শখ থেকে সাফল্যের পথে ‘সিনেমারাজ’ মাসুম

ইমরান হুসাইন
ইমরান হুসাইন ইমরান হুসাইন , শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
প্রকাশিত: ০১:৪২ পিএম, ০২ আগস্ট ২০২৩

‘কাজের ক্ষেত্রে অবশ্যই সৎ থাকতে হবে। কোনো ইউটিউবারের আলাপন ফলো না করে নিজস্ব একটি স্টাইল তৈরি করতে পারলে অনেক ভালো হয়। সেই সঙ্গে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। ধৈর্য ধরে পর্যায়ক্রমে এগিয়ে যেতে হবে। মুক্তমনা এ কাজে যারা শখের বশে আসেন, তারাই সাফল্য লাভ করেন। ধৈর্যের গুরুত্ব অনেক বেশি। ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করাটাই মূল বিষয়।’ কথাগুলো বললেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিচিত মুখ মাসুম।

ইউটিউব-ফেসবুকে তার একটি ভিডিও দেখেননি, এমন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী খুঁজে পাওয়া কঠিন। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। আর তিনি যদি হন সিনেমাপ্রেমী, তাহলে তো কথাই নেই। বিশেষ করে মাসুমের বাচনভঙ্গি ও কথা বলার মুগ্ধতা ছড়িয়ে আছে শ্রোতাদের মধ্যে। ভিডিওর শুরুতেই জনপ্রিয় সংলাপ ‘হাই কী অবস্থা সবার’। যা আকৃষ্ট করে সবাইকে। মাসুম মূলত একটি ইউটিউব চ্যানেল, একই নামে আছে ফেসবুক পেজও। এ চ্যানেল থেকে বিভিন্ন সিনেমার পর্যালোচনা বিষয়ক ভিডিও বানানো হয়। যা সিনেমাপ্রিয় দর্শক-শ্রোতাদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়।

ইউটিউবার মাসুমের ভিডিওগুলোয় প্রচুর তথ্য-উপাত্ত, বিশ্লেষণ থাকে; যা সিনেমাপ্রেমীদের মূল আগ্রহের জায়গা। ভিডিওগুলোর নির্মাতা মাসুম নিজেই। বর্তমানে দেশের যে কয়েকজন ইউটিউবার বা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন, মাসুম তাদের মধ্যে অন্যতম। যেন তার কাছে আছে সিনেমার সব খবর। তাই অনেকের কাছেই মাসুম ‘সিনেমাওয়ালা’ বা ‘সিনেমারাজ’ হিসেবেও পরিচিত।

আরও পড়ুন: ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত তথ্য ও তার সুরক্ষা

মাসুম সব সময় একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে সফল তিনি। কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই এ জগতে আসেন তিনি। বর্তমানে শখ থেকে সাফল্যের দুয়ারে আছেন। মাসুম জানান, তার শুরুটা মোটেও সহজ ছিল না। মাসুমের পুরো নাম ‘মারুফ আহমেদ মাসুম’। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।

jagonews24

ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরিসহ করে থাকেন বই বিশ্লেষণ বা বুক রিভিউ। আলোচিত বা সমালোচিত নন্দিত বইগুলো নিয়ে বেশি কাজ করতে দেখা যায় তাকে। মাঝেমধ্যে সমসাময়িক আলোচিত বিষয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন। তরুণ এ কন্টেন্ট রাইটার পেয়েছেন লাখো মানুষের ভালোবাসা। ইউটিউবে তার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৫ লাখ ২০ হাজার। ফেসবুকে ফলোয়ার প্রায় সাড়ে ৭ লাখ। ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলের নাম নিজের নামেই। যা সবার কাছেই পরিচিত।

মাসুমের শখ বইপড়া এবং সিনেমা দেখা। শখ থেকে পড়া বই অথবা দেখা মুভির রিভিউ করেই পেয়েছেন তুমুল জনপ্রিয়তা। তিনি জানান, ২০১৯ সালের ১ মার্চ বুক রিভিউ দেওয়ার মাধ্যমে তার কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের যাত্রা শুরু হয়। তবে ২০১৭ সাল থেকেই রসায়ন বিষয়ক বিভিন্ন টিউটোরিয়াল আপলোড দিতেন ইউটিউবে। তবে কাজটি মাসুম শখের বসেই করেন। আইন বিষয়ে ভবিষ্যৎ গড়ার ইচ্ছা তার।

আরও পড়ুন: ইথিক্যাল হ্যাকিংয়ে শাওনের মাসে আয় ৫ লাখ টাকা

শুরু থেকেই মাসুমের ছাত্রজীবন ছিল বেশ বর্ণাঢ্য। পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে পেয়েছিলেন ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি। এসএসসি ও এইচএসসিতে পেয়েছিলেন জিপিএ ফাইভ। ব্যক্তিজীবনে মাসুম গতানুগতিক ধারার ইউটিউবারদের থেকে একটু আলাদা। সহজ ও স্বাভাবিক জীবনে অভ্যস্ত তিনি।

মাসুমের ভিডিওতে তথ্য আর বিশ্লেষণের প্রাচুর্য থাকে অনেক বেশি। একেকটি কন্টেন্টের জন্য অনেক অধ্যবসায় করতে হয় তাকে। ইউটিউবার বা কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য অধ্যবসায় কতটা জরুরি, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নিজে ঠিকঠাক জেনে তা অন্যকে জানানো গুরুত্বপূর্ণ। তাই জানতে সময় দিতে হবে, এরপর দর্শকদের জানাতে হবে।’ তার কনটেন্টগুলোর বিশেষত্ব ‘ভালোকে ভালো’ আর ‘খারাপকে খারাপ বলা’। সিনেমা বা গল্পের মূল নির্যাস অকপটে প্রকাশ করা।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।