ফেসবুকে আগ্রহ হারাচ্ছে টিনএজাররা


প্রকাশিত: ০৯:৩৯ এএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৪

বিশ্বব্যাপী টিনএজারদের কাছে ক্রমেই আবেদন হারাচ্ছে শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ১৬ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের প্রায় ৬৬ শতাংশ জানায়, তারা আগের মতো ফেসবুক ব্যবহার করছে না। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। ৩২টি দেশের ১ লাখ ৭০ হাজার কিশোর-কিশোরীর মধ্যে জরিপ চালিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে গ্লোবালওয়েবইনডেক্স। খবর আইএএনএস।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, টিনএজাররা ফেসবুকের চেয়ে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ বেশি ব্যবহার করছে। তবে এখনো সামাজিক যোগাযোগ সাইটে সক্রিয় কিশোর-কিশোরীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ সাইট থেকে তারা ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপের দিকেই বেশি ঝুঁকছে।

বিশ্বব্যাপী সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মার্ক জাকারবার্গের ফেসবুক। সাইটটিতে গ্রাহকসংখ্যা দিন দিন বাড়লেও টিনএজারদের সংখ্যা কমছে। অথচ মার্ক জাকারবার্গ মূলত এই শ্রেণীর কথা মাথায় রেখেই সাইটটি চালু করেছিলেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ফেসবুক টিনএজারদের ধরে রাখতে যথেষ্ট সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাদের সব মনোনিবেশ এখন অনলাইন কেনাকাটায়। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি বাই বাটন সেবা চালু করেছে। এ বাটনের মাধ্যমে গ্রাহক অনলাইনের বিজ্ঞাপনে থাকা যে কোনো পণ্যই কিনতে পারবেন।

কিন্তু এ ধরনের সেবা কিশোর বয়সীদের জন্য নয়। আবার জনপ্রিয়তা বাড়ার কারণে সন্তানদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও ফেসবুকের গ্রাহক হচ্ছেন। ফলে এ প্লাটফর্মে টিনএজারদের পদচারণ কমছে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, গ্রাহকসংখ্যা বাড়লেও সাইটটির ফটো শেয়ারিং ও মেসেজিংয়ের মতো সেবার পয়েন্ট গত দুই বছরে ২০ শতাংশ কমেছে।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৩০ শতাংশ জানায়, তাদের বেশির ভাগ বন্ধু এখন ফেসবুকের পরিবর্তে ইনস্টাগ্রামের মতো বিভিন্ন ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করছে। ফলে তারাও এখন সেসব অ্যাপ ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে। গত কয়েক বছরে ফেসবুকের গ্রাহকসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ফলে কেউ একজন গ্রাহক হলেই দেখছেন তার পরিচিত অনেকেই সাইটটি ব্যবহার করছেন। ফলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্য সহজ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ফেসবুক থেকে স্বল্পসংখ্যক কিশোর-কিশোরী সরে যাওয়ার কারণে অন্যরাও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করছেন।

প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, ফেসবুকের মোট গ্রাহকসংখ্যা বাড়লেও সক্রিয় গ্রাহক কমেছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করেই সংশ্লিষ্ট খাতের জনপ্রিয় অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ কিনেছিল ফেসবুক। ধারণা করা হচ্ছে, হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তাদের কিশোর বয়সী গ্রাহকদের ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাবে।

কিশোর বয়সীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ফটো ও মেসেজ লেনদেন সেবা স্ন্যাপচ্যাট।  প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেসেজিং অ্যাপগুলোর মধ্যে কিশোরদের টানতে সবচেয়ে বেশি সফল স্ন্যাপচ্যাট। যে কোনো সামাজিক অ্যাপের মধ্যে এতে কিশোর গ্রাহকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। যুুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো সামাজিক যোগাযোগের বড় বাজারগুলোর ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ কিশোর-কিশোরীই (যারা অনলাইনে থাকেন) স্ন্যাপচ্যাটের গ্রাহক। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ফেসবুক কিশোর-কিশোরীদের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা আনছে না বলেই তারা সাইটটি ব্যবহারে আগ্রহ হারাচ্ছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।