রহস্যের আঁধারে প্রকৃতির রানি
কখনো কখনো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে গিয়েও মজার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হতে পারে। হঠাৎ করে এই ভ্রমণের মজাই আলাদা। কোনো পরিকল্পনা ছাড়া যদি ঘুরে আসা যায়, মন্দ হয় না। তেমনই এক ভ্রমণ সম্পর্কে লিখেছেন মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার-
সেখানে পৌঁছেই দেখলাম এক অদ্ভুত দৃশ্য। এর আগে বিভিন্ন শ্রেণির পর্যটনকেন্দ্র দেখলেও ব্যতিক্রম এ দৃশ্য দেখে হঠাৎ চমকে গেলাম। কারণ পর্যটনকেন্দ্রের সঙ্গে এমন দৃশ্য একদম চমকে দেওয়ার মতোই। সবাই কেরোসিন, পাটের আঁশসহ মশাল তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে ব্যস্ত। কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি।
আমরা আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ জন পর্যটক। গিয়েছিলাম প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অধীনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালনায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষক বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালায়। ১২ দিনের এ কর্মশালার ১১তম দিনে আমরা বেরিয়ে পড়েছি প্রকৃতির উদ্দেশে।
প্রথমে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের অদূরে মাটিরাঙা উপজেলার রিছাং ঝরনার সঙ্গে দেহ ও হৃদয়ের এক গভীর মিলন শেষে ছুটে চললাম আলুটিলার উদ্দেশে। নাম টিলা হলেও সেখানে রয়েছে বিশাল পর্বত ও গভীর বনাঞ্চল। প্রকৃতির এক অপরূপ মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।
অনেকে মশাল সংগ্রহ করলেও আমরা কয়েকজন স্মার্ট ফোনে লাইট থাকায় অলসতা অবলম্বন করেছি। এরপর নামলাম পর্বতের নিচের দিকে। হাঁটুতে প্রচণ্ড ব্যথা করছিল। কারণ সারা দিনই উৎসর্গ করেছি প্রকৃতির প্রেমে। আলুটিলায় পৌঁছতেই সূর্য ডুবি ডুবি করছে।
শেষ পর্যন্ত পর্বতের পাদদেশে যেতেই দেখি এক মহা সুড়ঙ্গ। দেখতে মনে হল, অন্ধকারের পূর্বপুরুষ হবে। অনেকেই ঢুকে পড়ছে ভেতরের দিকে। আমাদের টিমের সবাই আমাকে বরাবরই সামনে ঠেলে দিচ্ছে। কারণ শত সাহস ও আনন্দের মাঝেও প্রাণ হারানোর ভয় কার না থাকে?
একটু ভয়ের আভাস থাকলেও প্রথম কোনো কিছু দেখার আনন্দ অন্যরকম। একপ্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে বের হলাম অন্যপ্রান্ত দিয়ে। এটিই ছিল আমাদের অধিকাংশের জীবনের এক আশ্চর্য দর্শন এবং অভিজ্ঞতা।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক।
এসইউ/জেআইএম