ডিমলায় টাকার বিনিময়ে আসামিকে অব্যাহতির অভিযোগ
নীলফামারীর ডিমলায় পুলিশের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে হত্যা মামলার ২ আসামিকে অব্যাহতি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। হত্যা মামলার ৩ আসামির মধ্যে ২জনকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে তদন্তকারী কর্মকর্তা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের মধ্যছাতানাই গ্রামে যৌতুকের কারণে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে গৃহবধূ আনোয়ারা (২২) কে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের মা আবেদা বেগম ৩ জনকে আসামি করে ডিমলা থানায় মামলা (মামলা নং-৬) দায়ের করেন।
জানা যায়, ৪ বছর আগে ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের জয়নাল আবেদিনের মেয়ে আনোয়ারা বেগম (২২) এর সাথে ডিমলা উপজেলা পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের মধ্যছাতনাই গ্রামের বাকছেদ আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম (২৪) এর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে আতিকুল ইসলাম (২) নামে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের সময় আনোয়ারার বাবা জামাই রবিউলকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেন। বিয়ের ৬ মাস পর হতে রবিউল বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ি থেকে আরো টাকার জন্য আনোয়ারাকে নির্যাতন করে আসছিল।
ঘটনার ২ মাস আগে থেকে জামাতা রবিউল ইসলাম ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের আরো ৭০ হাজার টাকা দাবি করে। আনোয়ারা বেগম আরো টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করে। শ্বশুর বাকছেদ আলী, শাশুড়ি রোমানা বেগম, ভাসুর রমজান আলী, স্বামী রবিউল প্রতিনিয়ত আনোয়ারাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। যৌতুকের টাকা না পেয়ে আনোয়ারাকে গত ৬ জানুয়ারি সকালে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ ডিমলা হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে পরদিন ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ২ মাস পর ভিসেরা রিপোর্টে আনোয়ারকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
মামলার বাদী ও আনোয়ার মা আবেদা বেগমসহ পরিবারের লোকজন জাগো নিউজকে অভিযোগ করে বলেন, মামলাটি করার সময় হতে তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিমলা থানার (ওসি তদন্ত) হারিছুল ইসলাম টাকা নিয়ে আসামিদের সাথে আপোষ মীমাংসার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। তার প্রস্তাবে রাজী না হলে আসামিদের সাথে আতাত করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এজাহার থেকে ২ আসামিকে বাদ দিয়ে আনোয়ারার হত্যা রহস্য ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার জন্য আদালতে চার্জশিট প্রদান করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারিছুল ইসলাম টাকার বিনিময়ে আসামি বাদ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, তদন্তের ভিত্তিতে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেছি।
ডিমলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন খান জাগো নিউজকে বলেন, টাকা নিয়ে আসামি বাদ দিয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জাহেদুল ইসলাম/এসএস/আরআইপি