ল্যাপটপ-প্রিন্টার-ইন্টারনেট থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৪৩ পিএম, ১৪ জুন ২০২২

প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ল্যাপটপ, প্রিন্টার ও ইন্টারনেটের ওপর ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনের নেতারা। এছাড়া প্রযুক্তিপণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার করে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ট্যাক্স অব্যাহতি সুবিধা দেওয়ারও দাবি জানান তারা।

মঙ্গলবার (১৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ২০২২-২৩ জাতীয় বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট পাশ হলে ল্যাপটপের মূল্য ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং প্রিন্টার, টোনার ও কার্টিজে ১৫ শতাংশ এবং ইন্টারনেটের মূল্য ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে যা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্তরায়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সহসভাপতি আবু দাউদ খান। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রত্যাশিতভাবে ইন্টারনেট, ল্যাপটপ ও প্রিন্টারের ওপর ভ্যাট ও ট্যাক্স বসানো হয়েছে, যা প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বেসিসের দাবিগুলো বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন ক্ষমতা ও চাহিদা পূরণে সক্ষম না হওয়া পর্যন্ত ল্যাপটপ আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক সাধারণ ব্যবহারকারীদের ল্যাপটপ চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হবে। প্রযুক্তিপণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার করে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ট্যাক্স অব্যাহতি সুবিধা দিতে হবে।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি মো. ইমদাদুল হক বলেন, ২০২২-২৩ এর প্রস্তাবিত বাজেটে ব্রডব্যান্ড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ১০ শতাংশ অগ্রিম ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে আরও ১০ শতাংশ। এতে ইন্টারনেট সংযোগের খরচ বেড়ে যাবে। ফলে গ্রাহকদের খরচও বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, দেশে যে ক্যাবল তৈরি হয়, তা মানসম্পন্ন নয়। আমাদের দাবি আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইটিএস খাতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ১০ শতাংশ অগ্রিম ট্যাক্স এবং অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল আমদানির ট্যাক্সও প্রত্যাহার করতে হবে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, ল্যাপটপ ও প্রিন্টারের ওপর প্রস্তাবিত ট্যাক্স এবং শুল্ক বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) খাতকেও প্রভাবিত করবে।

‘ভ্যাট আরোপ হওয়ার ফলে খরচ বৃদ্ধি পাবে। এতে অনেক প্রতিষ্ঠান আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতে চাইবে না। পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সারদের জন্যও ল্যাপটপ কেনা কঠিন হয়ে যাবে। সমস্যা সমাধানে ল্যাপটপ ও প্রিন্টারের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে।’

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার বলেন, উদ্দ্যোক্তাদের সেবা দিতে ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের মূল্যবৃদ্ধি করা হলে, তাদের ব্যয় বেড়ে যাবে। বর্তমানে দেশে ই-কমার্স খাত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ সময় যদি ল্যাপটপ ও কম্পিউটারের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ইন্টারনেটের ওপর ১০ শতাংশ ট্যাক্স আরোপ করা হয়, তবে উদ্যোক্তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন না।

ল্যাপটপ বিলাসী পন্য নয় বরং এটি প্রয়োজন মন্তব্য করে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি ইঞ্জি. সুব্রত সরকার বলেন, বাংলাদেশে ল্যাপটপ উৎপাদনের প্রযুক্তি কারখানা এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। মাত্র এক-দুটি কোম্পানি স্বল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু করলেও চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল। শুধু বাইরে থেকে আনা কম্পোনেন্টস (প্রযুক্তি উপাদান) এখানে সংযোজন করা হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমদানিতে বাড়তি ট্যাক্স বসালে তা স্থানীয় উৎপাদনে সহায়তার চেয়ে ব্যবহারকারীদের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়াবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিসিএসের সহ-সভাপতি মো. রাশেদ আলী ভূঁইয়া, মহাসচিব কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম ও মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

আরএসএম/এমপি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।