনি থেকে আপনারাও সাহস ও শক্তি পাবেন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার।’

আমার ভ্রমণের শেষের দিক থেকে শুরু করছি। কয়েকদিন আগে আমি বেড়াতে গিয়েছিলাম নিউ ইয়র্কের সর্বকালের পরিবর্তিত স্কাইলাইন ভেসেল। হাডসন ইয়ার্ডসে অসাধারণ চারপাশে কাঁচের আকাশচুম্বী যা পুরোপুরি সেখানে রয়েছে। বিস্তৃত মধুচক্রের মতো কাঠামো। কেন্দ্রবিন্দুটি এর সর্পিল সিঁড়ি, আরোহণের জন্য একটি অপূর্ব নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য তুলনাহীন নতুন ল্যান্ডমার্ক।

ভেসেল, গোলকধাঁধার মতো উল্লম্ব কাঠামো, এখানে যাওয়ার পথ দুর্গম, কারণ ১৬তলা সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়েছে, কিন্তু নিজেকে ক্লান্ত মনে হয়নি শুধু কৌতুহলী হয়ে উপরে উঠেছি। অথচ সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠতে আমি ক্লান্ত হয়ে যায়। ১৫৪টি সিঁড়ি এবং ৮০টি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে গঠিত, প্রায় ২,৫০০ স্বতন্ত্র সিঁড়ি। বলে রাখি বিশেষ চাহিদার মানুষদের (প্রতিবন্ধী) ১৯৯০ এর প্রতিবন্ধী আইনের সাথে আমেরিকানদের মেনে চলার জন্য কাঠামোটিতে র‌্যাম্প এবং একটি লিফটের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে এই ভেসেলে।

এখন নিউইয়র্কের হাডসন ইয়ার্ডে ব্রিটিশ ডিজাইনার টমাস হিদারউইকের বিশাল মধুচক্রের মতো পরিমাপ করতে পারব, যা পশ্চিমের পশ্চিম দিকের উন্নয়নের অন্যান্য পাবলিক স্পেসগুলোর সাথে খোলা হয়েছে। হিদারউইক স্টুডিও গ্রুপের নেতা এবং অংশীদার স্টুয়ার্ট উড বলেছেন, ‘আমরা এর আগে কখনও এ রকম কিছু ডিজাইন করিনি এবং সম্ভবত আমরা এর পরে আর কখনও এ রকম ডিজাইন করব না।’

অস্থায়ীভাবে ভেসেল নামে পরিচিত, এর স্থায়ী নাম নির্ধারণের জন্য একটি সর্বজনীন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। হিদারউইক স্টুডিও-নকশা কাঠামোটি প্রথম দর্শনার্থীদের ১৫ মার্চ, ২০১৯ রাত ১২টার সময় উদ্বোধন করেছে। ১৬তলা বিশিষ্ট মধুচক্রের মতো ভাস্কর্যটিতে ১৫৪টি সিঁড়ি রয়েছে। বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পয়েন্টগুলো দেখেছি এবং সুস্পষ্ট ধারণা নিয়েছি।

Ambia4

১৫০ ফুট উপরে উঠে দর্শনার্থীরা হাডসন নদীও দেখতে পাবেন। হাডসন নদীর এমন দৃশ্য যা সূর্যাস্তের সময় দুর্দান্ত অভূতপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করেছি। হাডসন ইয়ার্ডসের ভিজ্যুয়াল সেন্টারপিস, ম্যানহাটনের পশ্চিম পাশে ২৫ বিলিয়ন ডলারের নগর কমপ্লেক্স যা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার পুণনির্মাণের পর থেকে শহরের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন।

২৮ একর সাইটে ১৬টি ঘর এবং অফিস, একটি হোটেল, একটি স্কুল, পশ্চিম গোলার্ধের সর্বোচ্চ আউটডোর পর্যবেক্ষণ ডেক, একটি পারফর্মিং আর্টস সেন্টার এবং একটি শপিংমল আছে।

ভেসেলে যেতে অর্থ দিতে হবে না, তবে অবশ্যই কয়েক সপ্তাহ আগে অনলাইনে একটি টিকিট অর্ডার করতে হবে। ট্যুর অপারেটর, বৃহত্তর-গ্রুপ এবং শহরের বাইরে-বাইরে দর্শকদের পরিকল্পনাগুলিতে আরও নমনীয়তার জন্য অনুরোধের প্রতিক্রিয়া হিসাবে, ভবিষ্যতে সংরক্ষণের জন্য প্রতিটি দিনই সীমিত সংখ্যক ফ্লেক্স পাস টিকিট বরাদ্দ করা হবে, প্রথমবার পরিবেশনার ভিত্তিতে, প্রতিটি সুবিধামতো ফি জন্য ১০ টাকা।

ফ্লেক্স পাসের টিকিটের সাহায্যে, দর্শকরা তাদের পছন্দের তারিখ ছয় মাস আগে বুক করতে পারে এবং সেই সময়টিতে পৌঁছাতে পারে যেটি তাদের সময়সূচির জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। এই টিকিটগুলো নির্বাচিত তারিখে অপারেটিং ঘণ্টা চলাকালীন যে কোনো সময় এক সময় প্রবেশের অনুমতি দেয়। সপ্তাহের ৭দিনই খোলা থাকে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে। ২০ হাডসন ইয়ার্ডস, নিউইয়র্ক ১০০০১।

আম্বিয়া অন্তরা, নিউইয়র্ক থেকে/এমআরএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।