ডু অ্যান্ড কো : যেখানে প্রতিদিন ২ লাখ যাত্রীর খাবার রান্না হয়

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা তুরস্ক থেকে ফিরে
প্রকাশিত: ০২:২৭ পিএম, ০৪ মে ২০১৯

দু’পায়ে জুতার কভার, গায়ে ধবধবে সাদা অ্যাপ্রোন, মাথায় সাদা টুপি ও মুখে মাস্ক। মনে হচ্ছিল কোনো হাসপাতালের আইসিওতে রোগী দেখতে যাচ্ছি। কিন্তু এটি কোনো হাসপাতাল নয়, বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা ‘ডু অ্যান্ড কো’ ক্যাটারিং সেন্টার কোম্পানি।

একটু আগেই প্রবেশ করেছি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টার ডুয়েল কোম্পানিতে। দুই দফা নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে খাবার উৎপাদনকারী এলাকায় প্রবেশের অনুমতি মেলে। তার আগে কোম্পানি সম্পর্কে ব্রিফিং দিচ্ছিলেন এক টার্কিশ তরুণী।

Food

তিনি বলছিলেন, ডু অ্যান্ড কো কোম্পানি বিশ্বের সহস্রাধিক এয়ারলাইন্সের ভ্রমণকারী যাত্রীদের জন্য এ কোম্পানির বিভিন্ন দেশের কিচেন থেকে প্রতিদিন দুই লাখ খাবার সরবরাহ করা হয়।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত ডগ অ্যান্ড কোম্পানির ক্যাটারিং সেন্টারের বসে বিদেশি এক কর্মকর্তার ব্রিফিংয়ে এতো বড় সংখ্যা শুনে দু’চোখ ছানাবড়া। প্রথমে ভাবলাম ভুল শুনছি না তো? নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাকে আবারও সরাসরি জিজ্ঞাসা করলে তিনি একই সংখ্যার কথা উল্লেখ করেন। দ্বিতীয়বার শোনার পর আর সন্দেহ রইলো না।

Food

টার্কিশ এয়ারলাইন্সের আমন্ত্রণে ৯ সদস্যের মিডিয়া ট্যুরের তুরস্ক সফরের দ্বিতীয় দিনে বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত ‘ডু অ্যান্ড কো’ ক্যাটারিং সেন্টার কোম্পানিতে পরিদর্শনে যাই। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনাভিত্তিক এ ক্যাটারিং কোম্পানির ইস্তাম্বুলের শাখায় দুই দফা নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশের সুযোগ পাওয়া যায়।

Food

প্রথমেই চোখে পড়ে এয়ারক্রাফটের আসনের আদলে আসন বসিয়ে সেখানে কেবিন ক্রুদের প্রশিক্ষণ চলছে। এখানে নিয়মিতভাবে ফ্লাইট চলাকালে যাত্রীদের কিভাবে, কখন, কী ধরনের খাবার পরিবেশন করতে হবে, কিভাবে খাবার সংরক্ষণ করতে হবে ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন ফ্লাইটের কেবিন ক্রুরা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

Food

ব্রিফিংয়ে টার্কিশ মহিলা জানান, তুরস্ক ছাড়াও নিউইয়র্ক, শিকাগো, লস এঞ্জেলস, লন্ডন, বার্সেলোনা, ফ্রাঙ্কফুর্ট, ডুসেলডর্ফ, বার্লিন, মিউনিখ, কিয়েভ, ওয়ারশ, সিউল ও ভিয়েনায় তাদের শাখা রয়েছে।

খাদ্য উৎপাদনকারী সেকশনে প্রবেশের আগে মিডিয়াকর্মীদের পা থেকে মাথা পর্যন্ত হেয়ার ক্যাপ, মাস্ক, অ্যাপ্রোন ও জুতা পড়িয়ে ভেতরে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়।

Food

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, ডু অ্যান্ড কো কোম্পানির খাদ্য উৎপাদন কারখানায় বিভিন্ন সেকশনে বৈচিত্রময় বিভিন্ন খাবার (সালাত, কেক, স্যান্ডউইচ, ব্রেড, ভাত, মাংস, কাবাব ও ডেজার্ট) উৎপাদন থেকে শুরু করে প্যাকেজিংয়ের কাজ চলছে। অটোমেটিক মেশিনে প্রতিটি খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের হাজার হাজার খাবার তৈরির কাজ চললেও টু শব্দ নেই। সবাই আপন মনে কাজ করেছেন।

Food

কোম্পানির এক কর্মকর্তা জানান, তুরস্কের ৯টি স্থানে (ইস্তাম্বুল, আঙ্কারা, এন্টিলিয়া, ইজমির, বডরাম, ট্রাবজন, দালমান ও আদানায়) কিচেন রয়েছে। কিছু কিছু এয়ারলাইন্সে বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের খাবার রান্না ও পরিবেশনের জন্য তাদের নিজস্ব সেফও থাকেন।

খাবারের বৈচিত্র্যপূর্ণ স্বাদের কারণে তাদের কোম্পানি থেকে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স যাত্রীদের জন্য খাবার নিচ্ছে বলে জানান তিনি।

এমইউ/আরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।