হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে সেই শিশুটি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মহিলা ও প্রসুতি ওয়ার্ডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ধর্ষণের শিকার হওয়া ৯ বছরের সেই শিশুটি। ধর্ষণের পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়া শিশুটি কারো সঙ্গে ভালো করে কথা বলছে না। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়াও করছে না। তার অবুঝ চোখের নিষ্পলক চাহুনি আর করুণ পরিণতি দেখে বারবার নিরবে-নিভৃতে কাঁদছেন তার মা-বাবা।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও এখনো পর্যন্ত কোন আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নির্যাতিত শিশুটির পরিবারের সদস্যরা।
নির্যাতিত শিশুটির বাবা জাগো নিউজকে জানান, গত সোমবার বিকেলে তার মেয়ে ফুফুর বাড়ি থেকে নিজ গ্রামে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে মাসাউড়া গ্রামের বালিয়ারা বিলের পাশে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা একই গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার বখাটে ছেলে কালু মিয়া (১৯) তার তিন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে ওই শিশুটিকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বালিয়ারা বিলের পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে শিশুটি সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ফৌজিয়া আক্তারের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
এ ব্যাপারে ডা. ফৌজিয়া আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, প্রাথমিকভাবে শিশুটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে তার শারিরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল। তবে শিশুটির সাথে পরিবারের সদস্যদের স্বাভাবিক ও সহযোগিতামূলক আচরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে অভিযুক্ত কালু মিয়াকে (১৯) প্রধান আসামি করে তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে নির্যাতিত শিশুটির চাচা মো. শাহ আলম বাদী হয়ে বিজয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন, সুজন মিয়া (২২), আনোয়ার হোসেন (২৮) এবং উজ্জ্বল মিয়া (২৩)। তবে এখন পর্যন্ত মামলায় অভিযুক্ত কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন নির্যাতিত শিশুটির পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণাবড়িয়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহরিয়ার আল মামুন জাগো নিউজকে বলেন, অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতারের জন্য মঙ্গলবার রাতে কালু মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু সে পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে অচিরেই মামলার আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলো জানান তিনি।
আজিজুল আলম সঞ্চয়/এসএস/এমএস