মরাবৃক্ষে প্রাণের স্পন্দন!
একাধারে বিস্মিত ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি ‘অচিন’ গাছটির দিকে। নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের তোপকাপি রাজপ্রসাদের দ্বিতীয় গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই হাতের ডান পাশে গাছটি দেখিয়ে ট্যুর গাইড বলছিলেন, ‘সুলতান সুলেমানের আমলেও (আজ থেকে ৫০০ বছর আগে) আগের সুলতানদের সাম্রাজ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে হাজার বছরের পুরনো এ গাছটি।’
তার কথা শুনে চোখ-কান সজাগ করলাম। ভালোভাবে পরখ করে দেখলাম গাছটির ছাল-বাকল না থাকলেও গাঢ় সবুজ পাতায় ছেঁয়ে আছে। পর্যটকরা যেন গাছটির খুব কাছে যেতে না পারে সেজন্য গোলাকার প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
কৌতূহলবশত গাছটির একপাশ থেকে আরেক পাশে যেতেই আরও বিস্মিত হলাম। একপাশে গাছের আবরণ থাকলেও আরেক পাশে একদমই খালি। ভেতরটা সম্পূর্ণ ফাঁকা। ইচ্ছে করলেও কেউ ভেতরে প্রবেশ করে বিশ্রামও নিতে পারবে। গাছটির চারপাশেই মোটা লোহার তার দিয়ে বেঁধে দেয়া হয়েছে। গাছটির অদূরে প্রাচীন কিছু পাথরের শিল্পকর্ম রক্ষিত আছে।
গাইড জানালেন, গাছটি মরেই গিয়েছিল। কিন্তু সুলতান সুলেমানের আমলের এ গাছটিকে বাঁচিয়ে রাখতে তুরস্ক সরকার নানা কৌশল অবলম্বন করেছে। বলতে গেলে মৃতপ্রায় বৃক্ষটি নতুন জীবন পেয়েছে। গাছটির নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারলেন না গাইড।
টার্কিশ এয়ারলাইন্সের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ থেকে মিডিয়ার নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল তোপকাপি রাজপ্রাসাদ পরিদর্শন করে। এ সময় এ গাছটি ছাড়াও এ ধরনের শতশত বছরের আরও দু-তিনটি গাছ চোখে পড়েছে। বয়সের ভারে ন্যুজ এ গাছগুলোকে ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হিসেবে বাঁচিয়ে রাখার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে সরকারের তরফ থেকে। রাজপ্রাসাদ থেকে বেরিয়ে আসার সময় হঠাৎ মনে হলো আমাদের দেশে পুরনো কোনো গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে এ ধরনের উদ্যোগ কি নেয়া হবে? অস্ফুট স্বরে বেরিয়ে আসল ‘নো’।
এমইউ/এসআর/এমকেএইচ