বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণে পরামর্শ গ্রহণের নির্দেশ
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাই-২ উৎক্ষেপণের লক্ষ্যে বিশেষায়িত পরামর্শ গ্রহণ করতে বাংলাদেশ কমিউনিকেশন্স স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডকে (বিসিএসসিএল) নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার ঢাকায় আইইবি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -২ এর বিষয়ে অংশীজনের সাথে মতবিনিময় সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এ নির্দেশ দেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সভ্যতার মহাসড়ক হচ্ছে ডিজিটাল সংযুক্তি। প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ যথাসম্ভব ত্রুটিমুক্ত, প্রয়োজনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং চাহিদা মেটানোর মতো অবস্থানে কাজে লাগানোর উপযোগী করতে বিশেষায়িত বিশেষজ্ঞ পরামর্শের ভিত্তিতে পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য বিসিএসসিএলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে বাংলাদেশের অবস্থান এমন একটি জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে প্রকল্পের জন্য মেধা খাটানোর দরকার হয়, অর্থের জন্য চিন্তা করতে হয় না।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষা, আবহাওয়া, কৃষি এবং স্বাস্থ্যসহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ এ কী কী থাকা উচিত এবং আগামী ১৫ বছর পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এর লাইফ টাইম শেষ হওয়ার বিষয় মাথায় রেখে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-৩ ও ৪ নিয়েও এখন থেকেই ভাবতে হবে। বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সামনে এগুতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, স্যাটেলাইট পরিচালনায় আমাদের ছেলে-মেয়েদের দক্ষতা অর্জনের যে ক্ষমতা, সেটাই আমাদের শক্তি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ দিয়ে আমরা কী অর্জন করতে চাই আজকের মতবিনিময় থেকে অর্জিত ফলাফল ও পরামর্শ পরিকল্পনা গ্রহণে সহায়ক হবে বলে মন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় স্পেস ইউনিভার্সিটি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এ বিষয়ক মানবসম্পদের অভাব পূরণের ব্যবস্থা নিয়েছেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বেতবুনিয়ায় ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা এবং ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নে বাংলাদেশের সদস্য পদ অর্জনকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিস্ময়কর দূরদর্শিতা বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু মেধাভিত্তিক জাতি বিনির্মাণে প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করেন। দেশের খাদ্যের জোগান দেওয়াটাও তখন সহজসাধ্য ছিল না। সে দেশে উপগ্রহের সাথে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা কী পরিমাণ দূরদর্শিতার বিষয় তা ভাবতে গেলেও অবাক লাগে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিপ্লবের যে সূচনা করে গেছেন, তারই ধারাবাহিকতায় তার কন্যার হাতে গত ১০ বছরে বাংলাদেশ বিশ্বে ডিজিটাল বিপ্লবের পথপ্রদর্শক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের কারণে সেই কর্মসূচিটি আর বাস্তবায়িত হয়নি, কিন্তু ২০০৯ সালে তিনি ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে ৫৭তম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী গর্বিত দেশ হিসেবে তুলে ধরেছেন। অগ্রগতির প্রতিটি সূচকে আজ বাংলাদেশ বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
মন্ত্রী বলেন, মহাকাশ থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি ঘরে ডিজিটাল সংযোগ পৌঁছে দেয়ার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে তার অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন করতে হবে।
বিসিএসসিএল চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসি এর চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
এএ