অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক

মমিনুল হক রাকিব
মমিনুল হক রাকিব মমিনুল হক রাকিব
প্রকাশিত: ০১:১৪ পিএম, ১৩ জুন ২০২১

বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে সব ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকায় সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা সচল রেখেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতির বিস্তারিত অভিজ্ঞতা জেনেছি আমরা শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের অভিজ্ঞতার আলোকে অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতির বিস্তারিত জানাচ্ছেন, মমিনুল হক রাকিব—

অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতির সাথে শিক্ষার্থীরা কতটুকু খাপ খাওয়াতে পেরেছেন জানতে চেয়েছিলাম একজন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর কাছে। তিনি জানান অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতি শুরুর দিকে শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ ব্যয়বহুল এবং দুর্লভ ছিল কারণ এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন কেউ হয়নি আগে।

কিন্তু বছর পরিক্রমায় এখন অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতির সুফল নিতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। যেকোনো স্থান থেকে ক্লাস এ জয়েন করার সুবিধা, ক্লাস লেকচার এর রেকর্ডিং সংরক্ষণ এর মাধ্যমে পরবর্তীতে সেই ক্লাস পুনরায় করার সুযোগ শিক্ষার্থীদের বেশ উপকার বয়ে এনেছে।

অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতির ব্যাপারে আমরা কথা বলেছিলাম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি এন্ড সায়েন্সেস (ইউ আই টি এস) এর সহকারী অধ্যাপক কামরুন নাহার খান মুক্তির সাথে। তিনি জানান, মহামারি শুরুর পর শিক্ষার্থিদের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখার লক্ষ্যে শিক্ষকদের বেশ গবেষণা করতে হয় শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের জন্য একটি উপযোগী প্ল্যাটফর্ম নির্ধারণ করতে।

পুরো প্রক্রিয়াটা শিক্ষদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। অনলাইনে শিক্ষার্থীদের কোর্স ক্যাটালগ পরিবর্তনসহ সব ধরনের হার্ড কপি কে সফট কপি তে রূপান্তরিত করতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে। কামরুন নাহার খান মুক্তির কাছে জানতে চেয়েছিলাম অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতি কি গতানুগতিক শিক্ষাপদ্ধতির পূর্ণাঙ্গ পরিপূরক হিসাবে কাজ করতে পারছে কি না ? তিনি বলেন, অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতি কখনোই গতানুগতিক শিক্ষাপদ্ধতির পরিপূরক নয়।

মূলত অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতি হচ্ছে বিশেষ কোনো পরিস্থিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয় সেই লক্ষ্যে উদ্ভাবিত একটি প্রক্রিয়া। যেহেতু বিশ্বজুড়ে আমরা এক মহামারির সাথে লড়াই করছি এমতাবস্থায় অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতিই একমাত্র উপায় শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার।

অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতির শুরুতে শিক্ষকদের বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়াই করতে হয়েছে। কোন মাধ্যমে ক্লাস নিলে শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধা হবে সেই কথা মাথায় রেখে যে কোনো একটি প্ল্যাটফর্ম নির্ধারণ করা ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং একটা কাজ। এছড়া অনলাইন এবং অফলাইন শিক্ষাপদ্ধতির মধ্যে বিস্তর পার্থক্য থাকায় শিক্ষার্থীদের কোর্স ক্যাটালগ পরিবর্তন করা এবং অনলাইনে মেধা যাচাই করাটাও বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল বলে মনে করেন কামরুন নাহার খান মুক্তি।

প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় অনলাইনে শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে তিনি আমাদের জানান, এই এক বছরে শিক্ষাদানের প্রক্রিয়ায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমরা শিক্ষকরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের ক্লাস রেকর্ডিং সরবরাহ করছি যাতে কেউ বঞ্চিত না হয়।

অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতিতে অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকা স্বত্বেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সার্বিক উপকার হয়েছে। রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম এ বসে সময় অপচয় হচ্ছে না এখন আর চাইলেই যে কোনো শিক্ষার্থী তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ক্লাস রেকর্ডিং দেখে পড়াশোনা করতে পারছে যা আগে সম্ভব হত না। মহামারি অতীতেও হয়েছে তাই আমাদের সবধরণের পরিস্থিতির জন্যই নিজেদের প্রস্তুত রাখতে হবে।

এমএমএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।