আগামীর বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারদের প্রত্যাশা

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৫০ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২৪

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

দফায় দফায় ইন্টারনেট বন্ধ থাকায়, চালু থাকলে ও স্পিড না থাকায় দেশের কয়েক লাখ ফ্রিল্যান্সার আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ৫ দিনে ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১২০ কোটি টাকা। চলতি বছরে এটার উপরে যে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে, সেটির ক্ষতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় পাঁচশ কোটি টাকা।

ছাত্র জনতার বিজয়ের পর নতুন সরকার গঠন হয়েছে। এই সরকার ফ্রিল্যান্সারদের পাশে থাকবে। এমনটাই প্রত্যাশা।ফ্রিল্যান্সরা সরকারের কাছে কিছু দাবির কথা জানিয়েছে। যেগুলো পূরণ করা হলে দ্রুত ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন বলে মনে করছেন। দুজন ফ্রিল্যান্সার বলেছেন তাদের প্রত্যাশার কথা।

ইমরান হোসেন

কর্নধার, এ ফোকাসড এজেন্সি

পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় ইংরেজি ভাষা শেখার অ্যাপ ‘এলসা স্পিক’ এ প্রোডাক্ট ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত আছেন ইমরান। পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন নিজের প্রতিষ্ঠান ‘এ ফোকাসড এজেন্সি’। যেখানে কাজ করছে ৮ জন। যারা ফ্রিল্যান্সিং প্রজেক্টে, বিভিন্ন কোম্পানিকে ডিজাইন কনসাল্টেন্সি সার্ভিস প্রদান করছেন। ইমরান হোসেন নতুন বাংলাদেশের কাছে যা প্রত্যাশা করেন-

১.পেপাল এবং ওয়াইজ পেমেন্ট গেটেওয়ে সম্পূর্ণ সার্ভিস কার্যক্রম বাংলাদেশের চালু করা।
২. ফ্রিল্যান্সিং আইডি কার্ডকে যথাযথ মর্যাদা সম্পন্ন করা যাতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ভিসা, অন্যান্য বিভিন্ন খাতে এর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায় এবং এটি ব্যবহার করা যায়।
৩. ব্যাংক লোন কিংবা ক্রেডিট কার্ড গ্রহণের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং পেশাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হোক।
৪. ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক বিভিন্ন কোর্সের মাধ্যমে মানুষ যে প্রতারিত হচ্ছে, এটির জন্য একটি মনিটরিং ব্যবস্থা করা হোক যাতে প্রতিটা কোর্সের মান বিবেচনা করে সেগুলো বিক্রির বৈধতা দেওয়া হয়।
৫. বর্তমানে আইটি সেক্টরে সরকারের যেসব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু আছে সেগুলোকে আরও উন্নত মান এবং আধুনিক করা হোক।
৬. ফ্রিল্যান্সারদের জন্য নির্দিষ্ট ব্রডব্যান্ড কিংবা সিম সেবা চালু করা হোক। দেশের যে কোনো পরিস্থিতিতে যদি ইন্টারনেটের ঘাটতি দেখা যায়, ন্যূনতম যতটুকু থাকবে সেখান থেকে যেন ফ্রিল্যান্সাররা সুবিধা পায়।
৭. কিছু সেক্টরে ফ্রিল্যান্সারদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে যথেষ্ট পরিমাণের ডলারএর প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ফ্রিল্যান্সারদের সেই ডলারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক।

মেহেদী হাসান শুভ

কর্নধার, স্বপ্ন একাডেমি

শুভ নিজে ফ্রিল্যান্সিং করার পাশাপাশি প্রায় তিন হাজার মানুষকে বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং শিখিয়েছেন। মাসে তার আয় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ডলার। তিনি পেয়েছেন রাইজিং ইয়োথ অ্যাওয়ার্ড, গ্লোবাল চেঞ্জমেকার্স অ্যাওয়ার্ড, মহাত্না গান্ধী অ্যাওয়ার্ড। মেহেদীর প্রত্যাশা-

১. নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা।
২. আমাদের পেমেন্ট গেট ওয়ে হিসেবে পেপাল বাংলাদেশে চাই।
৩. ইন্টারনেট প্যাকেজের মূল্য কমানো এবং মেয়াদ বাড়ানো। যাতে সাধারণ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে।
৪. ব্যাংকে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সব সুবিধা তৈরি করা।
৫. তরুণদের স্কুল কলেজ পর্যায়ে আইটি খাতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে দক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
৬. আন্তর্জাতিক সব ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রম বাংলাদেশে নিয়ে আসা।
৭. গ্রাম পর্যায়ে ইন্টারনেট অর্থাৎ মোবাইল ডাটা ও ওয়াই-ফাইয়ের দ্রুত গতির সার্ভিস চালু করতে হবে।

কেএসকে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।