স্কুল শিক্ষক এখন মোবাইল বাবা
শিক্ষকতার পাশাপশি মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের হাজারো সমস্যা হাসি মুখে সমাধান করে দিচ্ছেন সূর্য সারথি সরকার। এ কারণে তার আসল পরিচয়টা বদলে নাম হয়ে গেছে ‘মোবাইল বাবা’।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর শহরের রামকৃষ্ণপল্লীর বাসিন্দা সূর্য সারথি পেশায় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক। কিন্তু বর্তমানে তিনি বেশি পরিচিত ‘মোবাইল বাবা’ নামে। তার এই নাম পার্শ্ববর্তী বিহার রাজ্যের কিষণগঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে।
সবার হাতে হাতে এখন নামি-অনামি কোম্পানির স্মার্টফোন। শুধুমাত্র কোনো ধারণা না থাকায় প্রায়ই তাদের ছোটখাটো নানা সমস্যার জন্য যেতে হয় মোবাইল কোম্পানির সার্ভিস সেন্টার কিংবা মেকানিকের কাছে। আর সেই সুযোগে গ্রাহকের কাছ থেকে কাড়ি কাড়ি টাকা কেটে নেয় সার্ভিস সেন্টার বা মেকানিকরা। অথচ এসব সমস্যা বিনা টাকায় হাসিমুখে সমাধান করে দেন সূর্যসারথি। এ কারণে তিনি এখন সবার কাছে মোবাইল বাবা নামেই পরিচিত হয়েছেন৷
এক একান্ত সাক্ষাৎকারে স্কুল শিক্ষক সূর্য সারথি জানান, কলকাতার বাইরে পশ্চিমবঙ্গে মূলত ২০০৩ নাগাদ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকেই তিনি এই ফ্রি সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন। শুধু জানার আগ্রহে বাজারে নতুন মোবাইল এলেই তিনি তা কিনে সমস্ত সেটিংস ঘাটতেন এবং ম্যানুয়ালগুলো মন দিয়ে পড়তেন। এভাবেই মোবাইলের সফটওয়ার সম্পর্কে ধারণা লাভ করেছেন।
তিনি আরও জানান, প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই ইসলামপুর বাস টার্মিনালে আড্ডার আসরে যান৷ মোবাইলের নানা সমস্যা নিয়ে সেখানেই অনেকে হাজির হন। আবার কেউ কেউ বাড়িতেও আসেন। তবে, তাতে বিরক্তি প্রকাশ না করে হাসিমুখেই সবার সমস্যা সমাধান করে দেন। তবে এর জন্য কোনো টাকা নেন না তিনি।
সূর্য সারথি বললেন, মূলত সফটওয়ার সংক্রান্ত সমস্যা চোখের পলকে সামলে দিই৷ আসলে মোবাইল ফোন কিনে অনেকেই ম্যানুয়ালটা মন দিয়ে পড়েন না৷ আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে সফটওয়ার আপডেট না করার জন্যও সমস্যা হয়। তা করে দিলেই সমস্যা মিটে যায়।
তিনি বলেন, বেশির ভাগ সমস্যা হয় ব্যাটারির চার্জ নিয়ে। সারারাত চার্জ দেয়ার পরও দেখা যায় ব্যাটারিতে চার্জ নেই। এসবই সফটওয়ারের জন্য। আবার কোনো কোনো মোবাইলে দুটো সিম ভরা থাকলেও ডিসপ্লেতে ক্রশ দেখায়।
তিনি আরও বলেন, সবই খুব ছোটখাট বিষয়। এসব সমাধানের জন্য অনেকেই আমার কাছে ছুটে আসেন। সমাধান করে দিতে সত্যিই খুব ভাল লাগে। অনেকে এর জন্য টাকা দিতে চান। কিন্তু, কারও কাছে কোনোদিন কিছু নিইনি। মোবাইল ঠিক করে মালিকের হাতে দেয়ার পর তাদের হাসিটাই সবচেয়ে বড় পাওনা। সূত্র : কলকাতা টুয়েন্টি ফোর
এমএমজেড/এমএস