কুমিল্লায় হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ : গ্রেফতার ৭


প্রকাশিত: ১২:৩৪ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০১৫

কুমিল্লার মুরাদনগরে হজ ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করায় এক হিন্দু পরিবারের চারটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করেছে স্থানীয় জনতা। শনিবার রাতে উপজেলার বাবুটিপাড়া ইউপির গান্দ্রা গ্রামের শ্যামল চন্দ্র দাসের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রোববার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।

দুপুরে শ্যামল চন্দ্র দাসের ফুফাতো ভাই শ্রী নিবাস চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ওই এলাকার ১৮ জনের নামে ও অজ্ঞাতনামা আরো ৪০/৪২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইউপি সদস্যসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার রাতে চায়ের দোকানে বসে একই গ্রামের কাঠ মিস্ত্রি শ্যামল চন্দ্র দাস হজ ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে। এ সময় একই গ্রামের যুবক মিজানুর রহমান প্রতিবাদ করে। এরপর শনিবার দিনভর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে উত্তেজিত লোকজন শ্যামল চন্দ্র দাসের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে দুইটি বসতঘর ও রান্না ঘরে অগ্নিসংযোগ করে।

খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মুরাদনগর থানার ওসি মিজানুর রহমান। পুলিশ তাৎক্ষনিকভাবে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মিজানুর রহমান, মহসিন, মনির হোসেন, জুয়েল, রাসেল আহাম্মদ, মো. সোহেলকে এবং রোববার দুপুরে আলমগীর নামের এক ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।

এদিকে, রোববার দুপুরে কুমিল্লার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ ও পুলিশ সুপার শাহ মো. আবিদ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) আলী আশরাফ ভুইয়া, সহকারী পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) ইকবাল হোসেন হাজারী, মুরাদনগর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ কাইয়ুম খসরু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনসুর উদ্দিন আহাম্মদ, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইউছুফ আব্দুল্লাহ হারুন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়ে মুঠোফোনে বলেন, হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন বান্ডিল টিন, ৯ হাজার টাকা, ৬০ কেজি চাউল ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নগদ কিছু আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

সন্ধ্যায় মুরাদনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তবে ইসলাম ধর্ম ও হজ নিয়ে কটূক্তিকারী শ্যামল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি তিনি।

কামাল উদ্দিন/এআরএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।