‘ডিজিটালও না স্মার্টও না, আফ্রিকা পর্যায়ে আছি আমরা’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৫ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাদেশ ডিজিটালও নয়, স্মার্টও নয়। বরং তথ্যপ্রযুক্তির দিক দিয়ে দেশ এখনো আফ্রিকার পর্যায়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন টেলিকম বিশেষজ্ঞ ও অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহতাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা ডিজিটালও, না স্মার্টও না। আমরা আফ্রিকার পর্যায়ে রয়েছি। আফগানিস্তানের কিছুটা ওপরে। ভয়েসকলের দিন শেষ হলেও এখনো দেশের মোবাইল অপারেটরগুলোর এখান থেকেই ৫০-৬০ শতাংশ আয় আসে। সেজন্য মানসম্মত সেবা দিতে হলে এখনই টেলিযোগাযোগ নীতিমালা হালনাগাদ করা দরকার।’

শনিবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বিটিআরসির ক্ষমতায়ন, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী-২০১০ ও বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মাহতাব উদ্দিন এসব কথা বলেন। সভায় তিনি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘ইন্টারনেটের শুধু দাম কমালেই হবে না, মানসম্মত হতে হবে। ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে হবে। এখনো যারা ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাননি, তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে ইন্টারনেটের দাম কমাতে ভ্যাট-ট্যাক্স মডারেট করতে হবে। কেননা এ দামের ৫০ শতাংশই ট্যাক্স-ভ্যাটের জন্য পরিশোধ করতে হয়। এক্ষেত্রে পূর্বে রাজনৈতিক বিবেচনায় অতিরিক্ত যে লেয়ার তৈরি করা হয়েছে, তা ছাঁটাই করতে হবে।’

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে আলোচক হিসেবে ছিলেন টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিশ্লেষক ফিদা হক, মোস্তাফা মাহমুদ হুসাইন, আইআইজিএবি যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাকতবর রহমান, আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক, রবির টেকনিক্যাল রেগুলেশন্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর অনামিকা ভক্ত, প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালেদ আবু নাসের প্রমুখ।

ফিদা হক বলেন, ‘ডাটার দাম যৌক্তিকীকরণ ও ইন্টারনেট পরিকাঠামো পুনর্বিন্যাস জরুরি। সহজলভ্য ও দেশের সব প্রান্তে সমান গতিশীল ইন্টারনেট আমাদের লাইফ লাইন। ভয়েস ও এসএমএসের দিন এখন শেষ। ডাটার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া দরকার।’

আবু নাসের বলেন, ‘বিটিআরসি কী রাজস্ব আদায় করবে, নাকি সেবা নিশ্চিত করবে; সেটা আগে পরিষ্কার করতে হবে। এ বাজারের মনোপলি ভেঙে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে হবে। এখানে বিস্ময়করভাবে শুধু একটি প্রতিষ্ঠান আকাশকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি ও স্বৈরাচারী মানসিকতা কমাতে বিটিআরসিকে এ জায়গায় ভূমিকা রাখতে হবে। ইনস্টিটিউশন শক্তিশালী হলেই বৈষম্য কমবে।’

টেলিকম খাতের ভোক্তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় স্টেকহোল্ডার বৈঠকের আহ্বান জানান আইআইজিএবির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাকতবর রহমান।

অনামিকা ভক্ত বলেন, ‘প্রতি বছর রবি বিপুল অংকের টাকা বিনিয়োগ করলেও মুনাফা ৩ শতাংশের বেশি হয় না। ফলে মান রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই সরকার এ দিকটায় দৃষ্টি দেবে বলে আশা করছি।’

সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল। আমরা চাই সেই শিক্ষা নিয়ে অতি দ্রুত অন্তর্তী সরকার ইন্টারনেটকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে ঘোষণা করবেন। আশা করবো- আইএসপি বা টেলিকমরা কখনোই সরকারের সঙ্গে থাকবে না, ইন্টারনেট বন্ধ করবে না।’

এএএইচ/ইএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।