ডার্ক ওয়েবে যেসব নিষিদ্ধ কাজ করা হয়

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:১৬ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০২১

ইন্টারনেট হচ্ছে সীমাহীন তথ্যের এক খনি। তবে আমরা এর মাত্র ১ শতাংশই ব্যবহার করে থাকি। যেটা হলো সারফেস ওয়েব। যার নিচেই লুকিয়ে আছে ডিপ ওয়েব। যা চাইলেই আপনি তার নাগাল পাবেন না।

ইন্টারনেটের সুরক্ষিত অংশের নিচেই রয়েছে ৯৯ শতাংশ অন্ধকার। পাসওয়ার্ড ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘেরাটোপে রয়েছে সেই স্তর। সেই স্তরকেই বলা হয় ডার্ক ওয়েব। যেখানে প্রবেশ করা খুবই কঠিন। এই স্তরে কাজ চলে বেনামে।

ডার্ক ওয়েবের নাম শোনেন নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। নিষিদ্ধ এই জিনিসের প্রতি আগ্রহী হয়ে আবার অনেক তরুণই যাচ্ছেন বিপথে। ইন্টারনেটের বড় একটা অংশ আমাদের চোখের আড়ালে লুকানো থাকে, যা ওয়েব দুনিয়ায় পরিচিতি 'ডার্ক ওয়েব' নামে।

তবে ডার্ক ওয়েব বা ডার্ক নেট কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমও ব্যবহার করে। যেসব জায়গায় কড়া বিধিনিষেধের কারণে তথ্য পৌঁছ যায় না সেখানে তথ্য পৌঁছে দিতে। অনেকেই এটাকে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (www) এর বাইরের কিছু মনে করেন। এটা একটা ভুল ধারণা। মূলত ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের সার্ভারেই ডার্ক ওয়েবের অস্তিত্ব বিদ্যমান।

ডার্ক ওয়েবে এমন কিছু কাজ হয়, যেসব সার্ফেস ওয়েবে করা হয় না। সাধারণত অবৈধ কাজ করার, অবৈধ সেবা নেয়ার, ফাঁসকৃত ডকুমেন্টস বেচাকেনার জায়গা এটা। কারণ ডার্ক ওয়েবে আপনার পরিচয় গোপন থাকছে আর, ক্রিপ্টোকারেন্সি খরচ করার সবচেয়ে ভালো জায়গা এই ডার্ক ওয়েব।

নিষিদ্ধ মাদকের কারবারী, অবৈধ পণ্য, অস্ত্র বিক্রি, কম্পিউটার হ্যাকার, জঙ্গিবাদের কার্যক্রম, মুদ্রা আদান-প্রদান, ক্লোনিং, স্ক্যামিং, অবৈধ পর্নোগ্রাফি, রাষ্ট্রীয় বা আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল কেন-বেচা, এমনকি ভাড়াটে গুণ্ডারাও সেখানে তাদের কাজের বিজ্ঞাপন দেন আইনের আড়ালে থেকে।

ডার্ক ওয়েবকে গঠনকারী ডার্ক নেটে থাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফ্রেন্ড-টু-ফ্রেন্ড, পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্ক, সেইসাথে থাকে ফ্রিনেট, আইটুপি ও টরের মতো বড় বড় নেটওয়ার্ক, এবং এসব নেটওয়ার্ক পরিচালিত হয় পাবলিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের দ্বারা। ডার্ক ওয়েব ব্যবহারকারীরা তাদের এনক্রিপশনবিহীন প্রকৃতির কারণে সাধারণ ওয়েবে ‘ক্লিয়ারনেট’ হিসাবে পরিচিত।

টর ডার্ক ওয়েবের একটি অন্যতম ব্রাউজার। এই ব্রাউজার গোপনীয়তা রক্ষা করে ব্যবহারকারীকে নিয়ে যাবে সেই অন্ধকার জগতে। টর নেটওয়ার্ক অনিয়ন ল্যান্ড হিসাবেও পরিচিত। এর কারণ ডিপ ওয়েবের উচ্চ পর্যায়ের একটি ডোমেইন সাফিক্স ডট অনিয়ন এবং নিজেকে আড়াল করে ইন্টারনেট ব্যবহার করার পদ্ধতি অনিয়ন রাউটিং।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যারেথ ওয়েনের একটি গবেষণা থেকে পাওয়া যায়, টর নেটওয়ার্কে সবচাইতে বেশি অনুরোধকৃত বিষয় ছিল শিশু পর্নোগ্রাফি।

সম্প্রতি বিবিসি ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশনের জন্য তাদের ওয়েব সাইটের ডার্ক ওয়েব কপি তৈরি করেছে। ফলে চীন, ইরান, ভিয়েতনামের মতো যেসব দেশে বিবিসির ওয়েব সাইট নিষিদ্ধ, সেসব দেশেও যাতে পাঠকেরা বিবিসির সংবাদ পড়তে পারেন, তাই প্রতিষ্ঠানটি ডার্ক ওয়েব কপি তৈরি করেছে বলে উল্লেখ করে।

সূত্র: বিবিসি

কেএসকে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।