৫ ধরনের যানে মিলবে মোবাইল ফোনের অ্যাপভিত্তিক সেবা


প্রকাশিত: ০৮:৫৪ এএম, ০১ জুলাই ২০১৭

পাঁচ ধরনের যানবাহনের জন্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশনভিত্তিক সেবা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। জিপ, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, অ্যাম্বুলেন্স ও মোটরসাইকেল এ পাঁচ ধরনের যানে সেবা পাবেন গ্রাহকরা।

বর্তমানে রাজধানীতে উবার, পাঠাও, চলো, আমার রাইডসহ স্মার্টফোনের অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন যাত্রীসেবা চালু রয়েছে।

মোটরকার, জিপ, মাইক্রোবাসের মতো ছোট গাড়ির কারণে শহর ও মহাসড়কে যানজট তৈরি হচ্ছে। ব্যক্তিগত গাড়ি একজন বা এক পরিবারের পাশাপাশি অনেক মানুষের জন্য ব্যবহারের উপযোগী করা গেলে ব্যক্তিগত গাড়ির প্রবণতা কমবে। সেইসঙ্গে কমবে যানজট। এসব বিষয় বিবেচনায় এ ধরনের সেবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এরইমধ্যে এ সংক্রান্ত নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এখন তা সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন পেলেই এ সেবা সারাদেশের জন্য প্রযোজ্য হবে।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআরটিএর সূত্র জানিয়েছে, গত ২৪ জুন মন্ত্রণালয়ে বিআরটিএ খসড়া নীতিমালা পাঠায়। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা ২০১৭’।

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, অ্যাপভিত্তিক এ সেবা চালু হলেও সরকার এর ভাড়া নির্ধারণ করে দেবে না। তবে যাত্রী অসন্তোষ দেখা দিলে তখন সরকারিভাবে ভাড়ার বিষয়টি নির্ধারণ করা হবে।

খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, রাইড শেয়ারিং সেবায় চালককে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াত সহ সব আইন মানতে হবে। যাত্রীদের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে। মোটরযানের যাবতীয় হালনাগাদ দলিলাদি এবং চালকের লাইসেন্স থাকতে হবে।

এছাড়া নীতিমালার কোনো শর্ত লঙ্ঘন হলে রাইড শেয়ারিং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনের মালিকের সনদ বাতিলসহ প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

বিআরটিএর হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৩০ লাখের বেশি। তবে এর অর্ধেকের বেশি মোটরসাইকেল। ফলে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস হিসেবে নিবন্ধিত যানবাহনের ৮৬ শতাংশ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

এদিকে, অ্যাপভিত্তিক এ সেবা পরিচালনার কিছু শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে খসড়া নীতিমালায়। শর্তের মধ্যে রয়েছে, অ্যাপ তৈরিতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠান এবং যানবাহনের মালিককে বিআরটিএ থেকে সনদ নিতে হবে। এরপর রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান, যানবাহনের মালিক ও চালকের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হতে হবে।

এ সেবা চালুর জন্য অন্তত ২০০ গাড়ির একটি ফ্লিট থাকতে হবে এবং কোম্পানির টিআইএন সনদ থাকতে হবে। তবে ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ি হলে একজন একটি এবং ভাড়ায়চালিত হিসেবে নিবন্ধন নেওয়া গাড়ি হলে একাধিক গাড়ি এই সেবায় ব্যবহার করা যাবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ি নিবন্ধনের কমপক্ষে এক বছর পর এই সেবায় নিয়োগ করা যাবে শর্ত দেওয়া হয়েছে।

খসড়ায় এ সেবা চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব সম্পর্কেও বলা হয়েছে। রাইড শেয়ারিং প্রযুক্তি কোম্পানি এই সেবা নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও সহজলভ্য করতে সম্ভাব্য ভাড়ার পরিমাণ যাত্রার শুরুতেই যাত্রীদের জানাবার ব্যবস্থা করবে। ভাড়া ও দূরত্ব সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য যাত্রীরা ইলেকট্রনিক রেকর্ড এসএমএসের মাধ্যমে পেতে পারেন এ ব্যবস্থা থাকতে হবে।

এছাড়া এসব তথ্য প্রতিষ্ঠানের সার্ভারে অন্তত তিন মাস সংরক্ষণের ব্যবস্থা, চালক, গাড়ি ও তার ভ্রমণ নিয়ে কোনো মতামত বা অভিযোগ যাত্রীরা যাতে বিআরটিএ ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে জানাতে পারে সে ব্যবস্থা থাকতে হবে।

একই যাত্রায় একাধিক যাত্রী বহনের সুযোগ রয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, আসন ফাঁকা থাকলে যাত্রীরা যাত্রাপথে সর্বোচ্চ দুইজনকে সহযাত্রী করতে পারবেন। তবে তা করতে হবে অ্যাপ ব্যবহার করে।

এরআগে গত বছরের ২২ নভেম্বর রাজধানীতে বিশ্বের অন্যতম ট্যাক্সিসেবা উবার চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে কদিন পরই বিআরটিএ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে উবারকে অবৈধ ঘোষণা করে। কিন্তু ব্যাপক চাহিদা থাকায় রাজধানীতে চালু হয় উবার। দেখাদেখি এরইমধ্যে পাঠাও, আমার রাইড সহ আরও কিছু অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা চালু রয়েছে রাজধানীতে।

তবে সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে রাজধানীর পাশাপাশি সারাদেশে পাঁচ ধরনের গাড়ির জন্য মোবাইল ফোন অ্যাপভিত্তিক সেবা চালু হলে তা সর্বস্তরের মানুষের জন্য উপকারী হবে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।

এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।