ইন্টারনেট বন্ধের মূলহোতাদের নিয়ে তদন্ত কমিটি করা ‘প্রহসন’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৪২ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে দুই দফা ইন্টারনেট শাটডাউনের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, তাতে ঘটনায় জড়িতরাও রয়েছেন বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

পাশাপাশি গ্রামীণ টেলিকমের কথিত দুর্নীতির মামলায় ভিত্তিহীন অভিযোগে অন্তর্বর্তী সরকারের বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্যায়ভাবে কারাদণ্ড দেওয়া একজন কর্মকর্তাও তদন্ত কাজে যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ সংগঠনটির।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

লিখিত বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাবমেরিন ক্যাবলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং কমিশনাররা ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। অথচ সচিবের পরামর্শে অতিরিক্ত সচিবের সমন্বয়ে ইন্টারনেট বন্ধের কারণ খুঁজতে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তা প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক পরিচয়ে নিয়োগ পাওয়া বিটিআরসি চেয়ারম্যান ও অন্য কমিশনাররাও স্বপদে বহাল। সেই সঙ্গে পরিচালক এম এ তালেব দায়িত্বে বসে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব নয়।

আমজাদ হোসেন ও মাহাদী আহমেদকে ওএসডি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেই সঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধের নেপথ্যে যেসব ব্যক্তির নাম এসেছে, বিশেষ করে তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এনটিসিএমের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল হাসান ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যারা এ অপকর্মে যুক্ত ছিলেন, তাদের প্রত্যেককে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করছি।

ইন্টারনেট চালু হলেও পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা এখনো নিশ্চিত হয়নি দাবি করে সংগঠনটির সভাপতি বলেন, ইন্টারনেটে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে লাইভ টেলিভিশন বন্ধ করে দেওয়া এবং সেট টপ বক্সের একক ব্যবসা আধিপত্য বিস্তারকারী সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ও সচিব এবং ক্যাবল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিটিআরসিতে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সামিট গ্রুপের শেয়ার ট্রান্সফারের নামে ৫ শতাংশ হারে মোট  ১০ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান। অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে ঠিকই রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। বিটিআরসিতে এখনো ২৪ জন দুর্নীতিবাজ ও সিন্ডিকেটের কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বপদে বহাল। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়মের যেসব অভিযোগ রয়েছে, সেগুলো তদন্তে নিরপেক্ষ কমিটি করা জরুরি।

সংবাদ সম্মেলন থেকে ভবিষ্যতে ইন্টারনেট শাটডাউন না করা, পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল, বিটিআরসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ, মোবাইল ও ইন্টারনেট খাতে কর কমানোসহ ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

এসময় অন্যদের মধ্যে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালেদ আবু নাসের, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসরাত হাসান, প্রকৌশলী আবু সালেহ, প্রযুক্তিবিদ তানভীর জোহা, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য মনিরুজ্জামান শাশ্বত মনির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এএএইচ/এমএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।