ঘুরে এলাম সিলেট থেকে

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ১২:৫৫ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষে এসে স্বাভাবিকভাবে সবাই অনেক বেশি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কারণ শেষ হতে চলেছে শিক্ষা জীবনের সুন্দর দিনগুলো। চার বছরে বন্ধৃত্বের বাঁধন আরও সুদৃঢ় হয়েছে। একসঙ্গে ক্লাস করা, ক্লাস শেষ করে চায়ের আড্ডায় ঝড় তোলা দিনগুলো বুঝি ফুরিয়ে আসছে। মনের কোনো এক ঝাঁক বিষণ্নতা ভর করে নিজের অজান্তেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ দিনগুলোকে আরো রাঙাতে জীবনের ক্যানভাসে বেধে রাখতে সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শেষ বর্ষের আয়োজনে সিলেট শহরে শিক্ষা সফরে যাওয়া হয়। তারা ঘুরে বেড়ান সিলেটের দর্শনীয় স্থানগুলোতে। সঙ্গে ছিলেন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মুরাদ আহমেদ ফারুক ও সহযোগী প্রফেসর ড. মো. আজহারুল ইসলাম।

দিনটি ছিল বুধবার। রাত ১০টায় সবাই জড়ো হই বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলিপ্যাডে। এখন শুধু যাত্রা শুরুর পালা। রাত ১১টার দিকে শুরু হল যাত্রা। ভোর চারটার দিকে সিলেট শহরে। থাকার বন্দোবস্ত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) করা ছিল।

কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়লাম। উদ্দেশ্য সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী বিছনাকান্দি। পাহাড় ও ঝরনা থেকে নেমে আসা স্বচ্ছ শীতল পানি আর নীল আকাশচুম্বী পাহাড় আমাদের মন কেড়ে নিয়েছিল। আমরা সবাই ছোট-বড় উঁচু-নিচু পাথর কাটিয়ে বিছনাকান্দির অগভীর পানিতে গা ভাসিয়ে দিয়েছিলাম।

sylhet-tour

সিলেটের বিখ্যাত পাঁচ ভাই রেস্টুরেস্টে রাতের খাবার শেষ করে বেরিয়ে পড়লাম উপমহাদেশের বিখ্যাত দরবেশ ও পীর শাহজালালের (র.) মাজারের দিকে। দিনের প্রচণ্ড গরম শেষে সন্ধ্যায় শান্তির পরশ নিয়ে আসে এক পশলা বৃষ্টি। বৃষ্টিস্নাত পরিবেশে ক্লান্তি ভুলে গল্প-গুজব, হাসি-ঠাট্টা আর দুষ্টুমিতে কাটে আমাদের সারা রাত।

পরদিন ভোরে নাস্তা শেষ করে আবার ছুটে চলা। বেরিয়ে পড়লাম শহরের সৌন্দর্য দর্শনে। ছোট টিলায় ঘেরা শহর। চা বাগান শহরকে বেঁধে রেখেছে সবুজের মায়ায়। সিলেট ক্যাডেট কলেজ, এমএজি ওসমানী বিমানবন্দর, সিলেট স্টেডিয়াম দেখে গেলাম সিলেটের বিখ্যাত সাত রঙের চায়ের স্বাদ নিতে।

এবার উদ্দেশ্য দেশের বৃহত্তম প্রাকৃতিক জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক। মাধবকুণ্ডের সুবিশাল পর্বতগিরি, শ্যামল সবুজ বনরাজি বেষ্টিত ইকোপার্কে ঝরণার কলকল শব্দ স্বর্গীয় পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, বন্য বানর ও কীটপতঙ্গের অচেনা সুর ভ্রমণপিপাসুদের মনে অনাবিল আনন্দ বয়ে আনে। জলপ্রপাতের অবিরাম ধারা প্রবাহিত হওয়ায় পাহাড়ের গা পুরোটাই কঠিন পাথরে পরিণত হয়েছে। জলের সঙ্গে আমাদের দুন্তপনা, চলার পথে শুয়ে কৃত্রিম বাঁধ সৃষ্টি করা বাড়তি আনন্দ দেয়। এরমধ্যে চলে যুগলবন্দি হয়ে সেলফি এবং গ্রুপ ফটোশুট।

দুদিনের শিক্ষা সফরের পুরোটা সময় আনন্দেই কেটেছে। হয়ত কিছুদিনের মধ্যেই আমরা একে একে সবাই আলাদা হয়ে যাব। একই ক্লাসে আর চাইলেই বসা হবে না। ব্যস্ত হয়ে পড়বো নিজেকে নিয়ে। কিন্তু শত ব্যস্ততার মধ্যে হাতছানি দিয়ে পিছু ডাকবে এই অসাধারণ দিনগুলো।

মো. শাহীন সরদার/এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।