দেশের জনপ্রিয় ৯ মেসেজিং অ্যাপ
বর্তমানে সারাক্ষণ কোনো না কোনো অ্যাপের মাধ্যমে মেসেজ আদান-প্রদান করছেন। শুধু মেসেজ নয় ছবি, ভিডিও, জরুরি ফাইল শেয়ার করছেন মেসেজিং অ্যাপে। ব্যক্তিগত চ্যাট তো আছেই অফিসের তথ্য আদান প্রদান করছেন। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মধ্যে আছে হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, টেলিগ্রাম।
শুধু এগুলোই নয় দেশে আরও বেশ কিছু মেসেজিং অ্যাপ রয়েছে। যেগুলোতে আপনি কম ইন্টারনেট খরচ করে মেসেজ আদান-প্রদান করতে পারবেন। চলুন এমন ৯ অ্যাপ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
সিগন্যাল
গ্রাহককে গোপনীয়তার সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেওয়ার মাধ্যমেও যাত্রা শুরু করে সিগন্যাল। এই অ্যাপে ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা অনেক বেশি। এই অ্যাপে আলাদাভাবে স্ক্রিন লক ফিচার রয়েছে। ফোন আনলকড থাকলেও তাই পিন বা বায়োমেট্রিক ছাপ দিয়ে অ্যাপ চালু করতে হয়। এর এনক্রিপশন ফিচারের কারণে বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এতে ভয়েস ও ভিডিওকলের ফিচারের পাশাপাশি স্টোরিও যুক্ত করা যায়। অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে এখন পর্যন্ত অ্যাপটি ডাউনলোড হয়েছে ১০ কোটিরও বেশি।
টেলিগ্রাম
ভয়েস এবং ভিডিও কলের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় টেলিগ্রাম অ্যাপটি। ভয়েস ও ভিডিওকলেও এনক্রিপশন ফিচারও রয়েছে এতে। ফলে ব্যবহারকারীদের চ্যাট বেহাত হওয়ার সুযোগ অনেক কম। এছাড়া ইউটিউবের মতো অ্যাপটিতে নিজস্ব চ্যানেল খোলার ব্যবস্থাও রয়েছে। শুধু আইওএস বা অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মেই নয়, এটি ব্যবহার করা যায় ম্যাকওস, উইন্ডোজ এমনকি ওয়েব প্ল্যাটফর্মেও। শুধু অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মেই এই অ্যাপটি ১০০ কোটিরও বেশিবার ডাউনলোড হয়েছে। এখন টেলিগ্রামে এআই-এর সুবিধাও পাওয়া যায়।
হোয়াটসঅ্যাপ
বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ। সব দেশেই হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা যায়। মেসেজ আদান-প্রদান থেকে শুধু করে ছবি, ভিডিও, ফাইল শেয়ার করা এই অ্যাপে সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ। রয়েছে ইউটিউবের মতো চ্যানেল খোলার ব্যবস্থা। যেখান থেকে আয় করতে পারেন ব্যবহারকারীরা। এছাড়া ব্যবসায়িক চ্যাটের জন্য আলাদা বিজনেস অ্যাকাউন্টও খুলতে পারবেন। এছাড়া মেটা মালিকানাধীন অ্যাপে আছে চ্যাট লক ও পিন করে রাখার সুবিধা। সম্প্রতি এআই যুক্ত হয়েছে অ্যাপটিতে।
আরও পড়ুন
স্ন্যাপচ্যাট
তরুণ প্রজন্মের কাছে স্ন্যাপচ্যাট খুবই জনপ্রিয় একটি অ্যাপ। স্ন্যাপচ্যাট হতে পারে হোয়াটসঅ্যাপের অন্যতম একটি বিকল্প মেসেজিং অ্যাপ। এছাড়াও অনেকেই স্ক্রিনশট অথবা ছবির মাধ্যমে মেসেজিং চ্যাট করে থাকেন তারাও স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহার করতে পারেন। স্ন্যাপচ্যাটের মাধ্যমে আপনি গ্রুপ চ্যাট,ভয়েস কল, গ্রুপ ভয়েস কল করতে পারবেন। অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস প্ল্যাটফর্মে ফ্রিতে স্ন্যাপচ্যাট অ্যাপটি ব্যবহার করা যায়।
স্কাইপি
