ঈদের ছুটিতে ঘুরতে পারেন বগুড়ার যেসব দর্শনীয় স্থানে

ঈদের ছুটিতে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন? তাহলে বগুড়া হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ গন্তব্য। ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই জেলা ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এক দারুণ আকর্ষণ। চলুন বগুড়ার কিছু জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই-
মহাস্থানগড়
বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন নগরী মহাস্থানগড়, যা বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত এই নগরী একসময় পুণ্ড্রবর্ধন রাজ্যের রাজধানী ছিল। এখানে আপনি প্রাচীন দুর্গের প্রাচীর, গোবিন্দভিটা মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ, বেহুলা-লখিন্দরের বাসরঘর এবং ভাসু বিহারের মতো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে পাবেন। বগুড়া শহর থেকে সিএনজি বা অটোরিকশায় সহজেই মহাস্থানগড়ে পৌঁছানো যায়।
মহাস্থান জাদুঘর
মহাস্থানগড়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে ১৯৬৭ সালে করতোয়া নদীর তীরে প্রতিষ্ঠিত হয় মহাস্থান জাদুঘর। এখানে প্রাচীন মূর্তি, বাসনপত্র, স্বর্ণ ও ব্রোঞ্জের সামগ্রী, শিলালিপি, পোড়ামাটির পুতুল এবং বিভিন্ন প্রাচীন অলংকারসহ মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রদর্শিত হয়। মহাস্থানগড় ভ্রমণের সময় এই জাদুঘরটি অবশ্যই দেখার মতো।
খেরুয়া মসজিদ
প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো খেরুয়া মসজিদ বগুড়ার শেরপুর উপজেলা সদর থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে খন্দকারটোলা গ্রামে অবস্থিত। মুঘল স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই মসজিদটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত। বগুড়া শহর থেকে শেরপুরগামী বাসে শেরপুর পৌঁছে সেখান থেকে রিকশা বা অটোরিকশায় খেরুয়া মসজিদে যাওয়া যায়।
- আরও পড়ুন:
- ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন মিরসরাইয়ের পর্যটন স্পটগুলো
- ‘জিনের তৈরি’ মসজিদে একদিন
- ঘুরে আসতে পারেন আরশিনগর ফিউচার পার্কে
রানী ভবানীর বাপের বাড়ি
বগুড়া জেলার সান্তাহার উপজেলার ছাতিয়ানগ্রামে অবস্থিত রানী ভবানীর বাপের বাড়ি ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত এই স্থাপনাটি বর্তমানে সংরক্ষণের অভাবে ধ্বংসপ্রায়। সান্তাহার থেকে রিকশা বা অটোরিকশায় সহজেই এখানে পৌঁছানো যায়।
সারিয়াকান্দি
যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর একটি স্থান। এখানে প্রেম যমুনার ঘাট ও কালীতলা ঘাট থেকে নৌকায় যমুনা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। বগুড়া শহর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সারিয়াকান্দি উপজেলায় পৌঁছানো যায়।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার গাবতলী বা মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সরাসরি বাসে এবং কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে করে বগুড়া শহর যেতে পারেন। বাসে নন-এসিতে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ও এসিতে ১২৫০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা ভাড়া। ট্রেনে গেলে যেতে পারেন আন্তঃনগর রংপুর এক্সপ্রেস বা লালমনি এক্সপ্রেসে।
খাবার ও থাকার ব্যবস্থা
বগুড়ায় থাকতে পারবেন হোটেল মম ইন (ফাইভ স্টার মানের), হোটেল নাজ গার্ডেন (ফোর স্টার মানের), পর্যটন মোটেল (বনানী মোড়ে), সেফওয়ে মোটেল (চারমাথা), নর্থওয়ে মোটেল (কলোনি বাজার), সেঞ্চুরি মোটেল (চারমাথা), মোটেল ক্যাসল এমএইচ (মাটিডালি) ইত্যাদি জায়গায়। এগুলো প্রত্যেকটাই শহরের নিরিবিলি পরিবেশে। এসব হোটেলে সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা থেকে ৬ হাজার টাকায় থাকতে পারবেন।
আর হ্যাঁ, বগুড়ায় গিয়ে আকবরিয়ার দই, এশিয়ার দই ও মিষ্টি, চিনিপাতার দই ও কলোনির চুন্নুর গরুর চাপ খেতে ভুলবেন না কিন্তু। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় স্থানীয় ও ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ নিতে পারেন।
জেএস/এএসএম