পর্যটক বরণে সাজছে কক্সবাজার

সায়ীদ আলমগীর
সায়ীদ আলমগীর সায়ীদ আলমগীর কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৯:২৫ পিএম, ০৩ জুন ২০১৯

মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে ঈদের টানা ছুটি। ৫ জুন ঈদুল ফিতর উদযাপন হলে ঈদের ছুটি থাকবে ৬ জুন পর্যন্ত। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে সপ্তাহিত ছুটিও। সবমিলিয়ে ৫ দিনের টানা ছুটিতে প্রতিবারের মতো এবারো লাখো পর্যটকে মুখর হয়ে ওঠবে কক্সবাজার।

এ আশায় প্রতি বছরের মতো এবারও পর্যটক বরণে হোটেল মোটেলগুলো সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। কিছু কিছু হোটেল-মোটেল শর্ত সাপেক্ষে অগ্রীম বুকিংও শুরু হয়েছে। পর্যটক যাই আসুক সব পর্যটন স্পটগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি শুরু করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

দেখা গেছে, প্রতি বছরই ভ্রমণ-পিপাসুদের আগ্রহের জায়গা কক্সবাজারের নয়নাভিরাম সমুদ্র সৈকত। পর্যটন এলাকার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো সাজানো হচ্ছে নানা আকর্ষণীয় সাজে। হোটেল মোটেলে পরির্তন করা হচ্ছে পুরনো জিনিসপত্র। দেয়ালের পুরনো আস্তর তুলে লাগানো হচ্ছে প্লাস্টিক পেইন্ট বা ডিসটেমপার। রেঁস্তোরা সমূহে চলছে ধোঁয়া মুছা ও রঙ লাগানোর প্রতিযোগিতা। আর ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদারে স্পটে স্পটে লাগানো হচ্ছে সর্তকতামূলক সংকেত ও সাইনবোর্ড।

হোটেল মালিকদের মতে, সৈকত তীরে হোটেল মোটেল রয়েছে চার শতাধিক। এসব হোটেলে দৈনিক প্রায় এক লাখ পর্যটকের রাত যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। কিছু কিছু হোটেল আগে ভাগে বুকিং দিলেও একটু বাড়তি সুবিধার আশায় অনেকে এখন বুকিং নিয়ে কথা বলছেন না। ঈদের টানা ছুটিতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাঙ্গা হয়ে উঠছে পর্যটন ব্যবসা এমনটি বিশ্বাস হোটেল ও গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

হোটেল সী-নাইট গেস্ট হাউজের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম জানান, অতীত পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ভিড় বাড়ে কক্সবাজারে। এবারও এমনটি হতে পারে। তবে বাড়তি টানা ছুটি কাজে লাগানো যাবে বলে মনে হয় না।

জেলা সদরের বাইরেও হিমছড়ি, দরিয়ানগর, ইনানী, সেন্টমার্টিন, মহেশখালী, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ জেলার সব পর্যটন স্পটগুলোকে অতিথি বরণে সাজানো হচ্ছে নতুন সাজে।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন কক্সবাজার (টুয়াক) সদস্য ইয়ার মোহাম্মদ জানান, বুকিং অনুসারে ঈদের দিন থেকেই পর্যটক সমাগম শুরু হবে। ঈদের ছুটিতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ঈদ-পরবর্তী এক সপ্তাহ ভ্রমণপিপাসুর পদভারে মুখরিত থাকবে কক্সবাজার।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসনের পর্যটন সংশ্লিষ্ট নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় জানিয়েছেন, পর্যটক হয়রানি বন্ধে হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় মূল্য তালিকা টাঙ্গানোর নির্দেশসহ নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সমুদ্র সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ ১১টি পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে তথ্য কেন্দ্র (ইনবক্স)। যে কোনো অভিযোগ এখানে করতে পারবে পর্যটকরা। পাশাপাশি দেয়া হয়েছে একটি হটলাইন নম্বর (০১৭৩৩৩৭৩১২৭)।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সবসময় সর্তকাবস্থায় রয়েছে পুলিশ। পর্যটকরা যাতে কোনো ধরনের ছিনতাই কিংবা হয়রানির শিকার না হন সেজন্য পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে এবং পর্যটক বেশে পুরুষ-মহিলা পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকত এলাকায় পোশাকধারী পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে থাকবে টহল ও সাদা পোশাকের পুলিশ। কন্ট্রোল রুম, পর্যবেক্ষণ টাওয়াসহ পুরো সৈকতে পুলিশের নজরদারির আওতায় নেয়া হবে। ঈদের খুশিতে সাগরে যেন কোনো প্রাণহানি না ঘটে তা নিশ্চিতে সাগরে তীরের লাইফগার্ডদের প্রশিক্ষণ জোরদার করা হয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, পর্যটন সম্ভাবনাময় শিল্প। পর্যটক হয়রানি বন্ধে হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় মূল্য তালিকা টাঙ্গানোর নির্দেশসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া পর্যটক হয়রানি বন্ধে মাঠে রাখা হবে জেলা প্রশাসনের একাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।