স্কাইপি হচ্ছে মাইক্রোসফটের অন্যতম একটি সেরা বিজনেস চ্যাট অ্যাপ। স্কাইপির মাধ্যমে আপনি অনেক বেশি পরিমাণে ভয়েস এবং ভিডিও কল করতে পারবেন। স্কাইপের ভিডিও কলিং এর ভিডিও এবং অডিও কোয়ালিটি অনেক বেশি ভালো যা অন্যান্য মেসেজিং অ্যাপে সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় না। বেশিরভাগ মেসেজিং অ্যাপে গ্রুপ ভিডিও কলিং সম্ভব হয় না। এছাড়াও দেখা যায় চারের অধিক ব্যক্তিকে ভিডিও কলে এড করলে ভিডিও লেগিং করতে শুরু করে যা স্কাইপে হয় না। অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস, ম্যাকবুক, উইন্ডোজ এবং ওয়েব প্লাটফর্মে ফ্রিতে স্কাইপি অ্যাপটি ব্যবহার করা যায়।
ভাইবার
ভিওআইপি অ্যাপের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি অ্যাপ হচ্ছে ভাইবার। ভাইবারের মাধ্যমে আপনি ভয়েস কলিং ভিডিও কলিং মেসেজিং করতে পারবেন এছাড়াও মাল্টি ডিভাইস সাপোর্টেড হওয়ায় আপনি একইসঙ্গে একাধিক ডিভাইসে ব্যবহার করতে পারবেন। ভাইবারের রয়েছে ভাইবার আউট ফিচার যার মাধ্যমে আপনি অত্যন্ত সাশ্রয়ী মূল্যে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের মোবাইল ফোনে সাধারণভাবে কল করতে পারবেন। ভাইবারের মেসেজিং ফিচারের মধ্যে রয়েছে ফাইল শেয়ারিং, লাস্ট সিন, ভয়েস এবং ভিডিও মেসেজিং ইত্যাদি। অ্যান্ড্রয়েড,আইওএস,উইন্ডোজ প্লাটফর্মে ফ্রিতে ভাইবার অ্যাপটি ব্যবহার করা যায়।
মেসেঞ্জার
দেশের অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএসের সবচেয়ে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হচ্ছে মেসেঞ্জার। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের চ্যাটিং অ্যাপ হচ্ছে মেসেঞ্জার। বিশ্বের ১০৯টি দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে এই অ্যাপটি। অর্থাৎ বিশ্বের ৫৫ দশমিক ৬ শতাংশ অঞ্চলে এই অ্যাপটি ব্যবহৃত হচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপ যেসব দেশে শীর্ষে রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ভারত, ব্রাজিল, মেক্সিকো, রাশিয়াসহ দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা ও ওশেনিয়ার কিছু দেশ। বর্তমানে ১০০ কোটির বেশি ব্যবহারকারী হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছেন।
স্যাক্রেড মেসেঞ্জার
এটি একটি মেসেজিং অ্যাপ। এই অ্যাপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো সাইন আপ করার জন্য ফোন নম্বর বা ই-মেইলের প্রয়োজন হয় না। কিউআর কোডের মাধ্যমে বা বিশেষ কোড পাঠিয়ে বন্ধুদের অ্যাপটি ব্যবহারের আমন্ত্রণ জানাতে হয়। এন্ড-টু-এন্ড বার্তা পাঠানোর পাশাপাশি ভয়েস ও ভিডিও কলও করা যায় অ্যাপটিতে।
ইমো
দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে ইমো। অডিও, ভিডিও কলের জন্য সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হলেও এতে চ্যাট করাও খুব সহজ। এটি বিভিন্ন বিনামূল্যের স্টিকার সহ গান, ভিডিও, পিডিএফ এবং অন্যান্য ফাইল পাঠানোর অনুমতি দেয়। এখানে একসঙ্গে ২০ জন গ্রুপ ভিডিও এবং ভয়েস কলে যুক্ত হতে পারবেন। এই অ্যাপের বিশ্বে প্রায় ২০০ মিলিয়নের বেশি ব্যবহারকারী আছে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০ মিলিয়নেরও বেশি বার্তা পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন
কেএসকে/এএসএম