তিন বছরেও শেষ হয়নি খালাফ হত্যাকাণ্ডের বিচার
ঢাকার সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যার তিন বছর পার হলেও শেষ হয়নি মামলার বিচারকার্যক্রম। নিম্ন আদালত আসামীদের সাজা দেয়ার পর হাইকোর্টে আপিল করে তারা। এরপর থেকে সুপ্রিমকোর্টে ঝুলে আছে মামলাটি।
এদিকে, খালাফ হত্যা মামলার নিষ্পত্তির আগেই সোমবার রাতে গুলশানের কূটনীতিক পাড়ায় গুলি করে হত্যা করা হল ইতালিয়ান নাগরিক তাভেল্লাকে। এতে কূটনীতিক পাড়ার দুর্বল নিরাপত্তা আর আগের মামলার বিচার না হওয়াকে দুষছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১২ সালের ৫ মার্চ গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কের ১৯বি নম্বর বাসার সামনে গুলিবিদ্ধ হন সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলী। পরে ৭ মার্চ গুলশান থানায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের নামে একটি হত্যা মামলা করেন পুলিশ। ১৪ মার্চ মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় মামলা। ডিবি সাত মাসের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে আভিযোগপত্র দাখিল করে। এর পর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি মামলার বিচারকার্য।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের পর এক মাস পর ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর ৫ আসামীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। অভিযুক্তরা হলেন, সাইফুল ইসলাম, মো. আল আমীন, আকবর আলী, রফিকুল ইসলাম খোকন ও সেলিম চৌধুরী ওরফে সেলিম আহম্মেদ। এর এক বছর পর ২০১৩ সালে ৫ জনকেই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন নিম্ন আদালত। পরে আসামিপক্ষ আপিল করলে আল আমীন, আকবর আলী, রফিকুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। এছাড়া খালাস দেয়া হয় মামলার অপর আসামি সেলিম চৌধুরীকে। তবে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে সাইফুল ইসলামের।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৫ সালের ৬ মে আবারো শুরু হয় এই মামলার শুনানি। তবে ৫ মাসেও শেষ হয়নি শুনানি। এ বিষয়ে অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির জাগো নিউজকে বলেন, দুই দফা রায় ঘোষণার পর আপিল বিভাগে মামলাটির আপিল পেন্ডিং রয়েছে। আদালত বন্ধের কারণে আপাতত শুনানি হচ্ছে না।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খবিরউদ্দিন ভূইয়া জাগো নিউজকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের রায়ের বিপক্ষে আপিল করেছে। নানা কারণে আপিল বিভাগে শুনানি সম্পন্ন করতে দেরি হচ্ছে।
কূটনীতিক পাড়ার নিরাপত্তার বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, কূটনীতিক পাড়ার সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ঘটনার পরপরই সর্বোচ্চ সতর্ক ও কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। নিয়মিত পুলিশের সঙ্গে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এআর/এফএইচ/এএইচ/পিআর