মোবাইল সেটের মূল্য বাড়ায় হতাশ আমদানিকারকরা
আমদানি করা মোবাইল হ্যান্ডসেটের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবে হতাশ মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানিকারকরা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে দেশে আমদানি করা মোবাইল হ্যান্ডসেটের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের সঙ্গে মোবাইল যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাব দেওয়া হলেও সেটা বাস্তবায়ন হতে এক থেকে তিন বছর সময় লেগে যাবে বলে মনে করছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল ফোনসেটের আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করা হয়েছে। বর্তমানে এ শুল্ক ৫ শতাংশ। এটি বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর সাথে মূসক (আমদানি পর্যায়ে) ১৫ শতাংশ, সারচার্জ ১ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ২ শতাংশ, বাজার মূল্যের ওপর মূসক (সরবরাহ পর্যায়ে) ৫ শতাংশ মিলে মোবাইল ফোনসেটের প্রকৃত মূল্য থেকে ৩৩ শতাংশ বেশি গুণতে হবে বাংলাদেশের গ্রাহকদের। বর্তমানে প্রকৃত মূল্য থেকে ২৩ শতাংশ বেশি দিতে হয়। করের আওতায় আনা হয়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারের মডেম বা ডঙ্গলও। প্রস্তাবিত বাজেটে সিম ট্যাক্স ও কর্পোরেট ট্যাক্স আগের মতোই রয়েছে। সিম ট্যাক্সের সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত হয়েছে।
অন্যদিকে, মোবাইল ফোনসেটের যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক ও কর রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এতে দেশে মোবাইল সেট তৈরির সুবিধা বাড়বে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা আমাদের সরকারের অন্যতম উন্নয়ন কৌশল। এ লক্ষ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে আমরা তথ্য-প্রযুক্তি খাতের বেশির ভাগ পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ও কর রেয়াতি সুবিধা দিয়ে আসছি। ফলে এ প্রযুক্তি দেশে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। প্রচুর সম্ভাবনাময় আইসিটি খাত রূপকল্প ২০২১ এবং ২০৪১ বাস্তবায়নে বিশেষ অবদান রাখবে।’
প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের-বিএমপিআইএ নেতা রেজওয়ানুল হক বলেন, অ্যাসেম্বেলিং ফ্যাক্টরি করার জন্য নতুন করে যে পলিসি করা হয়েছে, তার জন্য আমাদের সময় দিতে হবে। ৫ শতাংশ অতিরিক্ত যেটা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটা এ বছর না করে আগামী বছর করা যেতে পারে। তা না হলে মোবাইল হ্যান্ডেস্টের যে গ্রোথ বাড়ছিল সেটাতে ভাটা পড়বে।
মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের-অ্যামটব মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবীর বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল হ্যান্ডসেট সহজলভ্য করার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু হ্যান্ডসেট আমদানির ওপর শুল্ক বাড়িয়ে গ্রাহকদের জন্য তা আরও দুর্লভ করার চেষ্টা হয়েছে। আমরা দেশের টেলিফোন খাত বিশেষ করে মোবাইল ফোন শিল্পের উন্নয়নের জন্য যেসব প্রস্তাব রেখে আসছি, তার কোনো প্রতিফলন এই বাজেটে নেই। তাই আমি মনে করি প্রস্তাবিত বাজেট আমাদের হতাশ করেছে।
অারএম/এআরএস/এমএস