বেঁচে যাওয়া রান্নার তেলে দ্রুত চার্জ হবে গাড়ি

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫৭ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০২২

একের পর এক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে হাজির হচ্ছে বাজারে। আমাদের গাড়ি জগতের ভবিষ্যৎ যে বৈদ্যুতিক গাড়ি তা ভালোভাবেই আঁচ করা যাচ্ছে। এজন্য গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও ঝুঁকছেন এই দিকে।

তবে বর্তমানে যারা ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যবহার করছেন তাদের একটি সমস্যায় প্রায়ই পড়তে হয়। তা হচ্ছে চার্জ দেওয়ার স্থান। দূরের রাস্তায় অনেক সময়ই চার্জ দেওয়ার অপশন পাওয়া যায় না। চালকদের পড়তে হয় নানান বিপত্তিতে।

তবে এবার রান্নায় বেঁচে যাওয়া তেল দিয়ে দ্রুত চার্জ হবে গাড়ি। এই সহজ সমাধান বের করেছেন অস্ট্রেলিয়ার একজন অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার জন এডওয়ার্ডস। অস্ট্রেলিয়ার নুলারবোর একটি সুপ্রশস্ত এলাকা, সমতল ভূমি, গাছের দেখা নেই বললেই চলে। জায়গাটি দক্ষিণ ও পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ৬৮৪ মাইল-জুড়ে বিস্তৃত। আর এই বিস্তৃত এলাকার কারণেই নিত্যদিন নাকাল হতে হচ্ছে ইলেকট্রিক গাড়ির চালকদের।

এই সুবিশাল রাস্তায় ফাস্ট-চার্জিং স্টেশন নেই। থাকলেও দু-একটা রয়েছে নুলারবোর শুরু হওয়ার রাস্তায়। মাঝখানে ইলেকট্রিক গাড়ি চার্জ করার মতো একটিও স্টেশন নেই। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির ড্রাইভারদের ব্যাপক সমস্য়ার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আর সেখানেই চার্জিং স্টেশন খুলতে অভিনব আইডিয়া নিয়ে এসেছেন ড্রাইভাররা। একটা চার্জিং স্টেশনই খুলে ফেলেছেন, যেখানে ইলেকট্রিক গাড়ি চার্জ করা যাবে বেঁচে যাওয়া রান্নার তেল দিয়ে।

অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার জন এডওয়ার্ডস একটি ফাস্ট চার্জিং পয়েন্ট ডেভেলপ করেছেন, যা রান্নার তেল দিয়ে চালিত হবে। এই ফাস্ট চার্জিং স্টেশনটি বসানো হয়েছে কাইগুনা রোডহাউসে, যা নুল্লারবোরের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত। যে সব রেস্তোরাঁয় ডিপ ফ্রায়ার ব্যবহার করে রান্না করে, সেখান থেকেই বেঁচে যাওয়া তেল সংগ্রহ করে চলছে চার্জিং পয়েন্টটি। 

নুল্লারবোরে কোনো বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে, সেটিকে চার্জিং স্টেশনে নিয়ে যেতে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। আর সেই কারণেই ড্রাইভাররা গাড়িতে এক প্রকার বাধ্য হয়েই পুরোনো এসি চার্জার ব্যবহার করেন। তবে এই রান্নার তেলের সাহায্য়ে চালিত চার্জিং স্টেশনটি খোলার পরে ড্রাইভারদের সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে।

যে পরিমাণ বেঁচে যাওয়া রান্নার তেল বা বায়োফুয়েল ফাস্ট চার্জিং জেনারেটরে বসানো হয়, তা আসলে কার্বন নিউট্রাল। যদিও কুকিং অয়েল ফুয়েল বা জ্বালানির জন্য রান্নার তেলের এই ব্যবহার কার্বন নিউট্রাল হওয়ার দাবির পিছনে দ্বিমতও রয়েছে বিজ্ঞানীমহলে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, কুকিং অয়েল ফুয়েল, ডিজেলের মতো অন্যান্য জ্বালানির তুলনায় অনেক কম পরিমাণে পরিবেশ দূষিত করে। এডওয়ার্ডসের দাবি, এই চার্জারের সঙ্গে আপনি একটি বার্গার এবং কফি নিতে পারবেন, খবরের কাগজটাতেও একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারবেন। ততক্ষণে আপনার গাড়ি চার্জ হয়ে যাবে, আর আপনিও গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যেতে পারবেন।

নুল্লারবোরের রাস্তা দিয়ে আগে ইলেকট্রিক গাড়িগুলো যেতে চাইত না এই একটাই কারণে। তবে এই সমাধান সূত্র বের হওয়ার পর থেকে সেই রাস্তায় আরও বৈদ্যুতিক গাড়ি যাবে বলেই মনে করছেন এডওয়ার্ডস ও তার সহকর্মীরা।

নুল্লারবোরের এই সমতল ভূমিতে ট্রাফিক না হওয়ার কারণে ব্যবসাতেও বড় ক্ষতি হয়। আর সেই কারণেই ফাস্ট চার্জিং স্টেশন বসাতে আগ্রহ প্রকাশ করেন না অনেকে।

সূত্র: নিউজ১৮

কেএসকে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।