সীমান্তের আইফেল টাওয়ার দেখতে চাইলে
হাওরাঞ্চল খ্যাত সুনামগঞ্জ একটি ছোট জেলা শহর। এ অঞ্চল প্রাকৃতিক রূপ-সৌন্দর্য আর সম্পদে ভরপুর। যে সৌন্দর্য সবসময় মুগ্ধ করে পর্যটকদের। ঘুরতে আসা মানুষ অভিভূত হয় এর রূপ-সৌন্দর্য দেখে। এ সৌন্দর্য সুনামগঞ্জ শহর থেকে বেশি দূরে নয়। প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তাহিরপুর উপজেলায়। জায়গাটির নাম বারিক্কা টিলা।
এলাকায় এটি ‘আইফেল টাওয়ার’ নামে খ্যাত। সমতল ভূমি থেকে অনেক উঁচু একটি টিলা। যেখানে দাঁড়ালে পাশের গ্রামগুলোকেও সমতল ভূমির মতো মনে হয়। পাশ দিয়ে মেঘালয় পাহাড়ের বুক চিড়ে বয়ে চলেছে অপরূপ সীমান্ত নদী জাদুকাটা।
জাদুকাটা নদীর স্বচ্ছ পানির নিচের বালুগুলো স্পষ্ট দেখা যায়। আয়নার মতো দেখতে সে নদীতে বালু ও পানি একসাথে খেলা করে। উত্তর দিকে মেঘালয় পাহাড়ে খেলা করা মেঘগুলোকে যেন হাত বাড়ালেই ধরা যায়। এটি যেন ছোট ভূ-স্বর্গ। একদিকে সবুজ পাহাড় অন্যদিকে নানা রঙের পানির হাওর, মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।
> আরও পড়ুন- সিলেট ভ্রমণের আগে যে বিষয়গুলো জেনে নেবেন
পাহাড়ের গায়ে নানা রঙের মেঘের খেলা। মেঘ কখনো সবুজ পাহাড়কে ঢেকে দিচ্ছে আবার কখনো বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দিচ্ছে। পাহাড়-মেঘের মিলন দৃশ্য দেখতে পাবেন বারিক্কা টিলায়। সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিমে সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত এ টিলা।
বর্ষায় পাহাড়ি রূপবতী নদী জাদুকাটার স্রোতধারা আর হেমন্তে শুকিয়ে যাওয়া জাদুকাটার বুকজুড়ে বালুচর বারিক্কা টিলা থেকে উপভোগ করা যায়। টিলা থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সারি সারি উঁচু-নিচু খাসিয়া পাহাড়, সবুজ বনায়ন ও মাটিয়া পাহাড় পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ে। এখানে রয়েছে বনভূমি, আদিবাসী ও বাঙালি বসতি। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে যখন বারিক্কা টিলায় উঠবেন; তখন মনে হবে আইফেল টাওয়ার থেকে পুরো তাহিরপুর উপজেলা দেখছেন।
বারিক্কা টিলায় গেলে পাবেন সীমান্ত পিলার, একটি ছবি আপনাকে দুই দেশের দৃশ্যপটে রেখে দেবে। দেখতে পাবেন দুই দেশের মধ্যদিয়ে বয়ে চলা নদীতে হাজার হাজার শ্রমিকের কর্মব্যস্ত জীবন। নদী থেকে বালু, পাথর তোলার দৃশ্য।
> আরও পড়ুন- ঘুরে আসুন কৃষ্ণপুরের বধ্যভূমি
তাহিরপুরের এসব এলাকা এখনও দূষিত হয়নি। প্রত্যন্ত এলাকা বলে এসব দর্শনীয় স্থানের কথা এখনও অনেকে জানেন না। তাই একবার অন্তত ঘুরে আসুন। দেখে আসুন সীমান্তের আইফেল টাওয়ার। জীবনের একটি সুন্দর মুহূর্ত কাটবে বারিক্কা টিলায়।
এসইউ/এমএস