ই-কমার্সে ভ্যাট : ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্তরায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০৫ পিএম, ০৭ জুন ২০১৮

অনলাইনে পণ্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর পাঁচ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এ ভ্যাট ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্তরায় বলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মন্তব্য করেছেন ই-কমার্স সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে অনলাইন কেনাকাটায় প্রস্তাবিত ভ্যাট বাস্তবায়ন না করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৭ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে অনলাইন কেনাকাটায় পাঁচ শতাংশ ভ্যাট অরোপের কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি জানান, ইন্টারনেট বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে পণ্য বা সেবার ক্রয়-বিক্রয়ের পরিসর বাড়াতে ‘ভার্চুয়াল বিজনেস’ নামে একটি নতুন সেবার সংজ্ঞা সংযোজন করা হয়েছে। ফলে অনলাইনভিত্তিক যেকোনো পণ্য বা সেবার ক্রয়-বিক্রয় বা হস্তান্তরকে এ সেবার আওতাভুক্ত করা সম্ভব হবে। তাই ভার্চুয়াল বিজনেস সেবার ওপর পাঁচ শতাংশ হারে মূসক আরোপের প্রস্তাব করছি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ভার্চুয়াল ও ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান দেশে প্রচুর আয় করছে, কিন্তু তাদের কাছ থেকে আমরা তেমন কর পাচ্ছি না। এসব লেনদেন করের আওতায় আনার মতো পর্যাপ্ত বিধান এতদিন আমাদের কর আইনে ছিল না।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দেশের অন্যতম ই-কমার্সে প্রতিষ্ঠান ‘অথবা ডটকম’এর হেড অব বিজনেস আজিম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমান সরকারের ভিশন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা। ই-কমার্স সেবার ওপর পাঁচ শতাংশ ভ্যাট সরকারের এ উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করবে। তাই অনলাইনে কেনাবেচা উৎসাহিত করা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ খাতে প্রস্তাবিত ভ্যাট বাস্তবায়ন না করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

ই-কমার্সে ভ্যাট অরোপরে বিষয়ে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি রাজীব আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কিন্তু অনলাইনে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে ভ্যাট অরোপের প্রস্তাবে আমরা হতাশ ও মর্মাহত। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্তরায়।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই দেশের সব মানুষ ই-কমার্সের আওতায় আসুক। কিন্তু ভ্যাট অরোপ সাধারণ মানুষকে অনলাইন কেনাকাটায় নিরুৎসাহিত করবে। কারণ এ ব্যবসায়ীরা নিজের পকেট থেকে ভ্যাট দিবে না। ক্রেতার কাছ থেকে আদায় করে দিবে। ভ্যাট বসানো হলে ক্রেতারা আগ্রহ হারাবে।

ই-কমার্স ব্যবসায়দের এ নেতা বলেন, প্রস্তাবিত ভ্যাট বাস্তবায়ন হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে গ্রামের উদ্যোক্তারা। কারণ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও প্রত্যন্ত গ্রামের উদ্যোক্তারা নতুন নতুন পণ্য তৈরি করে অনলাইনের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশি ছড়িয়ে দিচ্ছে। ভ্যাট তাদের বাজারকে সংকুচিত করবে। খরচ বেড়ে যাবে। অনেকেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। তাই প্রস্তাবিত এ ভ্যাট বাস্তবায়ন না করার দাবি জানান।

ই-ক্যাবের পক্ষ থেকেও সম্মলিতভাবে ভ্যাট আরোপ না করার প্রস্তাব দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এসআই/এএইচ/এমআরএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।