যুদ্ধের পরও বীরাঙ্গনাদের মর্যাদা রক্ষিত হয়নি : হানিফ
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘বীরঙ্গনারা শুধু যুদ্ধের সময় নির্যাতিত হয়নি, বরং যুদ্ধের পরও তারা অপমানিত ও নির্যাতিত হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধের পর এই সব বীরঙ্গনা নারীদের পুর্নবাসনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু ’৭৫ এ জাতির পিতার মৃত্যুর পর স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি, বিশেষ করে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর এই কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফার আহমেদ চৌধুরী মিলানায়তনে মুক্তিযুদ্ধের সময় ২০জন নির্যাতিত নারীর কাহিনী নিয়ে ড. শেখ আব্দুস সালাম ও শিল্পী বেগম রচিত একাত্তর প্রকাশন কর্তৃক প্রকাশিত ‘বীরাঙ্গনার আত্মকথন’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এ সময় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক ও অধ্যাপক এম এম আকাশ।
জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানিদের দোসর উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের এজেন্ড হিসেবে জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে চিঠি আদান-প্রদান করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর কর্নেল আসলামকে তিনি চিঠিতে পাকবাহিনীর কাছে রক্ষিত তার স্ত্রী এবং পুত্রের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। উত্তরে কর্নেল আসলাম বলেন, তোমার স্ত্রী এবং সন্তান সুরক্ষিত আছে। কর্নেল আসলাম চিঠিতে আরো বলেন তোমার কাজ ভালো হচ্ছে, তুমি কাজ চালিয়ে যাও।
পাকিস্তানি বাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সাথে জিয়াউর রহমানের এই ধরনের চিঠি আদান-প্রদান প্রমাণ করে যে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তিনি ছিলেন পাকিস্তানিদের চর।’
তিনি বলেন, রাজাকার আলবদলদের হোতা গোলাম আযমকে এদেশে ফিরিয়ে এনে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের আনুষ্ঠানিক পুর্নবাসন শুরু করেন তিনি। এর মাধ্যমে তিনি নিজেকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পাকিস্তানিদের দোসর হিসেবে প্রমাণ করেন।’
হানিফ বলেন, ‘আর আজ স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর এসে সেই জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া যিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি মুক্তিযদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে এই বিষয়ে কখনো কোন কথা বলেননি। তাই একটি সুগভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই খালেদা জিয়া এই বিতর্ক সৃষ্টি করছেন বলে আমরা মনে করি।’
এর আগে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘বীরঙ্গনার আত্মকথা’ বইটির মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সময় নারীদের উপর যে নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়েছিল সেটি সম্পর্কে জানতে পারবে। তিনি এ ধরনের একটি বই লেখার জন্য বইটির লেখক আব্দুস সালাম ও শিল্পী বেগমকে ধন্যবাদ জানান।
এমএইচ/এসকেডি/পিআর