সোনারগাঁওয়ে আ. লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৫০


প্রকাশিত: ১০:৩৮ এএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে টেঁটাবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের প্রায় অর্ধ-শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় উভয় পক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এতে করে এলাকাবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে চরম আতঙ্ক।  এদিকে, আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

এদিকে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার পর ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আবার সংঘর্ষের আশঙ্কা ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা ও সোনারগাঁ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. মঞ্জুর কাদের পিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় উভয় পক্ষের মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বারদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান ও বারদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হক ও সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামাল হোসেন আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নুনেরটেক গ্রামে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বিভিন্ন সময় তারা তাদের সমর্থকদের নিয়ে সভা সমাবেশ করে আসছেন।

মঙ্গলবার বিকেলে সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামাল হোসেন তার সমর্থকদের নিয়ে নুনেরটেক এলাকায় সমাবেশ করেছেন। এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে কামাল সমর্থক বর্তমান ইউপি সদস্য আব্দুল কাদির জিলানী ও জহিরুল হক সমর্থক জাকারিয়ার মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এরই জের ধরে বুধবার সকালে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র টেঁটা, বল্লম, রামদা, লাঠিসাটা নিয়ে একে অপরের উপর হামলা চালায়।

এ সময় চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল হোসেনের পক্ষের বাসেদ, আক্কাস আলী, আব্দুল করিম, রেজাক, আমির আলী, রফিক, রহমত আলী, সামসুদ্দিন, আব্দুল মান্নান, ফিরোজা বেগম, খালেক, ইউসুফ  ও জহিরুল হকের পক্ষের কবির হোসেন, জুয়েল, মাজেদ বেগম, ইউসুফ, কবির হোসেন, জাহেদা, আক্কাস আলী, মুজিবুর রহমান, রাজিব, খালেক, খান বাহাদুর, হামিদ আলী, রাসেল, সনিয়া, আব্দুল হক, ডালিম, শহিদুল্লাহ, নবী হোসেন, দিপক, সানাউল্লাহ টেঁটাবিদ্ধসহ অর্ধ-শতাধিক আহত হয়েছেন।

আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কবির হোসেন, জুয়েল, আক্কাস আলী, মাজেদা বেগম, বাসেদ নামের ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে সংঘর্ষ চলাকালীন উভয় পক্ষের বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করে লুটপাট করা হয়েছে। এতে করে আশপাশের লোকজনের মাঝে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
 
এ ব্যাপারে বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল হোসেনের সমর্থক আব্দুল কাদির জিলানী জাগো নিউজকে জানান, মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে প্রতিবাদ করায় জাকারিয়ার লোকজন হঠাৎ করে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে আহত করে এবং বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে বিভিন্ন আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।

বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হকের সমর্থক জাকারিয়া জাগো নিউজকে জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল হোসেনের সমর্থকরা বিএনপির লোকজন। তারা কামালের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় সভা সমাবেশ করে আওয়ামী লীগের লোকজনকে হেয়ভাবে কথাবার্তা বলে। এর প্রতিবাদ করায় সকালে অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করে লুটপাট চালায়।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা জাগো নিউজকে বলেন, সংঘর্ষের পর নুনেরটেক গ্রাম পরিদর্শন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
 
সোনারগাঁ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. মঞ্জুর কাদের পিপিএম জাগো নিউজকে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কায় ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
 
শাহাদাৎ হোসেন/এসএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।