দু’টি পাতা একটি কুড়ির দেশে
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ২০১৪-১৫ সেশনের ৪৬তম ব্যাচের ৫৪জন শিক্ষার্থী মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় মাঠ সফরে যান। সপ্তাহব্যাপী এ সফরে উপজেলার সব অফিস সম্পর্কে জানার পাশাপাশি বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানেও যান তারা।
২২ এপ্রিল সকাল ৭টায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে সবাই হাজির হন কৃষি সম্প্রসারণ ভবনের সামনে। কিছুক্ষণ পর কাঙ্ক্ষিত গন্ত্যেবের দিকে রওনা হন তারা। কুলাউড়া উপজেলা গ্রুপের পরিচালনায় ছিলেন সহকারী অধ্যাপক দেবাশীষ রায় ও দেবাশিস সরকার দেব। বড়লেখা গ্রুপের পরিচালনায় ছিলেন অধ্যাপক ড. জিয়াউল হক ও সহকারী অধ্যাপক তমা দেবনাথ।
বিকাল ৬টায় গাড়ি পৌঁছে কুলাউড়া উপজেলা ভবনের সামনে। তাদের সাদরে গ্রহণ করার জন্য উপস্থিত ছিলেন কোর্স সমন্বয়ক কুলাউড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. সুলতান মাহমুদ। ছেলেদের জন্য উপজেলা কমপ্লেক্সের নিচ তলা ও মেয়েদের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারি বাসভবন বরাদ্দ ছিল।
সকাল ৯টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্লাস, অফিস পরিদর্শন, প্রতিবেদন প্রদান, উপস্থাপনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। উপজেলার বিভিন্ন অফিসের কর্মপরিধি, সেবাসমূহ, সুযাগ-সুবিধা, সীমাবদ্ধতা জানাই ছিলো এ সফরের উদ্দেশ্য। বিভিন্ন অফিস সম্পর্কে জানাতে সময় দিয়েছিলেন মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী, উপজেলা চেয়ারম্যান আ স ম কামরুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নেহার বেগম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাদিউর রহিম জাদিদ, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. নুরুল হক, কৃষি কর্মকর্তা মো. জগলুল হায়দার, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহানারা পারভীন, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল মতলিব, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিনা ইয়াসমিনসহ অনেকে।
২৪ এপ্রিল সকাল ৮টায় উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া দু’টি বাস এসে উপস্থিত হয়। মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওর দেখতে রওয়ানা হন। সবাই মাধবকুণ্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে হারিয়ে যান। এরপর হাকালুকি হাওরের দিকে যাত্রা। প্রচণ্ড রোদের মধ্য দিয়ে পৌঁছান হাকালুকি হাওরে। বর্ষাকাল না হওয়ায় হাওরে ততটা পানি ছিল না। কিছু ছবি তুলেই তারা ফিরে আসেন গাড়িতে। ফিরতে ফিরতে তখন প্রায় সন্ধ্যা। কিছুটা বিশ্রাম ও খাওয়া-দাওয়ার পরই প্রতিদিনের মতো আবার রাত সাড়ে ৮টায় ক্লাস রুমে হাজির হন সবাই।
২৬ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে টানা ক্লাস ও উপস্থাপনা। মাঠ সফরের আনুষ্ঠানিক সমাপণী ঘোষণা করতে উপস্থিত হন স্থানীয় সংসদ সদস্য, ইউএনও এবং তার সহধর্মিনী ফারজানা আব্বাস চৌধুরীসহ অন্যান্য অতিথি। কিছু সময় বিরতির পর বিকেল ৪টায় চা বাগানের দিকে রওনা হন। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে চা বাগান বাংলোতে বার-বি-কিউ পার্টি ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত সবাই ছবি তোলেন এবং ঘুরে দেখেন চা বাগানের সৌন্দর্য। এরপর ফিরে আসেন চা বাগান বাংলোতে। আয়োজনের সব শেষে ছিল স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনা।
২৭ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ফেরার দিন। সকাল ৮টায় সবাই প্রস্তুত। শুরু হয় বিদায়ী যাত্রা। কিছু স্মরণীয় স্মৃতি নিয়ে সন্ধ্যায় হলে ফিরে সমাপ্ত হয় সপ্তাহব্যাপী মাঠ সফর।
মো. শাহীন সরদার/এসইউ/পিআর