কঠিন রোগের লক্ষণ জানিয়ে জীবন বাঁচালো অ্যাপল ওয়াচ

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৩ পিএম, ২৭ জুলাই ২০২২

স্মার্ট গ্যাজেটের বাজারে স্মার্টওয়াচ একটি অবিস্মরণীয় নাম। এর মধ্যে আইফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের স্মার্টওয়াচ বেশ জনপ্রিয়। শুধু সময় দেখা বা সঙ্গে ব্লুটুথ কলিংয়ের সুবিধাই নয়। এতে আছে স্বাস্থ্য সুরক্ষার নানান ফিচার। তবে মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন প্রাপ্ত না হলেও, অ্যাপল বিকশিত স্মার্টওয়াচ এখন স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা শনাক্ত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘টুল’ হয়ে উঠেছে।

স্মার্টওয়াচের হেলথ ফিচারের সাহায্যে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা, হার্ট ব্লকেজ, অসামঞ্জস্য ব্লাড প্রেসার লেভেল বা থাইরয়েডের উপসর্গ জানা যায়। এমনকি নারী ব্যবহারকারীদের মিনিস্ট্রুয়াল সময়েরও জানান দেয় আগেভাগেই। সম্প্রতি একজন ব্যক্তির শরীরে মারাত্মক টিউমার থাকার সতর্কতাবাণী দেওয়ার মাধ্যমে পুনরায় খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে অ্যাপল ওয়াচ।

জানা যায়, এই ব্যক্তির দ্রুত হার্ট বিট ডিটেক্ট করায় একটানা ‘এলার্ট মেসেজ’ পাঠিয়ে বারবার সতর্ক করছিল ডিভাইসটি। এরপরই তিনি চিকিৎসকের কাছে চেকআপ করতে যান। তখনই জানতে পারেন ‘ফাস্ট গ্রোয়িং’ টিউমারের কারণে খুব শিগগির স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে তার ব্যবহারকৃত অ্যাপল ওয়াচের আগাম সতর্কতায় এই যাত্রায় প্রাণে বেঁচে গেলেন তিনি।

কিম ডুরকি নামের ওই ব্যক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। তিনি জানান, তার ব্যবহারকৃত অ্যাপল ওয়াচটি একটানা দুই রাত ধরে বারবার অ্যালার্ট নোটিফিকেশন পাঠাচ্ছিল। যেখানে বিগত কয়েক মাস যাবৎ তার হার্ট ‘অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন’ অনুভব করছে। তবে শারীরিক কোনো অসুস্থ বোধ না হওয়ায় কিম ভেবেছিলেন যে ওয়াচটি হয়তো ‘ফলস অ্যালার্ট’ দিচ্ছে। তবে তৃতীয় রাতেও ওয়াচটি অনুরূপ সতর্কতা পাঠানোর পর, তিনি চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করার সিদ্ধান্ত নেন।

যদিও একটি স্মার্টওয়াচের দ্বারা শনাক্ত করা শারীরিক সমস্যা কতটা সঠিক সেই সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছিলেন না কিম। ফলে তিনি হাসপাতালের যাওয়ার পর বুঝতে পারেন, অ্যাপল ওয়াচটির পূর্বাভাস প্রকৃতপক্ষেই সত্য, অর্থাৎ হার্টে অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন ঘটার কারণেই বার বার অ্যালার্ট আসছিল তার কাছে। যদিও তখন পর্যন্ত এই দ্রুত হৃদস্পন্দনের কারণটি অজানা ছিল।

একাধিক টেস্ট পরিচালনার মাধ্যমে পরবর্তীতে জানা যায় যে, এই পুরো ব্যাপারটা ঘটেছে কিমের শরীরে থাকা একটি ভয়ানক টিউমারের জন্য। টেস্ট রিপোর্টে অনুসারে, তার মাইক্সোমা আছে। মাইক্সোমা হলো একটি বিরল ও দ্রুত বর্ধনশীল টিউমার, যা হার্টের রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং স্ট্রোক পর্যন্ত ঘটাতে পারে।

চিকিৎসকরা জানান, ওয়্যারেবলটি যদি আগাম সতর্ক না করতো, তাহলে ওই চার সেন্টিমিটারের ‘ফাস্ট গ্রোয়িং’ টিউমারটির কারণে কিছু দিনের মধ্যেই প্রায় নিশ্চিতভাবে প্রাণহানি ঘটতো কিমের।

চলতি বছরে অ্যাপল ওয়াচের এমন অনেক প্রাণ রক্ষার কাহিনী ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে। এতে অনেক ব্যবহারকারীই স্মার্টওয়াচ ও অ্যাপল ওয়াচ ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন। সেই সঙ্গে এতে থাকা ফিচার ব্যবহারেও সতর্ক হচ্ছেন।

সূত্র: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

কেএসকে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।