দীর্ঘদিন ভবন ভাড়া বাকি : পাবনা জনতা ব্যাংকে তালা
দীর্ঘদিন ভাড়া পরিশোধ না করায় জনতা ব্যাংক পাবনা কর্পোরেট শাখায় তালা লাগিয়ে দিয়েছেন ভবন মালিক। ১৫ ঘণ্টা তালা বন্ধ থাকার পর ৭ দিনের মধ্যে ভাড়া পরিশোধসহ নতুন চুক্তি করার লিখিত মুচলেকা দেওয়ায় সোমবার সকাল ১১টার দিকে ভবনের তালা খুলে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় শহরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এদিকে ব্যাংকের এই খামখেয়ালিপনায় ১৫ হাজার গ্রাহক পড়েন মহা বিপাকে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, পাবনা শহরের প্রধান সড়ক আব্দুল হামিদ রোডের আলহাজ আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের মালিকানাধীন ভবনের দোতলায় ৭১৭৮ স্কয়ার ফিট জায়গা ১৯৭৪ সালে ৮ টাকা স্কয়ার ফিট হিসেবে ভাড়া নেয় জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে জনতা ব্যাংক কর্পোরেট শাখা ওই ভবনে রয়েছে ফলে ওই এলাকাটি জনতা ব্যাংক মোড় হিসেবে মানুষের মধ্যে পরিচিতি পেয়েছে।
ভবন মালিক বেশ কয়েকবার ভাড়া বাড়ানোর জন্য ব্যাংককে চিঠি দিলে ব্যাংক তা আমলে নেয়নি। এরই মধ্যে গত বছরের ৩০ এপ্রিল চুক্তির মেয়াদও শেষ হয়ে যায়। ফলে ওই বছরের ১ জুলাই ভবনের মালিক পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও লতিফ রিয়েল এস্টেটের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ব্যাংককে ভবন ছেড়ে দেওয়ার চুড়ান্ত নোটিশ দেন। কিন্তু প্রায় দেড় বছর অতিক্রান্ত হলেও ব্যাংক বিষয়টিকে কোনো গুরুত্ব না দেওয়ায় ভবন মালিক রোববার রাত ৮টার দিকে ব্যাংকে তা ঝুলিয়ে দেন।
ভবন মালিক পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও লতিফ রিয়েল এস্টেটের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ আব্দুল লতিফ বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, ১৯৭৪ সালে এ ভবনটি ৮ টাকা স্কয়ার ফিট হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। এখন জীবনমানের আয় ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। আমরা ব্যাংকের কাছে ৪০ টাকা স্কয়ার ফিট ভাড়া দাবি করে চার বছর আগে চিঠি দেই। দুই বছর আগে ব্যাংক ২৮ টাকা স্কয়ার ফিট নির্ধারণ করে ব্যাংকের কেন্দ্রে প্রস্তাব পাঠায়। আমরা তা মেনে নেই। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে রোববার রাতে ব্যাংকের বাইরের গেটে তালা মেরে দেই।
তিনি আরো বলেন, পাবনা শহরে এর চেয়ে কম ব্যস্ত সড়কে এখন ৫০ টাকা স্কয়ার ফিট ভাড়া হচ্ছে। তালা মেরে দেওয়ার পর সোমবার সকালে ব্যাংকের ডিজিএমস এবং এজিএসেহ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ৭ দিনের মধ্যে ভাড়া পরিশোধসহ নতুন চুক্তি করার লিখিত মুচলেকা দেওয়ায় ফলে সকাল ১১টার দিকে ভবনের তালা খুলে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংক পাবনার ডিজিএম শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, তারা দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে ওই ভবনে রয়েছেন। গত চার বছর আগে ভবন মালিক ৪০ টাকা স্কয়ার ফিট ভাড়া চেয়ে চিঠি দেন। আমরা স্থানীয়ভাবে ২৮ টাকা স্কয়ার ফিট নির্ধারণ করে ভাড়ার বিষয়টি সমঝোতা করে কেন্দ্রে প্রস্তাব পাঠাই। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তির কারণে তা সম্ভব হয়নি।
একে জামান/এমজেড/আরআই