পাঁচ খুনের মামলা ডিবিতে হস্তান্তর


প্রকাশিত: ০৭:২৫ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং বাবুরাইলে একটি ফ্ল্যাটে দুই শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচজনকে হত্যার মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে। রোববার রাতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ মামলাটি ডিবিতে পাঠিয়ে দেয়। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশ মোতাবেক মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তাস্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক মামলা হস্তান্তরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক মামলাটি ডিবি হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে ডিবির ওসি মামুনুর রশিদ মন্ডল জানিয়েছেন, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো নথি পাননি; তবে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করবেন। সম্ভবনা রয়েছে সোমবার নথি হাতে এসে পৌঁছে যাবে।

রোববার সকালে নিহত তাসলিমা বেগমের স্বামী মো. শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় শফিকুল ইসলাম উল্লেখ করেন, আমার স্ত্রী তাসলিমা (২৮), মেয়ে সুমাইয়া (৪), ছেলে শান্ত (১০), ছোট ভাই শরীফ (২২) ও তার স্ত্রী লামিয়া (২০), শ্যালক মোর্শেদুল ওরফে মোশাররফ নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইলে ইসমাইল হোসেনের বাড়ির নিচ তলার ফ্ল্যাটে বসবাস করে আসছেন।

মামলায় বলা হয়, ১০ বছর ধরে ঢাকার জনৈক জিয়ারুল হাসানের গাড়ির চালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার তিনি শহরের বাবুরাইলের বাসায় আসতেন। তবে গত ১৬ জানুয়ারি রাত ৮টা ৪০ মিনিটে আমার ছোট ভাই শরীফ আমার মোবাইলে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করে যে কে বা কারা আমাদের বাবুরাইলের ফ্ল্যাটে তালা মেরে পালিয়ে গেছে। পরে আমরা তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দুটি কক্ষের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পাঁচজনের মৃতদেহ দেখতে পাই।


মামলায় উল্লেখ করা হয়, আমি পরস্পর জানতে পারি যে, আমার স্ত্রী তাসলিমার কাছে ঢাকার কলাবাগানের নাজমা ও শাহাজাহান নামের একাধিক ব্যক্ত প্রায় ১২ লাখ টাকা পেতেন যা মাসিক চক্রবৃদ্ধি সুদে নেয়া ছিল। উক্ত টাকা সময়মত পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদাররা প্রায় সময়ে টাকা পরিশোধের জন্য হুমকি দিতেন। এমনকি নাজমাও মাঝে মধ্যে আমার পরিবার সন্তানদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিবে বলে হুমকি প্রদান করতেন। আমার শ্যালক মোর্শেদুল ওরফে মোশাররফের কাছেও টাকা পেতেন তারা। টাকা পয়সা পাওয়ার সুবাধে পাওনাদার ব্যক্তিরা আমার বাসায় যাওয়া আসা করতেন এবং এ ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ করতেন।

এছাড়া আমার ভাগিনা মাহফুজ আমার ছোট ভাই শরীফের স্ত্রী লামিয়ার সঙ্গে ঢাকায় বসবসাসের সময়ে যৌন আবেদন করলে পরবর্তীতে ভাগিনা মাহফুজকে আমরা ঢাকায় রেখে নারায়ণগঞ্জ চলে আসি। মাহফুজ পুনরায় নারায়ণগঞ্জ এসে আমাদের বাসায় এসে শরীফের স্ত্রী লায়িার সঙ্গে একই ধরনের ব্যবহার ও আচরণ করতো। এতে আমার ভাইয়ের স্ত্রী লামিয়া অসন্তুষ্ট হয়। আমার স্ত্রী তাসলিমা ও ছোট ভাই শরীফের কাছে লামিয়া বিষয়টি প্রকাশ করে দেয়।

এতে করে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে মাহফুজসহ অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারীরা একই উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা হতে শনিবার রাত ৮টা ২০ মিনিট পর্যন্ত যেকোনো সময়ে শক্ত কোনো ভোতা অস্ত্র দ্বারা গুরুতর জখম ও গলায় ফাঁস লাগিয়ে পাঁচজনকে হত্যা করে। ঘটনার পর থেকে তাসলিমার স্ত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল সেট ও শ্যালক মোর্শেদুল ওরফে মোশারফের মোবাইল ফোন পাওয়া যাচ্ছে না।

মো. শাহাদাত হোসেন/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।