তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী

সহযোগিতা না করলে ফেসবুক-ইউটিউবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২৫ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২৪

অপপ্রচার ও গুজব প্রতিরোধে সরকারকে সহযোগিতা না করলে ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এমনকি তাদের বাংলাদেশে অফিস খোলা ও ডাটা সেন্টার স্থাপনে বাধ্য করা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত বিএসআরএফ সংলাপ-এ তিনি এ তথ্য জানান।

দেশে গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য অপতৎপরতা চলছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ করবো। পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক কর্তৃপক্ষ যারা আছেন তাদেরও অনুরোধ করবো তারা যাতে বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। ধর্মীয় অনুভূতি এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমাদের ছাত্র-ছাত্রী ও দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যেন কোনো ধরনের মিথ্যা গুজবকে তারা প্রশ্রয় না দেয়।’

আরও পড়ুন

তিনি বলেন, এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার গুজবকে যাতে তারা প্রশ্রয় না দেয়। এ ধরনের গুজবকে প্রতিরোধ করার জন্য সরকারকে যাতে তারা সহযোগিতা করে। তাদের কাছ থেকে আমরা যদি সহযোগিতা না পাই, তাদের বিরুদ্ধেও আমরা কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।

বাংলাদেশে ফেসবুকের লিঁয়াজো অফিস করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে সরকার অনুরোধ জানিয়ে আসছে। কিন্তু তারা তাতে সাড়া দিচ্ছে না-এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের বড় একটি সংখ্যার মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। ফেসবুক এখান থেকে বৈধ ও অবৈধ উপায়ে যে আয়টা করে, সেটা বিবেচনায় তাদের বাংলাদেশকে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশের আইন, ধর্মীয় মূল্যবোধ, নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা উচিত। সেসব বিষয় বিবেচনা করে আমরা অনেকবার বলেছি। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, তারা (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) শুধু বাংলাদেশ থেকে বৈধ এবং অবৈধ আয়ের দিকেই আগ্রহী, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য তাদের তেমন কোনো দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ আমরা কিন্তু দেখছি না।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের মাধ্যমেও বলছি, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দাপ্তরিকভাবেও আবারো কঠোর ভাষায় তাদের লিখবো। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের অফিস, তাদের ডাটা সেন্টার, তাদের সব কার্যক্রম যাতে নিবন্ধিত করে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকদের তথ্য-উপাত্ত যাতে বাংলাদেশের মাটিতেই রাখে। কারণ আমার-আপনার তথ্য আমাদের অজান্তেই তারা ব্যবহার করছে তাদের ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য।

আমরা কোনটা পছন্দ করি, কোন রেস্টুরেন্টে খাই কোন ধরনের গান শুনতে পছন্দ করি, কোন ধরনের সিনেমা দেখতে পছন্দ করি, কি ধরনের পোস্ট আমি দেই, কোন ধরনের কাপড় আমি পড়ি-এই তথ্য-উপাত্তগুলো তারা গোপনে সংগ্রহ করে আমাদের সামনে বিজ্ঞাপনগুলো প্রদর্শন করে। যে বিজ্ঞাপন থেকে তারা আয় করে সেটার অংশীদারত্ব কিন্তু আমরা পাই না। আমাদের যে তথ্য তারা অন্য কোম্পানিকে দিচ্ছে, সেটা কিন্তু আমাদের অনুমতি ছাড়াই করছে। আইনগতভাবেও এটা অপরাধ এবং মানবিকভাবেও এটা অমানবিক।

পলক আরও বলেন, আমাদের নাগরিকদেরে সব স্পর্শকাতর তথ্য-উপাত্ত তারা নিচ্ছে এবং ব্যবহার করছে ব্যবসায়িক স্বার্থে এবং বৈধ-অবৈধ উপায়ে তারা বাংলাদেশ থেকে অর্থ উপার্জন করছে। এগুলোকে আমরা কোনোভাবেই আসলে মেনে নিতে পারি না। সে কারণেই আমরা ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব সবাইকে বাংলাদেশে তাদের নিবন্ধন করা এবং অফিস খোলা, তাদের ডাটা সেন্টার স্থাপন করা, এবং বাংলাদেশের ডাটা বাংলাদেশে রাখার জন্য আমরা তাদের বাধ্য করবো।

বিএসআরএফ সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাবের সভাপতিত্বে সংলাপ সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।

আরএমএম/এমআইএইচএস/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।