প্রথমে তার নাক চেপে ধরি, তারপর গলায় গামছা দিয়ে....


প্রকাশিত: ০১:৩৯ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০১৫

২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষে মণিরামপুরে স্কুলছাত্র সাহিদকে অপহরণ এবং পরে হত্যা করা হয়। আর এ মিশনে অংশ নেয় আত্মীয়সহ তিনজন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে আটক একজনের স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে এসেছে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য। আটকের পর আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়া আল শাহরিয়ার লাল্টু মনিরামপুরের পাঁচাকড়ি গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে।

বোরবার যশোর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ জবানবন্দি প্রদান করেন আল শাহরিয়ার লাল্টু। হত্যা মিশনে অংশ নেন স্কুলছাত্র সাহিদের চাচা (সাহিদের পিতা সাইফুর রহমানের খালাতো ভাই) লাল্টু ও তার সহযোগী আটক আল শাহরিয়ার লাল্টু ও আল আমিন।

আত্মীয় লাল্টু মণিরামপুর উপজেলার পাঁচাকড়ি গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে ও আল আমিন একই গ্রামের ফিরোজ গাজীর ছেলে। নিহত স্কুলছাত্র সাহিদ মণিরামপুর উপজেলার পাঁচাকড়ি গ্রামের সাইফুর রহমান গাজীর ছেলে।

যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মিল্টনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আল শাহরিয়ার ওরফে লাল্টু  হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। আল-শাহরিয়ার লাল্টু জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন, গত ৮ এপ্রিল তারা তিনজন বালিহদ-পাঁচাকড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বসে সাজেদুর রহমান সাহিদকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন। তাকে অপহরণের পর ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১১ এপ্রিল একটি মোটরসাইকেল ভাড়া করে তারা সাহিদকে তুলে নিয়ে যায়। মুক্তেশ্বরী নদের বেড়িবাঁধের কাছে নিয়ে গিয়ে সাহিদের নাক টিপে ধরে আল-আমিন। আর আল শাহরিয়ার লাল্টু গলায় গামছা দেয়। সাহিদের মৃত্যুর পর আত্মীয় লাল্টু পাশের একটি খুপড়ি ঘর (টোং) থেকে দুইটা ইট ও প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে আসে। লাশ বস্তা ভরে ইট বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এরপর নদীতে গোসল করে ওরা তিনজন ভবদহ এলাকা হয়ে বাড়ি ফিরে যায়। হত্যার পর বিশ লাখ টাকা আদায় করতে চেয়েছিল তারা। এজন্য ফোন জোগাড় করে সেই ফোন থেকে মুক্তিপণ দাবির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের তৎপরতা শুরু হলে তারা আর সেই পথে এগোয়নি। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পালাবে না। পালালে সবাই সন্দেহ করবে। কিন্তু, পুলিশ লাল্টুকে আটক করার পর আল-আমিন পালিয়ে যায়।

অভয়নগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, সাহিদ নিখোঁজের চারদিন পর গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় মুক্তেশ্বরী নদী থেকে সাজেদুর রহমান সাজিদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর ১৬ এপ্রিল নিহত সাহিদের বাবা সাইফুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে অভয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওইদিন পুলিশ আল-আমিন ও আল-শাহরিয়ার লাল্টুকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার আদালতে জবানবন্দি  দেয় আল শাহরিয়ার লাল্টু। তার বর্ণনায় বেরিয়ে এসেছে হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা।

এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।