ছয় তরুণের প্রতিভায় মুগ্ধ পলক


প্রকাশিত: ১২:২৬ পিএম, ০১ এপ্রিল ২০১৬
ফাইল ছবি

বাংলাদেশি একদল তরুণের অসাধারণ সব উদ্ভাবনী দক্ষতা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি যেন প্রতিভাবান এমন উদ্যমী তরুণ উদ্যোক্তাদেরই খুঁজছিলেন। কারণ একটাই, ২০২১ সালে আইসিটি রফতানি ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা। আর তা সম্ভব তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক নব নব উদ্ভাবনীর দ্বারা। একটি ভালো উদ্ভাবনী থেকেই আয় হতে পারে বিলিয়ন ডলার।

বৃহস্পতিবার অপরাহ্নে পলক জানতে পারেন রাজধানী ঢাকার মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় দেশের প্রতিভাবান কয়েকজন তরুণ মিলে গড়ে তুলে তুলেছেন সিক্স এক্সিস টেকনোলজিস নামে একটি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলেপমেন্ট (আর অ্যান্ড ডি) সেন্টার। সেদিন সন্ধ্যায়ই তিনি ছুটে যান সেখানে। দেখতে পান মাত্র ৫শ বর্গফুটের দুটি কক্ষে ছয় তরুণ মিলে গড়ে তুলেছেন আর অ্যান্ড ডি সেন্টারটি। আর এ সেন্টারে বসেই তারা তৈরি করেছেন থ্রিডি প্রিন্টার, থ্রিডি স্ক্যানার, কম্পিউটার নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোলার (সিএনসি) রাউটার, আর্টিফিশিয়াল লিম্ব (হাতের কৃত্রিম অংশ), ভার্চুয়াল রিয়েলিটিসহ অটোমেটিক ট্রিডমিল, ড্রোন, রুটি মেকারসহ নানা যন্ত্র। এসব দেখে এবং সিক্স এক্সিস টেকনোলজিসের উপদেষ্টা ফারুক আহমেদ জুয়েল ও কম্পিউটার প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলামের মুখে যন্ত্রগুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে শুনে তিনি অভিভূত হন।

ছয় তরুণের মূলধন বলতে ছিল নিজেদের সাড়ে তিন লাখ টাকা এবং অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রামের উদ্ভাবনী তহবিল থেকে পাওয়া ১৫ লাখ টাকা। জুয়েল জানান, আর্থিক সহযোগিতা পেলে এবং ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইট আন্তর্জাতিক কমপ্লায়েন্সের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করা হলে তাদের উৎপাদিত পণ্য রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। তিনি এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

Six-axis

কম্পিউটার প্রকৌশলী আশরাফ বলেন, তাদের থ্রিডি প্রিন্টার থেকে উৎপাদিত আর্টিফিসিয়াল লিম্ব যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘ই-এনাবল’ নামক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান কাজাখস্তানে শা শা নামের নয় বছরের একটি ছেলের হাতে লাগিয়ে দেখেছে তা খুব ভালোভাবে কাজ করছে।  

সিক্স এক্স টেকনোলজিসের তরুণদের এসব উদ্যোগ আরো এগিয়ে নিতে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক এস এম আশরাফুল ইসলামকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, এ তরুণদের উদ্যোগ ও উদ্ভাবনীগুলোকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের।

জুনাইদ আহমেদ পলক হাইটেক পার্কে তাদের জন্য জমির ব্যবস্থা করা ও আইসিটি ডিভিশনের উদ্ভাবনী তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতার কথাও জানান। বিসিসির কানেক্টিং স্টার্ট আপ প্রতিযোগিতায় চূড়ান্তভাবে মনোনীত হলে তাদের এক বছরের জন্য বিনা ভাড়ায় স্পেস বরাদ্দ দেয়া হবে। ব্যবসা করার জন্য থাকবে প্রণোদনা। বিদেশে আন্তর্জাতিক ফোরাম ও মেলায় এসব তরুণদের অংশগ্রহণ ও পণ্য সম্পর্কে পরিচিত করার ব্যবস্থা করা হবে।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশের এই তরুণদের উদ্ভাবনী আমাদের মনে এই বিশ্বাস জাগিয়েছে যে, ২০২১ সালে আইসিটি রফতানি ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করা কঠিন ব্যাপার হবে না। শুধুমাত্র একটি উদ্ভাবনী থেকে বিশ্বে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয়ের অনেক উদাহরণ রয়েছে।

একে/এনএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।