শামুক কুড়িয়ে ওদের জীবন চলে
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় শামুক সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। শুধুমাত্র এই শামুক বিক্রয়ের জন্য উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অনেক অস্থায়ী বাজার। শামুক সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও সংগ্রহকারীরা জানান, এলাকার বিভিন্ন অস্থায়ী বাজারে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকার শামুক ক্রয়-বিক্রয় হয়। যা দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা খামারে মৎস-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
উপজেলার গাড়াগঞ্জ বাজারের অস্থায়ী শামুক আড়তের ব্যবসায়ী ফরিদ উদ্দিন জানান, গাড়াগঞ্জ, ভাটই, চাঁদপুর ও বাগুটিয়াসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা শামুক সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে শামুক কিনে থাকি। যা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের চিংড়ি ঘের এলাকা সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও খুলনায় পাঠানো হয়। সেখানে এই শামুক মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার খাল-বিল, ডোবা নালা ও পুকুর থেকে শামুক সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহ কারা শামুক ব্যবসায়ীরা কিনে ট্রাক যোগে খুলনায় পাঠিয়ে দেয়।
উপজেলার বেনিপুর গ্রামের শামুক সংগ্রহকারী শ্রী ভক্ত কুমার সরকার জানান, তিনি প্রতিদিন উপজেলার চড়িয়ার বিল, ভাটই, গাড়াগঞ্জ, বেনিপুর, কচুয়া, সাপখোলা, সারুটিয়া, নাগপাড়া ও বাগুটিয়াসহ বিভিন্ন জায়গার খাল-বিল, ডোবা নালা ও পুকুর থেকে শামুক সংগ্রহ করে থাকেন। প্রতি বস্তা শামুক ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা বিক্রয় হয়ে থাকে। তিনি সারা দিনের ৩/৪ বস্তা শামুক সংগ্রহ করতে পারেন। কিন্তু সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এই শামুক সংগ্রহ করা যায়। কারণ রোদ হলে শামুক পানির নিচে চলে যায় তখন আর শামুক পাওয়া যায় না বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, শামুক কুড়ানোর এই পেশাটি ৫/৬ বছর ধরে এলাকায় চলছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ২০০ শতাধিক মানুষ এ পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তবে আগের মতো এখন আর শামুক পাওয়া যায় না।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষকরা জানান, শামুক সংগ্রহ করে অনেকের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে ঠিকই। কিন্তু অতিরিক্ত শামুক সংগ্রহে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।
এআরএ/বিএ