শেষ হয়ে আসছে টেক্সট মেসেজের দিন
বিশ্বব্যাপী মোবাইল ইন্টারনেটের প্রসারের কারণে শেষ হয়ে আসছে টেক্সট মেসেজের দিন। ব্যবহারকারীরা এখন টেক্সট মেসেজ লিখে পাঠানোর বদলে ইন্টারনেটের সাহায্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ প্লাটফর্ম ব্যবহার করে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সেলফি তুলে পাঠানোর মাধ্যমে নিজের অবস্থান জানানোর অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া
রেটিং এজেন্সি কেয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) গড়ে এসএমএস ব্যবহারকারীর রেটিং পয়েন্ট ছিল ৩৯। কিন্তু ২০১৪ অর্থবছরের শুরুর দিকে এসএমএস ব্যবহারকারীর রেটিং পয়েন্ট ২৮-এ নেমে আসে বলে প্রতীয়মান হয় কেয়ারের প্রতিবেদনে। এছাড়া জিএসএম সার্ভিস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর এসএমএস খাত থেকে অর্জিত মুনাফার পরিমাণও কমে আসে উল্লেখযোগ্য হারে। দেখা যায়, গত বছর ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ হারে মুনাফা হয় এ খাত থেকে, যা হ্রাস পেয়ে চলতি বছর ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশে নেমে এসেছে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী স্মার্ট ডিভাইসের বাজার প্রসারিত হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এখন প্রায় সবার হাতেই দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ হিসেবে স্মার্টফোন রয়েছে। আর স্মার্ট ডিভাইসের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে প্রসারিত হয়েছে ইন্টারনেট খাত। ইন্টারনেট এখন সবার হাতের নাগালে।
এছাড়া অধিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য প্রতিনিয়তই নতুন নতুন সেবা যোগ করছে ইন্টারনেট সেবাদাতা কোম্পানিগুলো। ফলে এ খাতের প্রসার হচ্ছে প্রত্যাশার চেয়েও অধিক দ্রুত। ইন্টারনেট ব্যবহারের সহজলভ্যতার কারণেই এসএমএসের প্রতি মানুষ এখন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে বলে মনে করছেন কেয়ারের বিশ্লেষকরা।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভবিষ্যতে মোবাইল সেবাদাতা কোম্পানিগুলোর আয়ের একটা বড় অংশ আসবে ইন্টারনেট ব্যবহারকে কেন্দ্র করে। প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শেষ নাগাদ শুধু ভারতেই স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ১০ কোটি। এছাড়া রেটিং এজেন্সি কেয়ারের দাবি অনুযায়ী, স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের সহজলভ্যতাই টেলিকম সাবসক্রাইবারদের মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের দিকে ধাবিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এদিকে টুজি ও থ্রিজি সংযোগের সহজলভ্যতাও টেক্সট মেসেজের প্রতি অনাগ্রহের একটি বড় কারণ বলে উল্লেখ করা হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, বিজ্ঞানের কল্যাণে প্রতিনিয়তই প্রযুক্তির নতুন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থায়। মূলত এ কারণে প্রযুক্তি খাতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন অসম্ভব কিছু নয়।