মিসকলেই চালু হবে কম্পিউটার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ০৩:৩০ এএম, ০২ আগস্ট ২০১৭

একটি মোবাইলের সার্কিটে সিমকার্ড ও ব্যাটারিসহ কয়েকটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র লাগিয়ে সেটিকে কম্পিউটারের সিপিইউয়ের মাদারবোর্ডের সঙ্গে লাগিয়ে দিতে হবে। এরপর কম্পিউটারে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিতে হবে। পরে অপর একটি মোবাইল থেকে মাদারবোর্ডের ওই যন্ত্রটিতে লাগানো সিমকার্ডের নম্বরে মিসকল দিলেই চালু হবে কম্পিউটার। বন্ধ করার জন্য আবারও মিসকল দিলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হবে কম্পিউটারটি।

বৈদ্যুতিক এই যন্ত্রটি তৈরি করেছেন আহসান হাবীব আজগর (২০)। তিনি এর নাম দিয়েছেন পিসি পাওয়ার কন্ট্রোলার সার্কিট। আহসান হাবীব আজগরের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে।

গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ধাপেরহাট বাজার সংলগ্ন পল্টনের মোড়ে মোবাইল ও কম্পিউটার মেরামতের দোকান।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রথমে আহসান হাবীব পিসি পাওয়ার কন্ট্রোলার সার্কিটটিকে সিপিইউয়ের মাদারবোর্ডের সঙ্গে যুক্ত করেন। এরপর কম্পিউটারে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেন। পরে হাতে থাকা একটি মোবাইল থেকে ওই যন্ত্রটিতে লাগানো সিমকার্ডের নম্বরে মিসডকল দেন। সাথে সাথেই কম্পিউটারটি চালু হযে যায়। এরপর আবারও মিসডকল দিলে কম্পিউটারটি বন্ধ হয়ে যায়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আহসান হাবীব ওই গ্রামের মো. বাদশা মিয়া ও মোছা. আনোয়ারা বেগমের চতুর্থ সন্তান। বড় ভাই আনসার আলী মোবাইল ও কম্পিউটার মেরামতের কাজ করেন। মেজো ভাই রোজগার আলী ঢাকায় গার্মেন্টেসে কাজ করেন। তারা বিয়ে করে আলাদা থাকেন। একমাত্র বোন আফসানা বেগমেরও বিয়ে হয়েছে। আহসান হাবীব আনসার আলীর দোকানে কাজ করেন।

Gaibandha

আহসান হাবীব আজগর ২০০৬ সালে বাড়ি সংলগ্ন ছাইগাড়ী গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক, ২০১২ সালে ধাপেরহাট টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও ২০১৪ সালে একই কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। বর্তমানে আহসান হাবীব আজগর ধাপেরহাট মনিকৃষ্ণসেন ডিগ্রি কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

আর্থিক অনটনের কারণে আহসান হাবীব আজগর ২০১২ সালে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ধাপেরহাট বাজার সংলগ্ন পল্টনের মোড়ে বড় ভাই আনসার আলীর দোকানে থাকা শুরু করেন। পরে সেখানে নিজের চেষ্টায় তিনি মোবাইল ও কম্পিউটার মেরামতের কাজ শেখেন। সেখানে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। সেই টাকায় নিজের পড়ালেখার খরচ চালান তিনি।

আহসান হাবীব আজগর বলেন, নিজের চেষ্টায় কাজ শিখেছি। প্রাথমিকভাবে যেকোনো জায়গা থেকে কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করার যন্ত্র তৈরি করেছি। এরপর দূর থেকে কম্পিউটারকে কোনো সফটওয়্যার ছাড়াই চালানোর যন্ত্র তৈরি করবো। কিন্তু অর্থের অভাবে কাজ শুরু করতে পারছি না।

রওশন আলম পাপুল/এফএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।