বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ১২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে এ পর্যন্ত দেশি-বিদেশি মোট ৭০টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ১২০.৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং ৪৬০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে বিনিয়োগের পরিমাণ ১২৬৪.৮৪ মিলিয়ন ডলার এবং ৪১ হাজার ২৬৯ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
শনিবার (৬ নভেম্বর) সরেজমিনে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের পরিচালক (অর্থ) শফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, পরিবেশবান্ধব এ হাইটেক পার্ক দেশে হাইটেক শিল্প তথা তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক সমৃদ্ধি অর্জন ত্বরান্বিত করবে।
দেশের প্রথম হাইটেক পার্ক এটি। প্রাথমিকভাবে এ পার্কের জন্য ২৩২ একর জমি বরাদ্দ ছিল এবং পরে সরকার আরও ৯৭ একর জমি পার্কের জন্য বরাদ্দ করায় বর্তমানে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে মোট জমির পরিমাণ ৩৫৫ একর। ৩৫৫ একর জমিকে পাঁচটি ব্লকে ভাগ করা হয়। হাইটেক সিটিতে বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে সরকারি অর্থায়নে সহায়ক অবকাঠামোসমূহ নির্মিত হয়েছে।
প্রধান সহায়ক অবকাঠামোসমূহের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ মূল রাস্তা, অভ্যন্তরীণ সড়ক (শাখা সড়ক) নির্মাণ, ব্রিজ ও ছয়টি কালভার্ট নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ বিদুৎ লাইন স্থাপন, পানি সরবরাহ লাইন ও রিজার্ভার নির্মাণ, বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, কাস্টম হাউজ/সেবা ভবন নির্মাণ, ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন, স্যুয়ারেজ লাইন ও স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ, ৪৮ কোরের অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ, গ্যাস সংযোগ, মূল রাস্তা ও বিকল্প রাস্তার স্ট্রিট লাইট নির্মাণ ও লেক উন্নয়ন ডেভেলপার।
হাইটেক পার্কের ডেপুটি পরিচালক মাহফুজুল হক জাগো নিউজকে বলেন, এ পার্কে ৭০টি প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২টি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। আইন অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিলে ছয় মাসের মধ্যে কাজ শুরু করতে হবে এবং তিন বছরের মধ্যে কনস্ট্রাকশন শেষ করতে হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ বছরের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। তবে সময় মতো কাজ করতে না পারায় এ পর্যন্ত ১৫-১৬টি প্রতিষ্ঠানের লিজ বাতিল হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার জাগো নিউজকে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন অনুযায়ী বাংলাদেশ ডিজিটালের পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে দেশে মোবাইল চার্জ দেওয়ার জন্য দু-এক মাইল দূরে যেতে হতো। এখন ভবিষ্যতের কথা ভেবে যেখানে বিদ্যুতের প্রয়োজন নেই সেখানেও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি দেশের সব জায়গায় ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
আইসিটি বিভাগের যুগ্ম সচিব আখতারুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ধীরে ধীরে আমাদের এ আইসিটি পার্ক অনেক উন্নত হবে। এটার দৃশ্যপটও অনেক বদলে যাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের ঘোষণা ছিল। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ঘোষিত সে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ক্ষমতায় এসে সরকার দেশের বিভিন্ন হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, আইটি সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
এছাড়া কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা শুরু করে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে শিল্প হিসেবে প্রযুক্তিকে কীভাবে গড়ে তোলা যায়, তারও একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয় সরকার।
এইচএস/এমকেআর/জেআইএম