কেমন ছিল ৭০০ বছর আগের রাজধানী

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৩১ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০১৮

রাজধানীই একটি দেশের প্রাণকেন্দ্র। একসময় ভারতের কর্ণাটকের হাম্পি ছিল রাজধানী। যা এখন নিতান্তই একটি ছোট শহর। আজ থেকে প্রায় ৭০০ বছর আগে হাম্পি ছিল মধ্যযুগের হিন্দু রাজ্য বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজধানী। তুঙ্গভদ্রার তীরে পুরনো এই হাম্পি দেখতে গিয়ে প্রথমেই চোখে পড়বে একাধিক মন্দির। তারও কিছুটা দূরে দক্ষিণ দিকে একাধিক রাজকীয় প্রাসাদ। শহরে ঢুকতেই প্রথমে বিরূপাক্ষ মন্দির বা পম্পাপতির মন্দির। হাম্পির সবচেয়ে পুরনো মন্দির এটা। চাইলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন পুরনো এই রাজধানী থেকে।

capital-in

এই মন্দিরের বিশেষত্ব হলো- মন্দিরের প্রবেশ পথে দু’টি গোপুরম এবং দু’টি বৃহত্ প্রাঙ্গণ। মন্দিরের গর্ভগৃহটি গোপুরমের একেবারে সোজাসুজি। দ্বিতীয় গোপুরমটি রায় গোপুরম হিসেবে পরিচিত। এটি পেরোলেই প্রাঙ্গন। সেখান থেকে কিছু দূর এগোলেই বাম দিকে পাতালেশ্বরের মন্দির, মুক্তি নরসিংহ এবং সূর্যনারায়ণের মন্দির। আর ডান দিকে পড়বে লক্ষ্মীনরসিংহ ও মহিষাসুর মর্দিনীর মন্দির।

> আরও পড়ুন- উত্তাল সমুদ্রের উপর বিশ্বের দীর্ঘতম সেতু!

মন্দিরে প্রবেশ করলে দেখতে পাবেন পাথরের তৈরি বিরূপাক্ষ অর্থাৎ শিবলিঙ্গ বিরাজ করছে মন্দিরজুড়ে। এরই নাম পম্পাপতি। সেজন্য জায়গার নাম পম্পাক্ষেত্র বা হাম্পি। এর উত্তর দিকে দু’টি মন্দির। একটি পম্পাদেবী আর অন্যটি ভুবনেশ্বরী মন্দির। মন্দির থেকে বেরিয়ে এলেই দেখতে পাবেন পশ্চিমে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে মাতুঙ্গা পাহাড়। সেখানে রয়েছে আরও একটি মন্দির। নাম বীরভুবনেশ্বরের মন্দির। এখানে উঠলেই বিধ্বস্ত হাম্পির পুরো দৃশ্য ধরা পড়বে।

capital-in

ইতিহাস থেকে জানা যায়, মন্দির চত্বরে একসময় নানা রকমের দামি দামি পাথর ও মুক্তোর বাজার ছিল। এখান থেকে আরও কিছুটা পূর্বদিকে হাঁটলেই কিংস ব্যাল্যান্স। সেখানে রাজা নিজের ওজনের সমান মণি-মুক্তো-রুপো পাল্লায় মেপে ব্রাহ্মণ ও গরিবদের যৌতুক দিতেন। কিংস ব্যাল্যান্সকে পেছনে রেখে আর একটু গেলেই পড়বে হাম্পির সবচেয়ে অমূল্য সম্পদ বিধালা মন্দির। এখান থেকে যখন গাড়িতে করে আসল মন্দিরের দিকে যাবেন, তখন চোখে পড়বে সারি সারি নানা রকম কীর্তির ধ্বংসস্তূপ। এই মন্দিরের ঠিক সামনেই আছে পৃথিবীখ্যাত গ্রানাইট পাথরের রথ।

> আরও পড়ুন- ১৮ তলা হোটেলের ১৬ তলাই মাটির নিচে

ইতিহাস বলছে, কোণারকের রথ এই রথ খোদাই করতে অনুপ্রাণিত করেছিল। এবার দক্ষিণ দিকে হাঁটলে পড়বে হেমকুন্টা নামে একটি জায়গা। যেখানে অনেকগুলো ছোট ছোট মন্দির আছে। হেমকুন্টা থেকে পূর্ব দিকে হেঁটে দক্ষিণ দিকে ঘুরলেই দেখা যাবে বিশালাকার গণেশ মূর্তি। একশিলার তৈরি প্রায় ১২ ফুট উচ্চতার এই মূর্তিটি সত্যিই আশ্চর্যের।

capital-in

এখান থেকে প্রায় এক কি.মি দূরত্বে কমলাপুরে রয়েছে বড় শিবলিঙ্গ। গোটা হাম্পি শহরে এটিই সবচেয়ে বড়। আর এই শিবলিঙ্গটি পানির মধ্যে স্থাপিত। কারণ একটি জল প্রবাহ মন্দিরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বড় শিবলিঙ্গের কাছেই আছে নৃশিংহদেবতার মূর্তি। তবে বিদেশি আক্রমণে মূর্তিটি এখন অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত। এর দক্ষিণ দিকে গেলে চোখে পড়বে বিশাল বিধ্বস্ত রাজপ্রাসাদের অস্তিত্ব। এখানকার লোটাস মহল, কুইন্স বাথ এককথায় অনবদ্য। কুইন্স বাথ বা মহারানির স্নানাগারটির স্থাপত্যশিল্প হিন্দু-মুসলিম শৈলীর মিশ্রণে তৈরি।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।